পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে রাজধানী ছাড়ছে। সরকারের নানামুখী উদ্যোগের কারণে এবারের ঈদযাত্রায় মানুষের ভোগান্তি অনেকাংশে কমে এসেছে। রেল, সড়ক, নৌ ও আকাশপথের যানগুলো ছেড়ে যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে। ঈদযাত্রাকে নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করতে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আগাম টিকিটে ঈদযাত্রা শুরু হয়েছে সোমবার থেকে। আজ বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ট্রেনে ঈদযাত্রার চতুর্থ দিন। গত ১৭ মার্চ যারা টিকিট কিনেছেন তারা আজ ট্রেনে যাত্রা করছেন। এবারের ঈদে সারাদেশে চলাচলকারী ১২০টি আন্তঃনগর ট্রেনের বাইরেও রয়েছে পাঁচজোড়া বিশেষ ট্রেন। তাছাড়া বিভিন্ন লোকাল, কমিউটার ও মেইল ট্রেন চলাচল করছে।
ঈদযাত্রা নিরাপদ, স্বাচ্ছন্দ্যময় ও উৎসবমুখর করতে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। টিকিট কাউন্টার, প্ল্যাটফর্মসহ সব জায়গায় র্যাব, পুলিশ, আনসার সদস্যের পাশাপাশি রেলওয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি চোখে পড়েছে।
সড়কপথেও এবার স্বাচ্ছেন্দ্যে বাড়ি ফিরতে পারছে মানুষ। ঈদযাত্রা উপলক্ষে ঢাকার বিভিন্ন টার্মিনালে ভিড় থাকলেও যাত্রীর তেমন চাপ দেখা যায়নি। ঈদের ছুটি দীর্ঘ হওয়ায় এবার বাড়ি যেতে যাত্রীদের ভোগান্তি কম হচ্ছে। ঈদযাত্রাকে ঘিরে কোথাও অতিরিক্ত ভাড়া নিলে ব্যবস্থা নিচ্ছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
ঈদযাত্রায় গণপরিবহনে যাত্রীদের মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজা এলাকায় ৭টি বুথে আদায় করা হচ্ছে যানবাহনের টোল। তবে মোটরসাইকেলের জন্য বরাবরের মতোই এবারও রয়েছে আলাদাভাবে টোল নেওয়ার ব্যবস্থা।
সেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামীকাল শুক্রবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদের ছুটি শুরু হলে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পাবে সেতুতে। অন্যদিকে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহনের অতিরিক্ত গতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
ঈদযাত্রা উপলক্ষে নৌপথেও যাত্রীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সদরঘাট থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের লঞ্চগুলো যথাসময়ে ছেড়ে যাচ্ছে। সদরঘাটে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে। অতিরিক্ত ভাড়া যেন নিতে না পারে সেজন্য তদারকি করছে বাংলাদেশ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ।
সব লঞ্চে নির্ধারিত ভাড়া তালিকা প্রদর্শন ও আদায় নিশ্চিতে অভিযান পরিচালনার কথা জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটি-এর নৌ-নিরাপত্তা ট্রাফিক ব্যবস্থা বিভাগের ঢাকা নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক মুহম্মদ মোবারক হোসেন। তিনি বলেছেন, অতিরিক্ত ভাড়া যেন কেউ আদায় করতে না পারে সেজন্য আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছি। কয়েকটি লঞ্চকে জরিমানা করেছি। এখন সব লঞ্চে নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা টাঙানো আছে। অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ না থাকলেও সব রুটে যাত্রী চলাচল স্বাভাবিক আছে।
এদিকে ঈদ উপলক্ষে বুধবার থেকে ঢাকা-সৈয়দপুর ও ঢাকা-রাজশাহী রুটে অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। অন্যান্য বেসরকারি বিমান অপারেটরগুলোও তাদের নির্ধারিত ফ্লাইট পরিচালনা করছে।