ইরানে হামলা পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছেন ট্রাম্প,তবে…
ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এখনই হামলার চূড়ান্ত নির্দেশ দিচ্ছেন না তিনি। ইরান শেষ পর্যন্ত তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি পরিত্যাগ করে কিনা এটিই দেখতে অপেক্ষা করছেন তিনি।
ইরানের ফরদোতে ভূগর্ভস্থ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রকল্পে ট্রাম্প হামলার কথা বিবেচনা করছেন বলে খবর এসেছে।
ইরানে সম্ভাব্য হামলার প্রশ্নে ট্রাম্প বুধবার বলেছিলেন, “আমি করতেও পারি, নাও পারি।”
এর আগেই নিজের ‘ধৈর্যের সীমা’ ফুরিয়ে এসেছে জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট শর্তহীন আত্মসমর্পণের যে আহ্বান জানিয়েছেন, তা প্রত্যাখান করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।
মধ্যপ্রাচ্য থেকে যুদ্ধবিমান ও জাহাজ সরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
ইরানের সম্ভাব্য হামলার শঙ্কায় মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি ঘাঁটি থেকে কিছু বিমান ও যুদ্ধজাহাজ সরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার (১৮ জুন) দুই মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) কাতারের মার্কিন দূতাবাস এক সতর্কবার্তা জারি করেছে। এতে দূতাবাসের কর্মীদের সাময়িকভাবে কাতারের আল-উদেইদ বিমানঘাঁটিতে প্রবেশ সীমিত রাখতে বলা হয়েছে। দোহার বাইরে মরুভূমিতে অবস্থিত এই ঘাঁটি মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক স্থাপনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই দুই মার্কিন কর্মকর্তা জানান, বিমান ও যুদ্ধজাহাজ সরিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্য মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সেনা ও সরঞ্জামকে নিরাপদ রাখা। তবে ঠিক কতগুলো বিমান ও জাহাজ সরানো হয়েছে এবং সেগুলো কোথায় নেয়া হয়েছে, সে বিষয়ে তারা কিছু জানাননি।
এছাড়া বাহরাইনের একটি বন্দরের জাহাজগুলোও সেখান থেকে সরানো হয়েছে।
ইসরায়েলে ইরানের মিসাইল হামলায় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বিধ্বস্ত, আহত ৬৫
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর কমান্ড সেন্টার, গোয়েন্দা বিভাগের সদর দপ্তর এবং সামরিক বাহিনীর গোয়েন্দা শাখার একটি শিবিরে আঘাত হেনেছে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম ইরনা।
ইরানের টার্গেটের মধ্যে পড়েছে দক্ষিণের বিরশেবা শহরের সোরোকা মেডিক্যাল সেন্টার, তেল আবিবের কাছের হোলোন শহর, আর রামাতগন শহর। ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ) জানিয়েছে সর্বশেষ মিসাইল হামলায় ৬৫ ইসরায়েলি আহত হয়েছে।
ইরান বলেছে, বিরশেবায় তাদের আসল লক্ষ্য ছিল হাসপাতালের পাশে থাকা সামরিক স্থাপনা। তবে ইসরায়েলের উপ–পররাষ্ট্রমন্ত্রী শ্যারেন হাসকেল অভিযোগ করেছেন, ইরান ইচ্ছে করে সোরোকা হাসপাতালকে টার্গেট করেছে।
সোরোকা হাসপাতালে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতের জেরে ইরানের প্রতি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। হাসপাতালে হামলার জন্য ইরানকে ‘চড়া মূল্য’ দিতে হবে বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।
ইরানে নিহতের সংখ্যা কত?
ইরানে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। একটি মানবাধিকার গোষ্ঠী জানিয়েছে, এই হামলায় এখন পর্যন্ত দেশটিতে কমপক্ষে ৬৩৯ জন নিহত ও এক হাজার ৩২৯ জন আহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ওয়াশিংটনভিত্তিক গোষ্ঠী হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্টস এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে, যা সমগ্র ইরানকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ২৬৩ জন বেসামরিক নাগরিক ও ১৫৪ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য রয়েছেন।
ইরানের দুই পরমাণু কেন্দ্রে হামলা
ইরানের আরাক শহরে ভারী পানির পারমাণবিক চুল্লিতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের বরাতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এছাড়া আবারও নাতাঞ্জ পরমাণু কেন্দ্রেও হামলা করেছে ইসরায়েল।