সম্প্রতি চীনে এইচএমপি ভাইরাসের সংক্রমণ ঘিরে উদ্বেগ দানা বাঁধতে শুরু করেছে। ভারতসহ বিশ্বের অন্য দেশগুলোতে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। করোনা মহামারির ৫ বছর পর আবারও নতুন ব্যাধি আতঙ্কে পূর্ব এশিয়ার দেশ চীন। এখনও নিশ্চিত হওয়া না গেলেও, প্রাথমিক ধারণা, রাইনোভাইরাস ও হিউম্যান-মেটা-নিউমো (HMP) (এইচএমপি) নামে ভাইরাসের সংক্রমণে দেশটিতে রহস্যময় এই রোগের প্রাদুর্ভাব। যদিও চীন জানিয়েছে, এটি একটি মৌসুমি সংক্রমণ। এর মধ্যেই ভাইরাসটি এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে গেছে। এটির লক্ষণ শনাক্ত হয়েছে জাপানেও। এইচএমপিভি (HMP) ভাইরাসটির মূল লক্ষণ শ্বাসতন্ত্রের জটিলতা।
এ ভাইরাসের মিউটেশন প্রক্রিয়াটা কেমন? কতটা ভয়াবহ সংক্রমণ? এ বিষয়ে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ড. তাহমিনা শিরীন বলেন, এটা নতুন কোনো ভাইরাস নয়। এমনকি এ নিয়ে বাংলাদেশে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। তিনি আরও বলেন, শ্বাসতন্ত্রে ছড়ায় এমন অন্যান্য ভাইরাসের মতোই এটি। অনেকটা ইনফ্লুয়েঞ্জা ধরণের ভাইরাসের আক্রমণের মতো। যার উপসর্গ হিসেবে সাধারণত জ্বর-স্বর্দি-কাশি-ঠান্ডা হয়ে থাকে। কোভিড-১৯ একেবারে ভিন্ন ও নতুন আবহের ভাইরাস হওয়ায় এর প্রাদুর্ভাব বা মহামারির রেশ এতোটা বিস্তর হয়েছিল। তবে HMP নিয়ে আতঙ্কিত না হবারও পরামর্শ দেন তিনি।
এটিকে শুধুমাত্র ‘শীতকালীন সংক্রমণ’ বলেই ব্যাখ্যা করছে চীন। চীনের পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে ভারতও। তবে দেশবাসীকে অযথা উদ্বিগ্ন না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে ভারতের বেঙ্গালুরুতে আট মাসের এক শিশুর শরীরে এইচএমপি ভাইরাসের সন্ধান মিলেছে। বেঙ্গালুরুর এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই শিশুর নমুনা পরীক্ষায় এ ভাইরাসের সংক্রমণ মেলে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে আগেও হিউম্যান-মেটা-নিউমো (HMP) ভাইরাসের অস্তিত্ব ছিল। এখনও শিশু আর প্রবীণদের শরীরে মিলবে এটির অস্তিত্ব। তবে আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। করোনার মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই, সংক্রমণ থেকে দূরে থাকা সম্ভব। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. মুশতাক হোসেন বলেন, অধিকাংশ ভাইরাসেরই সরাসরি কোনো ওষুধ নেই, তবে লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা রয়েছে; এটির ক্ষেত্রেও তাই। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি এইচএমপি ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে কি না, সেবিষয়ে চিকিৎসা গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য, ফিনল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনে শনাক্ত হয়েছিলো HMP ভাইরাস।