ব্রাজিলের অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনকে সামনে রেখে বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণের দাবীতে আরও সোচ্চার হওয়া উচিত বলেছেন, প্রকৃতি বন্ধু বীর মুক্তিযোদ্ধা মুকিত মজুমদার বাবু।আবুধাবিতে চলমান বিশ্ব সংরক্ষণ কংগ্রেস ২০২৫-এর বিতর্ক ও এসেম্বলিতে উঠে এসেছে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সংরক্ষণের অবনতির চিত্র।
শতশত বছরের অভিযাত্রায়, খাদ্য উতপাদন, নগরায়ন, বনাঞ্চল উজাড় এবং অনিয়ন্ত্রিত অবকাঠামো উন্নয়নে প্রাকৃতিক বাসস্থান তথা বন, জলাভূমি ও তৃণভূমি ধ্বংসের হার এখনও বেশি। নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বজুড়ে সংরক্ষণের দাবীতে বহুমুখী কর্মকা- হলেও বাস্তবতা বলছে, ২০১০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ধ্বংস হয়েছে ৩২ মিলিয়ন হেক্টর বনভূমি।
এমন প্রেক্ষাপটে সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনায় গতি আনতে, আবুধাবিতে চলমান কংগ্রেসে আন্তর্জাতিক সংরক্ষণ নীতিকে প্রভাবিত করতে রাখা হয়েছিলো ৪০টিরও বেশি মোশন এজেন্ডা। আগামী চার বছরে এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে চলছে বিতর্ক ও ভোট।

কংগ্রেসে সিএআরডিএমএ বাংলাদেশ-এর হাসনা জসিমুদ্দিন মওদুদ বলেন, ‘আমরা মানুষরা এত বুদ্ধিমান প্রজাতির প্রাণী হয়েও আমাদের বাসযোগ্য একমাত্র গ্রহটিকে ধ্বংস করে দিচ্ছি। আগামীতে যেন সবকিছু প্রকৃতি কেন্দ্রীক, প্রকৃতির কথা ভেবে এবং প্রকৃতিকে নিয়েই হয় এই আশা করি।’
নেকম-এর নির্বাহী পরিচালক ড. এস এম মনজুরুল হান্নান খান বলেন, ‘ বিশ্বের সংরক্ষণ কার্যক্রম যেন জোরালোভাবে বাস্তবায়ন করা হয়। আর একই সঙ্গে সংরক্ষণ প্রচেষ্টায় যেন জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলার বিষয়টিও প্রাধান্য পায় এই আহ্বান আমাদের।’

সঙ্কট সমাধানে নিজেদের মতামত তুলে ধরছেন, বিভিন্ন দেশের সরকারি প্রতিনিধির পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা, আদিবাসী জনগোষ্ঠী, সহযোগী সংস্থা এবং পরিবেশবাদিরা।
কংগ্রেসে সক্রিয়ভাবে সরব থাকা প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু বলেন, ‘কংগ্রেসে সংরক্ষণ প্রচেষ্টা নিয়ে জোরালো আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কেও এগিয়ে আসতে হবে। কোনো পরিণাম না ভেবে যা খুশি গাছ লাগালাম, পরিকল্পনা ছাড়াই প্রকল্প হাতে নিলাম তা করা যাবে না।’
প্রকৃতিবন্ধু আরও বলেন, ‘পৃথিবীতে অতিরিক্ত চাপ পড়ছে মানবসৃষ্ট নানা কারণে, এখন সময় সচেতনতার, যতো এই নিয়ে কথা হবে, কাজ হবে ততোই পৃথিবী সুস্থতার দিকে যাবে। এই কংগ্রেসে যেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তা তুলে ধরা হবে আসন্ন জলবায়ু সম্মেলন কপ-৩০-তে। আমরা ভোট দিয়ে কয়েকটি সিদ্ধান্তে সম্মতি জানিয়েছি। যা আমাদের জন্য, এই পৃথিবীর জন্য ইতিবাচক আশা জাগাবে।’
উল্লেখ্য, এবারে কংগ্রেসে প্রকাশিত আইইউসিএন রেড লিস্ট বলছে, বর্তমানে ১০ লাখের বেশি প্রজাতি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকার পাশাপাশি প্রতি বছর নতুন করে বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়ছে প্রায় ১০ হাজার প্রজাতি।
প্রতিবেদক: মোশাহিদ রনি
তথ্য ও চিত্র: মেহেদী হাসান
প্রকৃতিবার্তা ডেস্ক 



















