ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থানে রোববার রাত, সোমবার ভোরেও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। সর্বশেষ এসব হামলায় এখন পর্যন্ত চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদম (এমডিএ) জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে দুজন পুরুষ এবং দুজন নারী।
নেতানিয়াহু সরকারের সরবরাহ করা তথ্যানুযায়ী, ইরানের হামলায় এখন পর্যন্ত মোট ১৯ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের শীর্ষ সারির সেনা কর্মকর্তা, বিজ্ঞানী, বেসামরিক নাগরিকসহ নিহতের সংখ্যা ২২৪ ছাড়িয়েছে।
ইসরায়েলের শুরু করা আক্রমণের জবাবে রোববার রাতেও পঞ্চম দফায় মিসাইলের বৃষ্টি ঝরিয়েছে ইরান। ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে অন্তত চার জায়গায় আঘাত হানে ইরানি মিসাইল।
ইসরায়েলের বন্দর নগরী হাইফায় ইরানের হামলায় অনেক মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। তেল আবিব থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরের এই শহরটিতে হামলার খবর জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম।
তারা বলছে, হামলা হয়েছে এমন জায়গাগুলোতে আগুন দেখা যাচ্ছে। ইরানের সবশেষ এই হামলার পর ইসরায়েলের জরুরি সেবার কর্মীরা তাদের কাজ শুরু করেছে। সোমবার প্রথম প্রহরে ইরানের সম্ভাব্য ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত করার জন্যই ইসরায়েল ইরানে হামলা করেছে বলে ইসরায়েলের সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।
সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।
এদিকে ইরান জানিয়েছে তেহরানে ইসরায়েলের হামলায় সবশেষ পাওয়া তথ্যমতে, দেশটির গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান তার একজন সহকারী ও একজন কমান্ডারের মৃত্যু হয়েছে।
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন।
ইসরায়েলের এই আক্রমণের জবাবে একের পর এক মিসাইল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইরান, যা ইসরায়েলের শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোমের মাধ্যমেও ঠেকানো যাচ্ছে না।