জলবায়ু পরিবর্তনে আতঙ্কিত বিশ্ব সম্প্রদায়ের আশঙ্কাই সত্যি হলো, প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথের পরেই প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে আবারও আমেরিকাকে সরিয়ে নিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (২০ জানুয়ারি) শপথ নেয়ার পর প্রথম নির্বাহী আদেশে সই করার মাধ্যমে তিনি এই পদক্ষেপ নেন। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্যারিস জলবায়ু চুক্তির মাধ্যমে বৈশ্বিক তাপপাত্র ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার অঙ্গীকার করা হয়। আর নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গতকারী দেশকে এক দশকের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে চলা বৈশ্বিক লড়াই প্রচেষ্টা থেকে সরিয়ে নিলেন ট্রাম্প।
সোমবার ওয়াশিংটন ডিসির স্পোর্টস ভেন্যু ক্যাপিটাল ওয়ান এরিনায় সমবেত সমর্থকদের সামনে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে প্রত্যাহারের নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প।
স্বাক্ষর করার আগে তিনি বলেন, “আমি অবিলম্বে ওই অন্যায্য, একপেশে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি প্রতারণা থেকে প্রত্যাহার করছি। চীন যখন দায়মুক্তি পাচ্ছে তখন যুক্তরাষ্ট্র ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের নিজেদের শিল্পের ক্ষতি করতে পারে না।”
রয়টার্স লিখেছে, এই পদক্ষেপের ফলে আমেরিকা পুরো বিশ্বের মধ্যে ওই চুক্তির বাইরে থাকা তিন দেশ ইরান, লিবিয়া ও ইয়েমেনের পাশে স্থান পেল।
এই চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার মাধ্যমে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি নিয়ে ট্রাম্পের সন্দেহ প্রতিফলিত হলো, যাকে তিনি ‘ধাপ্পাবাজি’ বলে অভিহিত করে আসছেন। বলা হচ্ছে ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ আমেরিকার তেল-গ্যাস কোম্পানিগুলোকে সর্বোচ্চ উৎপাদনের যেতে প্রতিবন্ধকতা মুক্ত করার বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ।
টেক্সাস, নিউ মেক্সিকো ও অন্য অঞ্চলগুলোতে কয়েক বছর ধরে ড্রিলিং ব্যাপকভাবে বাড়ায় যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস ও তেল উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষে আছে। ইউক্রেইনে রাশিয়ার আক্রমণের পর বিশ্বব্যাপী তেল-গ্যাসের দাম চড়ে যাওয়ার পরিস্থিতিতে ফ্র্যাকিং প্রযুক্তি প্রয়োগ করে যুক্তরাষ্ট্র এ সাফল্য পেয়েছে।
ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে তার প্রথম মেয়াদেও আমেরিকাকে এই চুক্তি থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। তবে তখন সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার প্রক্রিয়ায় কয়েক বছর লেগে যায় আর ২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় এসেই যুক্তরাষ্ট্রকে আবার চুক্তিতে ফেরান। তবে এবার এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে সময় কম লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, কারণ চুক্তির প্রাথমিক তিন বছরের প্রতিশ্রুতির বাধ্যবাধকতায় আর আটকে নেই ট্রাম্প।