গাজায় চলমান ধ্বংসযজ্ঞ ও প্রাণহানির প্রতিবাদে বৈশ্বিক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দুটি সংগঠন নিউইয়র্ক হেলথকেয়ার ওয়ার্কার্স ফর প্যালেস্টাইন এবং ডক্টর্স অ্যাগেইনস্ট জেনোসাইড। আজ সোমবার নিউইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘের প্রধান কার্যালয়ের সামনে স্থানীয় কর্মীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করবেন। কর্মসূচির নাম ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’।
‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ কর্মসূচির ব্যাপারে হেলথকেয়ার ওয়ার্কার্স ফর প্যালেস্টাইন তাদের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে লিখেছে, গাজায় গণহত্যা বন্ধে আমরা বৈশ্বিক ধর্মঘটের আহ্বান জানাচ্ছি। এই উদ্দেশ্য সফল করতে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থল বন্ধ থাকবে। পদক্ষেপ নেওয়ার এখনই সময়।
একই সঙ্গে বিশ্বজুড়ে সর্বাত্মক অবরোধের ডাক দিয়েছে ‘দ্য ন্যাশনাল অ্যান্ড ইসলামিক ফোর্সেস ইন প্যালেস্টাইন’। ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল আনটিল জেনোসাইড স্টপস’, অর্থাৎ ‘গণহত্যা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত কাজ ও স্কুল বন্ধ’ নামে আজ সোমবার বিশ্বজুড়ে এ অবরোধ পালনের আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি নামে এই অবরোধ ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে আলোচিত হচ্ছে।
ওয়াফা নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, সোমবার (৭ এপ্রিল) এ অবরোধ পালনের আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। ফিলিস্তিনসহ বিশ্বজুড়ে এটি পালনের ডাক দিয়েছেন তারা।
এক বিবৃতিতে রোববার সংগঠনটি জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে সোচ্চার ও ঐক্যবদ্ধ হতে এ অবরোধের ডাক দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে ইসরাইলের ভয়ংকর নৃশংসতা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং প্রতিরোধ জোরাল করতে এটি পালনের আহ্বান করা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, গাজায় বেসামরিক নাগরিক, নারী ও শিশুদের হত্যা করছে ইসরায়েল। লাখো ফিলিস্তিনিকে ঘরছাড়া করা হচ্ছে। বিবৃতিতে ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা জোরদার এবং আন্তর্জাতিক আইন ও ফিলিস্তিনিদের অধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহিতার দাবি অব্যাহত রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দেওয়া হয়।
একদিকে এসব কর্মসূচি চলছে, অন্যদিকে গাজায় চলছে ইসরায়েলের নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। গতকাল রোববার ভোরে গাজার খান ইউনিসের একটি আবাসিক এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় ৯ জন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি বোমা হামলায় সেখানে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে নারী-শিশুর মরদেহ। ওই হামলা থেকে বেঁচে ফেরা খান ইউনিসের বাসিন্দা জামাল আল-মধুন বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ঘুমাচ্ছিলাম। হঠাৎ ঘরগুলো মাটির সঙ্গে মিশে গেল। আমরা ধ্বংসস্তূপ থেকে আটজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছি। তাদের সবাই নারী ও শিশু। একজন পুরুষও নেই। এই নিরীহ নারী-শিশু সবার মরদেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শনিবার রাতভর ইসরায়েলি হামলায় ২১ জন নিহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের বর্বর হামলায় অন্তত ৫০ হাজার ৬৯৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১৫ হাজার ৩৩৮ জন আহত হয়েছেন।