খুলনার কয়রা উপজেলার কাশিয়াবাদ পুলিশ ফাঁড়ির পাশে গাছ থেকে একটি অজগর সাপ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকাল ৮টার দিকে সাপটি স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার করা হয়। পরে সাপটি সুন্দরবনের গভীরে অবমুক্ত করা হয়।
বন বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কাশিয়াবাদ পুলিশ ফাঁড়ির পাশের একটি গাছে অজগর সাপটি দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে পুলিশ সদস্যদের জানানো হলে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বনবিভাগকে অবহিত করেন। খবর পেয়ে কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা বনকর্মীদের নিয়ে উপস্থিত হয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় প্রায় ১০ ফুট লম্বা অজগরটি উদ্ধার করে।
কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম (শাহেদ) জানান, সাপটি সুন্দরবনের গহীনে অবমুক্ত করা হয়েছে।
এর আগে গত ৩১ মে কয়রা উপজেলার মঠবাড়ি গ্রামের আতিয়ার রহমান গাজীর বাড়িতে আরেকটি অজগর দেখে স্থানীয়রা বন বিভাগকে খবর দেয়। অজগরটি কাশিয়াবাদ স্টেশনের আওতায় সত্যপিরের ভারানী এলাকায় অবমুক্ত করা হয়েছিল।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কয়রাতে মে-জুন মাসে প্রায়ই লোকালয় থেকে অজগর সাপ উদ্ধার হচ্ছে। সাপগুলো লোকালয়ে আসার প্রবণতা সুন্দরবনে অজগরের খাবার সংকটের কারণে বৃদ্ধি পেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে লোকালয়ে আসা অজগরগুলোর কয়েকটি মুরগির খোপের আশপাশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল।
অজগর নির্বিষ সাপ। এটি নিশাচর ও অলস প্রকৃতির, প্রয়োজন ছাড়া নড়াচড়া করে না। এই প্রজাতিটি গাছে একাকী বাস করলেও শুধু প্রজননকালে জোড়া বাধে। সাধারণত মার্চ থেকে জুনের মধ্যে এদের প্রজননকাল। দেশের ম্যানগ্রোভ বন, ঘাসযুক্ত জমি, চট্টগ্রাম ও সিলেটের চিরসবুজ পাহাড়ি বনে এদের দেখা পাওয়া যায়। সাপটি সাধারণত মানুষের ক্ষতি করে না। খাদ্য হিসেবে এরা ইঁদুর, কচ্ছপের ডিম, সাপ, বন মুরগি, পাখি, ছোট বন্যপ্রাণী ইত্যাদি খায়।
বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ এর তফসিল-২ অনুযায়ী এ বন্যপ্রাণীটি সংরক্ষিত, তাই এটি হত্যা বা এর যে কোনো ক্ষতি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।