ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হাতে থাকা ছয় জিম্মিকে ফেরত দিলেও ইসরায়েল কোনো বন্দি ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয়নি। অথচ কথা ছিল, ছয় জিম্মির বিনিময়ে ছয় শতাধিক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ফিলিস্তিনি জিম্মিদের মুক্তির বিলম্বকে নেতানিয়াহুর সময়ক্ষেপণের কৌশল হিসেবে দেখছে হামাস। একই সঙ্গে সংগঠনটি বলেছে, গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তি নস্যাৎ করতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ‘নোংরা খেলায়’ মেতেছেন।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের’ মাধ্যমে ইসরায়েলের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাই আপাতত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে না।
গতকাল শনিবার রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু আরও বলেন, ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের জিম্মিদের ফেরত দেওয়া হয়েছে, তাদেকে অসম্মান করা হয়েছে এবং অপপ্রচারের জন্য তাদেরকে অত্যন্ত নিন্দনীয়ভাবে বারবার ব্যবহার করেছে হামাস। এসব স্পষ্টতই যুদ্ধবরিতি চুক্তির লঙ্ঘন। তাই পরবর্তী ধাপে অপমানজনক অনুষ্ঠান ছাড়া জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত কোনো সন্ত্রাসীকে (ফিলিস্তিনি) মুক্তি দেওয়া হবে না।’
এই প্রেক্ষাপটে হামাসের রাজনৈতিক শাখার জ্যেষ্ঠ সদস্য বাসেম নাঈম আল জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেন, আগামী ১ মার্চ যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপ শেষ হবে। এর মধ্যে দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে একটি ঐকমত্যে পৌঁছাতে চাচ্ছে হামাস। কিন্তু তাতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না ইসরায়েল।
বাসেম নাঈম বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আবারও এই চুক্তিকে ভণ্ডুল ও গুরুত্বহীন করার নোংরা খেলা চলছে। আর এই খেলার মাধ্যমে আবার নতুন করে যুদ্ধে ফিরে যাওয়ার বার্তা দেওয়া হচ্ছে।’
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার ১৬ মাস পর গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। এরপর থেকে এ পর্যন্ত চুক্তি অনুযায়ী ২৫ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। প্রতিবারই বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হামাস তাদের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তি দিয়েছে। অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে জিম্মিদের হামাস যোদ্ধারা একটি মঞ্চে নিয়ে যান। এ সময় সেখানে উপস্থিত গাজাবাসীর উদ্দেশে জিম্মিদের হাত নাড়াতে এবং ভাষণ দিতে দেখা যায়। এছাড়া মুক্তিপাওয়া জিম্মিদের একটি সনদ ও উপহারের ব্যাগও দেয়া হয়। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মুক্তি দেয়াকে অপমানজনক বলে প্রচার করছে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম এবং নেতানিয়াহু পক্ষ।