বিশ্বব্যাপী দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাসে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি ও বিপদ মোকাবিলায় প্রস্তুতি জোরদারের লক্ষ্যে প্রতিবছর ১৩ অক্টোবর পালিত হয় ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস’। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘সমন্বিত উদ্যোগ, প্রতিরোধ করি দুর্যোগ’।
বন্যা, ঘূর্ণিঝড় বা ভূমিকম্পের মতো যেকোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় মানবজীবনে গুরুতর প্রভাব ফেলে।
জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দুর্যোগের খরচ প্রাথমিক অনুমানের চেয়ে বেশি হয়, যা মোকাবিলায় পূর্বপ্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। এই প্রচারাভিযান সরকারি বাজেট ও আন্তর্জাতিক সহায়তায় দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের (ডিআরআর) জন্য তহবিল বাড়ানোর কথা বলে, যাতে সব বিনিয়োগ ঝুঁকি-সচেতন এবং স্থিতিশীল হয়।
দুর্যোগের কারণে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে মৃত্যু, বাস্তুচ্যুতি এবং অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। ডিআরআর-এ আরও বেশি বিনিয়োগ ছাড়া এসব দেশে দারিদ্র্য ও ক্ষুধা দূর করা কঠিন হয়ে পড়ে।
দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে আন্তর্জাতিকভাবে দিকনির্দেশনা দেয় ‘সেন্দাই ফ্রেমওয়ার্ক ফর ডিআরআর (২০১৫-২০৩০)’। এটি একটি চুক্তি, যা সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে দুর্যোগের ঝুঁকি থেকে উন্নয়নের অর্জনগুলো রক্ষা করতে সহায়তা করে। এই দিবসটি ফ্রেমওয়ার্কের লক্ষ্যগুলোর অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং প্রচারের জন্য ব্যবহৃত হয়।
১৯৮৯ সাল থেকে প্রতি বছর ১৩ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত হয়ে আসছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০২৫ উপলক্ষে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সভায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের ভূগোল ও জলবায়ুগত কারণে নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমাদের নিত্যসঙ্গী। কিন্তু সচেতনতা, প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি বাড়ালে ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে কমানো সম্ভব। দুর্যোগ মোকাবিলায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার, প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন ও জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন বক্তারা।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুর্যোগ সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয় এবং সেরা স্বেচ্ছাসেবক দলকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
ঠাকুরগাঁওয়ে আন্তজার্তিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ২০২৫ পালন করা হয়েছে। সোমবার সকালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ও দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা ত্রাণ মন্ত্রাণালয়ের উদ্যোগে দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজে গিয়ে শেষ হয়।

এ সময় আলোচনা সভায় জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা।
এছাড়া অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা তথ্য অফিসার এইচ. এম. শাহজাহান মিয়া,উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার আবু শোয়েব খান, ঠাকুরগাঁও ফাসার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ সহকারী পরিচালক সাহিদুল ইসলামসহ স্কুলের শিক্ষার্থীরা। আলোচনা শেষে ভূমিকম্প ও অগ্নিকাণ্ড বিষয়ক মহড়া প্রদর্শন করা হয়।
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে র্যালি, অগ্নিকাণ্ড বিষয়ক মহড়া ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত হয়েছে। এছাড়াও জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দেশজুড়েই র্যালি, আলোচনা সভা, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচীসহ নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করার খবর পাওয়া গেছে।
প্রকৃতিবার্তা ডেস্ক 




















