জন্মেই মা হারানো হাতি শাবকটি ডুলাহাজরা সাফারি পার্কে আশ্রয় পেলেও মাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে সারাক্ষণ। বোবা প্রাণীটির চোখ দিয়ে ঝরছে পানি। আইসোলেশন কক্ষের বাইরে আনলেই হাতি শাবকটি চঞ্চল হয়ে খোঁজে মাকে। তবু হাতি শাবকদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা মাহুতরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন এটির যত্ন নিতে।
মাহুত সুশীল চাকমা বলেন, ‘সর্বোচ্চ যত্নে রাখার চেষ্টা করছি শাবকটিকে। তবু মায়ের শূন্যতাতো পূরণ করা সম্ভব নয়, হোক সেটা মানুষের বাচ্চা অথবা হাতির, মা তো মা-ই। তবু চেষ্টা করবো নিজের ছেলের মতোই বড় করার।’
ডুলাহাজরা সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম জানান, টেকনাফ থেকে উদ্ধার করা হাতি শাবকটির যত্নের কমতি রাখা হচ্ছে না। শাবকটির শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। দুই-তিন ঘণ্টা পর পর কৃত্রিম উপায়ে বোতলে করে দুধ খাওয়ানো হচ্ছে। হাতি শাবকটি পুরুষ লিঙ্গের। শাবকটি এখন আশঙ্কামুক্ত।
গত ৫ জানুয়ারি কক্সবাজারের টেকনাফের হোয়াইখং রেঞ্জের হোয়াইখং বনবিটের হরিণখোলা বুড়াবনিয়া নামক বনাঞ্চলে একটি গর্ভবতী হাতি শাবকটি প্রসব করে।
এরপর প্রসবকালীন জটিলতায় মা হাতিটি মারা যায়। তবে প্রসবকৃত হাতি শাবকটি সুস্থ ছিল। পরে স্থানীয় লোকজন মাতৃহীন হাতি শাবকটি দেখে সংশ্লিষ্ট বনকর্মীদের খবর দেয়। বনকর্মীরা খবর পেয়ে দ্রুত নবজাতক হাতি শাবকটি উদ্ধার করে বনবিট অফিসে নিয়ে আসে এবং মৃত মা হাতিটি মাটিতে পুতে ফেলেন।
পরে মাত্র ১ দিন বয়সী হাতি শাবকটি লালন পালন নিয়ে বেকায়দায় পড়েন বনকর্মীরা। বিষয়টি বনবিভাগের উর্ধতন বনকর্মকর্তার নজরে আনা হলে তাদের নির্দেশনা মোতাবেক হাতি শাবকটি লালন-পালন ও চিকিৎসার জন্য ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে বন্যপ্রাণী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এর আগে বাঁশখালী থেকে তিন মাস বয়সী একটি স্ত্রী লিঙ্গের দুগ্ধপোষ্য হাতির শাবক মরণাপন্ন অবস্থায় উদ্ধার করে সাফারি পার্ক হাসপাতালে এনে চিকিৎসা ও দুধ খাইয়ে লালন-পালন করা হয়। বর্তমানে শাবকটির বয়স প্রায় ৩ বছর এবং এটি সুস্থ সবল রয়েছে।