ইতিহাসের ভয়াবহ দুই পারমাণবিক দূষণ, তেজস্ক্রিয়তার সাক্ষী হয়ে আছে চেরনোবিল এবং ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্র। পারমাণবিক শক্তি উৎপাদন কেন্দ্রগুলো কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলে এর পরিমাণ যে কতটা ভয়াবহ হতে পারে তা জানে বিশ্ব। তবু ইরানের নাতাঞ্জ, ফোরদো এবং ইস্পাহান, এই ৩ পরমাণু কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে ইরানিদের আতঙ্কিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। যদি যুক্তরাষ্ট্রের বোমা হামলায় এই ৩ পরমাণু শক্তি কেন্দ্রের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে থাকে এবং সেখান থেকে তেজষ্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে তাহলে ইরানের ওইসব এলাকায় বাসিন্দারা পড়তে পারেন মহাবিপদে। তবে ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থা অভয় দিয়ে জানিয়েছে হামলায় এখনো পারমাণবিক দূষণের কোনো সম্ভাবনা দেখা যায়নি।
ইরান দাবি করেছে: ফোরদো, ইস্পাহান এবং নাতানজ পারমাণবিক স্থাপনার কাছাকাছি বাসিন্দাদের জন্য পারমাণবিক দূষণ বা বিপদের কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া এক পোস্টে ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থা জানায়, ৩ পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ হামলার পর মাঠ জরিপ এবং বিকিরণ ব্যবস্থায় কোনো দূষণের তথ্য পাওয়া যায়নি।
দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ইরনা জানায়, ইরানের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পরমাণু স্থাপনায় সফল হামলার দাবি করেছেন ট্রাম্প। তবে হামলার সময়ে এসব স্থাপনায় কোনো তেজস্ক্রিয় পদার্থ ছিল না বলে জানিয়েছে তেহরান।
ইরানের মন্ত্রী ও কোম এলাকার প্রতিনিধিত্বকারী মানান রাইসি জানান, মার্কিন হামলায় ফোরদো গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। তিনি জানান, ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক স্থাপনার উপরের দিকে হামলা হয়েছে এবং এবং তা দ্রুত আগের অবস্থায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
উল্লেখ্য, ইরানের ৩ পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আগে থেকেই আরাকসহ কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইসরায়েল। এসব হামলার পর পারমাণবিক বিপর্যয়ের সতর্কবার্তা দিয়েছিল আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা। আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসি বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোতে হামলার ফলে এখন পর্যন্ত জনসাধারণের উপর তেজস্ক্রিয়তার কোনও প্রভাব পড়েনি।
তবে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন যে, বর্তমানে চালু থাকা দক্ষিণ ইরানের বুশের পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরাসরি আঘাত হানা হলে অথবা বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনগুলোর উপর অকার্যকর করে দেয়ার হামলা চালানো হলে পরিবেশে উচ্চ মাত্রার তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়তে পারে।
গ্রোসি আরও বলেন, পরমাণু স্থাপনায় কখনোই সশস্ত্র হামলা চালানো উচিত নয়।