সংবাদ শিরোনাম ::
Logo প্রকৃতির প্রতিশোধ: সংকটে জীববৈচিত্র্য Logo লঘুচাপ, ঘূর্ণিঝড়ের গুঞ্জন! কেমন যেতে পারে মাসের শেষ দিনগুলো, যা বলছে আবহাওয়ার পূর্বাভাস Logo প্রশাসনিক সমন্বয় ও সংস্কার ছাড়া পরিবেশ সংরক্ষণ সম্ভব নয় : পরিবেশ উপদেষ্টা Logo বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটা বাতিল Logo প্রকৃতির সঙ্গে সুর মিলিয়ে চলার বার্তা নিয়ে এবছরের আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস Logo জাতীয় নির্বাচন, ‘মানবিক করিডোর’, মব সহিংসতা নিয়ে যা বললেন সেনাপ্রধান Logo রিট খারিজ, মেয়র হিসেবে ইশরাককে শপথ পড়ানোর বাধা নেই Logo প্রাক বর্ষায় রাজধানীসহ নানাস্থানে মাঝারি-ভারী বৃষ্টি Logo শিল্পে বিনামূল্যে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন বন্ধে নীতিমালা চূড়ান্ত হচ্ছে : রিজওয়ানা হাসান Logo শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন শপথবাক্য পাঠ করানোর নির্দেশ

অসম্ভব হলো সম্ভব! প্রায় ১৩ হাজার বছর আগে বিলুপ্ত ডায়ার উলফের ‘পুনর্জন্ম’ (ছবিগল্প)  

বিশ্বখ্যাত টিভি সিরিজ গেম অব থ্রোনসের হাউস স্টার্কদের প্রতীক ডায়ার উলফের কথা মনে আছে? সিরিজটিতে হাউস স্টার্করা দানবীয় নেকড়েদের পেলেপুষে বড় করে, এই নেকড়ের মুখচ্ছবিই তাদের প্রতীক। টেলিভিশনের পর্দায় ডায়ার উলফদের জীবিত দেখা গেলেও আসলে এই বিশালাকার নেকড়েরা পৃথিবী থেকে হারিয়ে গিয়েছিল প্রায় ১৩ হাজার বছর আগেই। তবে আবার তারা ফিরে আসছে!

প্রায় ১২,৫০০ বছর আগে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া ডায়ার উলফকে আবারও ফিরিয়ে এনেছে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসভিত্তিক বায়োটেক প্রতিষ্ঠান কলোসাল বায়োসায়েন্স। তারা দাবি করেছে, এটি পৃথিবীর প্রথম সফলভাবে পুনর্জীবিত হওয়া বিলুপ্ত প্রাণী।     

 

প্রতিষ্ঠানটি সোমবার জানায়, ডায়ার উলফের কাছাকাছি জীবিত গোত্রের গ্রে উলফের (ধূসর নেকড়ে) ডিএনএ পরিবর্তন করে তিনটি ডায়ার উলফ শাবকের জন্ম দিয়েছে তারা। এই গবেষণায় ব্যবহার করা হয়েছে প্রাচীন ডিএনএ, ক্লোনিং ও জিন-সম্পাদনা প্রযুক্তি। এর ফলে জন্ম নেওয়া শাবকগুলো দেখতে বিলুপ্ত ডায়ার উলফের মতো হলেও তারা মূলত এক ধরনের হাইব্রিড বা সংকর প্রজাতি।

ডায়ার উলফ (এনোকিওন ডিরাস) ছিল উত্তর আমেরিকার শীর্ষ শিকারি প্রাণী। এর ভীতিকর চেহারাই অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে জনপ্রিয় এইচবিও সিরিজ ‘গেম অব থ্রোনস’-এর কল্পিত ডায়ার উলফ চরিত্রে। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, এই সাদা নেকড়ে ধূসর নেকড়ের চেয়ে আকারে বড়, মাথা চওড়া, মোটা লোমে ঢাকা ও চোয়াল অনেক বেশি শক্তিশালী ছিল।

বায়োটেক প্রতিষ্ঠান কলোসাল ২০২১ সাল থেকে বিলুপ্ত ম্যামথ, ডোডো এবং তাসমানিয়ান টাইগার ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করছে। তবে ডায়ার উলফ নিয়ে তাদের কাজ এতদিন গোপন ছিল।

