সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ‘২ অক্টোবর থেকে সচিবালয়ে নিষিদ্ধ হচ্ছে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক সামগ্রী’ Logo ১১৯ বার পেছাল সাগর-রুনি হত্যা মামলার প্রতিবেদন Logo নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিবেশবান্ধব বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কাজ করছে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা Logo পরিবেশ ও শ্রমিকবান্ধব টেকসই চামড়া শিল্পখাতের জন্য টিসিসি গঠনের প্রস্তাবনা সভাতেই বড় ঘোষণা! Logo ইরান থেকে দ্বিতীয় দফায় ফিরলেন ৩২ বাংলাদেশি Logo ৩৫ শতাংশ শুল্কের কথা জানিয়ে ড. ইউনূসকে দেওয়া চিঠিতে যা লিখলেন ট্রাম্প Logo পাকিস্তানের রাস্তায় নারী-শিশুর ওপর সিংহের আক্রমণ, কিন্তু কিভাবে? Logo মূল্যস্ফীতির হার কমে ৮.৪৮ শতাংশে, ২৭ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন Logo ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে তিনজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪৯২ Logo বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে নিয়ে যেতে চান ঋতুপর্ণা

গাজীপুর সাফারি পার্কের প্রাণী নিখোঁজ নিয়ে কঠোর অবস্থানে পরিবেশ উপদেষ্টা  

গাজীপুর সাফারি পার্কের প্রাণী নিখোঁজ নিয়ে কঠোর অবস্থানে পরিবেশ উপদেষ্টা  

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, গাজীপুর সাফারি পার্কের দুর্লভ প্রাণী হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় যারা দায়ী, তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে। শুধুমাত্র চাকরিচ্যুতি নয়, এমন শাস্তি দিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের গাফিলতি করার সাহস না পায়।

 

এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আজ বুধবার (৯ এপ্রিল) গাজীপুর সাফারি পার্ক পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন করেন।

 

প্রসঙ্গত, গাজীপুর সাফারি পার্ক থেকে একের পর এক প্রাণী চুরির ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে। কয়েক মাস আগে দুটি ম্যাকাও পাখি চুরির পর সম্প্রতি তিনটি আফ্রিকান লেমুর চুরি হয়। এরপর সাফারি পার্ক পরিদর্শনে গিয়ে উপদেষ্টা এই হুঁশিয়ারি দিলেন।

 

সাম্প্রতিক প্রাণী নিখোঁজের ঘটনায় উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, লেমুর হারিয়ে গেলে বুঝতে হবে ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি আছে। দায়িত্বপ্রাপ্তদের সাথে কথা বলে আমি সিসিটিভি ও নিরাপত্তাব্যবস্থার ঘাটতি চিহ্নিত করেছি। তিনি জানান, তদন্তে স্বচ্ছতা আনতে বন্যপ্রাণী ও অপরাধ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি শক্তিশালী তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

 

পরিবেশ উপদেষ্টা জানান, পার্কে ঘুরে তার মনে হয়েছে কিছু প্রাণী প্রাকৃতিক পরিবেশের অনুরূপ পরিবেশে থাকলেও অনেক প্রাণীর জীবনমান পর্যাপ্ত নয়। কিছু হাতি ও জাগুয়ারের আচরণগত অস্বাভাবিকতা তাকে উদ্বিগ্ন করেছে। তিনি বলেন, এই পার্ক দর্শনার্থীদের জন্য শুধু বিনোদনের নয়, বরং প্রাণীর প্রতি ভালোবাসা ও সহমর্মিতা শেখার স্থান হওয়া উচিত।

সাফারি পার্ক পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, তার পাশে প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী

বন বিভাগের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, সরকারি প্রকল্প এলেই কাজ করবে – এমনটা হতে পারে না। সাফারি পার্ক একটি জাতীয় সম্পদ। এর উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণে নিয়মিত বরাদ্দ ও সদিচ্ছা প্রয়োজন।  তিনি জানান, হাতিদের জন্য শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড ও ভারতের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে এবং ক্যাপটিভ হাতিদের কল্যাণে নতুন একটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

 

উপদেষ্টা বলেন, যারা গাজীপুরে থাকেন, তাদেরকেই প্রথম দায়িত্ব নিতে হবে এই জাতীয় সম্পদ রক্ষা করার জন্য। প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা রোধ, অবৈধ পাখি বিক্রি বন্ধ, ও নিখোঁজ প্রাণী উদ্ধারে প্রশাসনের পাশাপাশি জনসচেতনতাও জরুরি।

 

বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো: আমীর হোসাইন চৌধুরী, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীন, পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো: যাবের সাদেক, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক সানাউল্লাহ পাটোয়ারী, সেন্ট্রাল সার্কেলের বন সংরক্ষক এ এস এম জহির উদ্দিন আকন, গাজীপুর সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

 

উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান পরে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান পরিদর্শন করেন এবং বন বিভাগের চম্পা সম্মেলন কক্ষে গাজীপুরস্থ বন অধিদপ্তর এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। তিনি এসময় গাজীপুর পরিবেশ ও বন সংরক্ষণে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি কর্মকর্তাদের কাছে সমস্যার কথা শোনেন এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

আপলোডকারীর তথ্য

Shuvo

জনপ্রিয় সংবাদ

‘২ অক্টোবর থেকে সচিবালয়ে নিষিদ্ধ হচ্ছে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক সামগ্রী’

গাজীপুর সাফারি পার্কের প্রাণী নিখোঁজ নিয়ে কঠোর অবস্থানে পরিবেশ উপদেষ্টা  

আপডেট সময় ০৭:০৪:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, গাজীপুর সাফারি পার্কের দুর্লভ প্রাণী হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় যারা দায়ী, তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে। শুধুমাত্র চাকরিচ্যুতি নয়, এমন শাস্তি দিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের গাফিলতি করার সাহস না পায়।

 

এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আজ বুধবার (৯ এপ্রিল) গাজীপুর সাফারি পার্ক পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন করেন।

 

প্রসঙ্গত, গাজীপুর সাফারি পার্ক থেকে একের পর এক প্রাণী চুরির ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে। কয়েক মাস আগে দুটি ম্যাকাও পাখি চুরির পর সম্প্রতি তিনটি আফ্রিকান লেমুর চুরি হয়। এরপর সাফারি পার্ক পরিদর্শনে গিয়ে উপদেষ্টা এই হুঁশিয়ারি দিলেন।

 

সাম্প্রতিক প্রাণী নিখোঁজের ঘটনায় উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, লেমুর হারিয়ে গেলে বুঝতে হবে ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি আছে। দায়িত্বপ্রাপ্তদের সাথে কথা বলে আমি সিসিটিভি ও নিরাপত্তাব্যবস্থার ঘাটতি চিহ্নিত করেছি। তিনি জানান, তদন্তে স্বচ্ছতা আনতে বন্যপ্রাণী ও অপরাধ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি শক্তিশালী তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

 

পরিবেশ উপদেষ্টা জানান, পার্কে ঘুরে তার মনে হয়েছে কিছু প্রাণী প্রাকৃতিক পরিবেশের অনুরূপ পরিবেশে থাকলেও অনেক প্রাণীর জীবনমান পর্যাপ্ত নয়। কিছু হাতি ও জাগুয়ারের আচরণগত অস্বাভাবিকতা তাকে উদ্বিগ্ন করেছে। তিনি বলেন, এই পার্ক দর্শনার্থীদের জন্য শুধু বিনোদনের নয়, বরং প্রাণীর প্রতি ভালোবাসা ও সহমর্মিতা শেখার স্থান হওয়া উচিত।

সাফারি পার্ক পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, তার পাশে প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী

বন বিভাগের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, সরকারি প্রকল্প এলেই কাজ করবে – এমনটা হতে পারে না। সাফারি পার্ক একটি জাতীয় সম্পদ। এর উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণে নিয়মিত বরাদ্দ ও সদিচ্ছা প্রয়োজন।  তিনি জানান, হাতিদের জন্য শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড ও ভারতের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে এবং ক্যাপটিভ হাতিদের কল্যাণে নতুন একটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

 

উপদেষ্টা বলেন, যারা গাজীপুরে থাকেন, তাদেরকেই প্রথম দায়িত্ব নিতে হবে এই জাতীয় সম্পদ রক্ষা করার জন্য। প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা রোধ, অবৈধ পাখি বিক্রি বন্ধ, ও নিখোঁজ প্রাণী উদ্ধারে প্রশাসনের পাশাপাশি জনসচেতনতাও জরুরি।

 

বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো: আমীর হোসাইন চৌধুরী, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীন, পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো: যাবের সাদেক, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক সানাউল্লাহ পাটোয়ারী, সেন্ট্রাল সার্কেলের বন সংরক্ষক এ এস এম জহির উদ্দিন আকন, গাজীপুর সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

 

উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান পরে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান পরিদর্শন করেন এবং বন বিভাগের চম্পা সম্মেলন কক্ষে গাজীপুরস্থ বন অধিদপ্তর এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। তিনি এসময় গাজীপুর পরিবেশ ও বন সংরক্ষণে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি কর্মকর্তাদের কাছে সমস্যার কথা শোনেন এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন।