অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়ার একটি প্রত্যন্ত সমুদ্র সৈকতে ১৫৭টি তিমি আটকা পড়েছে। এর মধ্যে ৬৭টি তিমি এরই মধ্যে মারা গেছে। বাকিগুলোও মৃত্যুর ঝুঁকিতে। জীবিত উদ্ধারে জোর চেষ্টা চলছে।
তিমিগুলো গত মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) তাসমানিয়ার উত্তর-পশ্চিম উপকূলে আর্থার রিভারের কাছে সমুদ্র সৈকতে আটকে পড়ে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জায়গাটি তাসমানিয়ার রাজধানী হোবার্ট থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে। আটকে পড়া মাঝারি আকারের কালো তিমিগুলো ‘ফলস কিলার হোয়েল’ নামে পরিচিত।
এ ঘটনায় অস্ট্রেলিয়ার পরিবেশ বিষয়ক দপ্তর ডিপার্টমেন্ট অব ন্যাচারাল রিসোর্স অ্যান্ড এনভাইরনমেন্ট বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) একটি বিবৃতি দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষ তিমিগুলো উদ্ধারের চেষ্টা করছে। সামুদ্রিক প্রাণী বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন।
ব্রেন্ডন ক্লার্ক নামে তাসমানিয়া পার্কস অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিসের কর্মকর্তা বলেছেন, ১৫৭টি ফলস কিলার হোয়েল আটকা পড়েছে। ‘আমাদের অনুমান, তিমিগুলো ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টা ধরে সেখানে আটকা পড়ে আছে। এর মধ্যে আর মাত্র ৯০টি বেঁচে আছে।’
তিমিগুলোকে উদ্ধার করে সমুদ্রে ছেড়ে দেয়া সম্ভব কি না, বিশেষজ্ঞ ও পশু চিকিৎসকরা তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছেন। তবে ব্রেন্ডন ক্লার্ক বলছেন, ‘কাজটা খুবই চ্যালেঞ্জের এবং এক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের জন্যও বেশ ঝুঁকির।’ কর্তৃপক্ষ জনসাধারণকে ঘটনাস্থল এড়িয়ে চলতে বলেছে এবং রাস্তাঘাটে প্রবেশাধিকার সীমিত করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোকে তাসমানিয়ায় এমন ঘটনা বেশ কয়েকটি ঘটেছে। যার মধ্যে ২০২০ সালে দেশটির সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনাও রয়েছে। তবে গত ৫০ বছরে একসাথে এতগুলো ফলস কিলার হোয়েল আটকে পড়ার ঘটনা ঘটেনি। ফলস কিলার হোয়েল বৃহত্তম ডলফিন প্রজাতির মধ্যে একটি। এটি ৬ মিটার লম্বা এবং ১.৫ টন পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাসমানিয়ায় একাধিক এমন ঘটনা ঘটেছে—যার মধ্যে আছে ২০২০ সালে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক তিমি আটকে পড়ার ঘটনা। তবে ফলস কিলার হোয়েল প্রজাতির তিমি সেখানে গত ৫০ বছরে এইভাবে আটকা পড়েনি।
অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে তিমি আটকে পড়ার ঘটনার ৮০ শতাংশই ঘটে তাসমানিয়ায়, বিশেষ করে এর পশ্চিম উপকূলে। ২০২০ সালে ম্যাককোয়ারি বন্দরে প্রায় ৪৭০টি পাইলট তিমি আটকা পড়েছিল। সেবার উদ্ধার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তাদের মধ্যে প্রায় ৩৫০টি মারা গিয়েছিল। ২০২২ সালে আরো ২০০টি তিমি একই বন্দরে আটকা পড়েছিল।