 

কলোসাল জানায়, ১৩ হাজার বছর পুরোনো একটি দাঁত ও ৭২ হাজার বছর পুরোনো একটি খুলি থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করে তারা জিনগত পরিবর্তন সাধন করেছে। এরপর সেরা কোষগুলোর ক্লোন তৈরি করে তা গর্ভধারণের জন্য ব্যবহার করা হয়। গর্ভধারণে ব্যবহার করা হয়েছিল ঘরোয়া বড় জাতের কুকুরকে।

কলোসাল বায়োসায়েন্সের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী বেন ল্যাম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ‘এটি আমাদের ডি-এক্সটিংকশন প্রযুক্তির প্রথম বড় মাইলফলক। আমাদের দল ১৩ হাজার বছর পুরোনো একটি দাঁত এবং ৭২ হাজার বছর পুরোনো একটি খুলি থেকে ডিএনএ নিয়ে সুস্থ ডায়ার উলফ শাবক তৈরি করেছে।’

ডায়ার উলফের বাচ্চাকোলে কলোসাল বায়োসায়েন্সের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী বেন ল্যাম

২০২৪ সালের ১ অক্টোবর জন্ম নেয় দুটি পুরুষ ডায়ার উলফ শাবক, আর ২০২৫ সালের ৩০ জানুয়ারি জন্ম নেয় একটি মেয়ে শাবক।

এখন এই তিনটি শাবক বসবাস করছে এক গোপন স্থানে, ২ হাজার একরের একটি নিরাপদ এলাকায়। ১০ ফুট উঁচু বেড়ায় ঘেরা সেই এলাকায় রয়েছে আধুনিক পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা, প্রহরী ও ড্রোন নজরদারি। কলোসাল জানায়, এই স্থাপনাটি আমেরিকান হিউম্যান সোসাইটির স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এবং মার্কিন কৃষি বিভাগের নিবন্ধিত।

 

কলোসাল বায়োসায়েন্সেস প্রতিষ্ঠানটি ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তখনই তারা ম্যামথ পুনর্জীবিত করার পরিকল্পনা ঘোষণা করে।

 

এদিকে বিলুপ্ত প্রাণীদের ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপের বিপক্ষে অনেক সমালোচক মনে করেন, এ প্রকল্পে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে, যা অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যয় করা উচিত ছিল। তাদের আশঙ্কা, হাইব্রিড প্রাণী উৎপাদন ও পালন, বেঁচে থাকা প্রাণীদের জন্য বিপদ তৈরি করতে পারে।

আপলোডকারীর তথ্য

Shuvo

প্রকৃতির প্রতিশোধ: সংকটে জীববৈচিত্র্য

অসম্ভব হলো সম্ভব! প্রায় ১৩ হাজার বছর আগে বিলুপ্ত ডায়ার উলফের ‘পুনর্জন্ম’ (ছবিগল্প)  

আপডেট সময় ০১:২৪:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫

বিশ্বখ্যাত টিভি সিরিজ গেম অব থ্রোনসের হাউস স্টার্কদের প্রতীক ডায়ার উলফের কথা মনে আছে? সিরিজটিতে হাউস স্টার্করা দানবীয় নেকড়েদের পেলেপুষে বড় করে, এই নেকড়ের মুখচ্ছবিই তাদের প্রতীক। টেলিভিশনের পর্দায় ডায়ার উলফদের জীবিত দেখা গেলেও আসলে এই বিশালাকার নেকড়েরা পৃথিবী থেকে হারিয়ে গিয়েছিল প্রায় ১৩ হাজার বছর আগেই। তবে আবার তারা ফিরে আসছে!

প্রায় ১২,৫০০ বছর আগে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া ডায়ার উলফকে আবারও ফিরিয়ে এনেছে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসভিত্তিক বায়োটেক প্রতিষ্ঠান কলোসাল বায়োসায়েন্স। তারা দাবি করেছে, এটি পৃথিবীর প্রথম সফলভাবে পুনর্জীবিত হওয়া বিলুপ্ত প্রাণী।     

 

প্রতিষ্ঠানটি সোমবার জানায়, ডায়ার উলফের কাছাকাছি জীবিত গোত্রের গ্রে উলফের (ধূসর নেকড়ে) ডিএনএ পরিবর্তন করে তিনটি ডায়ার উলফ শাবকের জন্ম দিয়েছে তারা। এই গবেষণায় ব্যবহার করা হয়েছে প্রাচীন ডিএনএ, ক্লোনিং ও জিন-সম্পাদনা প্রযুক্তি। এর ফলে জন্ম নেওয়া শাবকগুলো দেখতে বিলুপ্ত ডায়ার উলফের মতো হলেও তারা মূলত এক ধরনের হাইব্রিড বা সংকর প্রজাতি।

ডায়ার উলফ (এনোকিওন ডিরাস) ছিল উত্তর আমেরিকার শীর্ষ শিকারি প্রাণী। এর ভীতিকর চেহারাই অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে জনপ্রিয় এইচবিও সিরিজ ‘গেম অব থ্রোনস’-এর কল্পিত ডায়ার উলফ চরিত্রে। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, এই সাদা নেকড়ে ধূসর নেকড়ের চেয়ে আকারে বড়, মাথা চওড়া, মোটা লোমে ঢাকা ও চোয়াল অনেক বেশি শক্তিশালী ছিল।

বায়োটেক প্রতিষ্ঠান কলোসাল ২০২১ সাল থেকে বিলুপ্ত ম্যামথ, ডোডো এবং তাসমানিয়ান টাইগার ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করছে। তবে ডায়ার উলফ নিয়ে তাদের কাজ এতদিন গোপন ছিল।

 

কলোসাল জানায়, ১৩ হাজার বছর পুরোনো একটি দাঁত ও ৭২ হাজার বছর পুরোনো একটি খুলি থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করে তারা জিনগত পরিবর্তন সাধন করেছে। এরপর সেরা কোষগুলোর ক্লোন তৈরি করে তা গর্ভধারণের জন্য ব্যবহার করা হয়। গর্ভধারণে ব্যবহার করা হয়েছিল ঘরোয়া বড় জাতের কুকুরকে।

কলোসাল বায়োসায়েন্সের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী বেন ল্যাম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ‘এটি আমাদের ডি-এক্সটিংকশন প্রযুক্তির প্রথম বড় মাইলফলক। আমাদের দল ১৩ হাজার বছর পুরোনো একটি দাঁত এবং ৭২ হাজার বছর পুরোনো একটি খুলি থেকে ডিএনএ নিয়ে সুস্থ ডায়ার উলফ শাবক তৈরি করেছে।’

ডায়ার উলফের বাচ্চাকোলে কলোসাল বায়োসায়েন্সের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী বেন ল্যাম

২০২৪ সালের ১ অক্টোবর জন্ম নেয় দুটি পুরুষ ডায়ার উলফ শাবক, আর ২০২৫ সালের ৩০ জানুয়ারি জন্ম নেয় একটি মেয়ে শাবক।

এখন এই তিনটি শাবক বসবাস করছে এক গোপন স্থানে, ২ হাজার একরের একটি নিরাপদ এলাকায়। ১০ ফুট উঁচু বেড়ায় ঘেরা সেই এলাকায় রয়েছে আধুনিক পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা, প্রহরী ও ড্রোন নজরদারি। কলোসাল জানায়, এই স্থাপনাটি আমেরিকান হিউম্যান সোসাইটির স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এবং মার্কিন কৃষি বিভাগের নিবন্ধিত।

 

কলোসাল বায়োসায়েন্সেস প্রতিষ্ঠানটি ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তখনই তারা ম্যামথ পুনর্জীবিত করার পরিকল্পনা ঘোষণা করে।

 

এদিকে বিলুপ্ত প্রাণীদের ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপের বিপক্ষে অনেক সমালোচক মনে করেন, এ প্রকল্পে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে, যা অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যয় করা উচিত ছিল। তাদের আশঙ্কা, হাইব্রিড প্রাণী উৎপাদন ও পালন, বেঁচে থাকা প্রাণীদের জন্য বিপদ তৈরি করতে পারে।