স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত কবি, লেখক ও কলামিস্ট দাউদ হায়দার মারা গেছেন। ৭৩ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে জার্মানির রাজধানী বার্লিনের একটি বয়স্ক নিরাময় কেন্দ্রে তার মৃত্যু হয়। কবির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার ভাতিজি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাওন্তী হায়দার।
তিনি বলেন, “স্থানীয় সময়ে রাত ৯টা ২০ মিনিটে মারা গেছেন চাচা। বিস্তারিত পরে আমরা জানাতে পারব।”
বেশ কিছুদিন ধরেই নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন চিরকুমার দাউদ হায়দার। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বার্লিনের বাসার সিঁড়িতে পড়ে গিয়ে তিনি মাথায় আঘাত পান। তখন তাকে হাসপাতালের আইসিইউতেও নিতে হয়। এরপর হাসপাতাল ছাড়লেও আর সুস্থ জীবনে ফিরতে পারেননি।
১৯৭৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি “দৈনিক সংবাদ” পত্রিকায় তার কবিতা “কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্নায় কালো বন্যায়” প্রকাশিত হয়। এরপর “ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের” অভিযোগে তার বিরূদ্ধে মামলা হয়। তার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হলে ১১ মার্চ তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
১৯৭৪ সালের ২০ মে জেল থেকে মুক্তি দিয়ে পরদিন কলকাতাগামী একটি বিশেষ ফ্লাইটে তুলে দেওয়া হয় তাকে। ওই ফ্লাইটে আর কোনো যাত্রী ছিল না। তারপর ভারত সরকারও তাকে বহিষ্কার করে। নোবেল লরিয়েট জার্মান সাহিত্যিক গুন্টার গ্রাসের বিশেষ চেষ্টায় ১৯৮৭ সালে জার্মানিতে আশ্রয় নেন দাউদ হায়দার।
দাউদ হায়দারের ভাইদের মধ্যে প্রয়াত হয়েছেন নাট্যকার জিয়া হায়দার, কথাশিল্পী রশীদ হায়দার ও কবি মাকিদ হায়দার। অন্যদের মধ্যে রয়েছেন জাহিদ হায়দার, আবিদ হায়দার ও আরিফ হায়দার। তারা প্রত্যেকেই সাহিত্য-সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত।