বাংলাদেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী এবং টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাতা হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল আর নেই। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে দুপুর ১১টা ৫৩ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। জুয়েলের বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। তাঁর জন্ম ১৯৬৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর। তিনি স্ত্রী ও এক কন্যাসন্তান রেখে গেছেন।
২০১১ সালে জুয়েলের লিভার ক্যানসার ধরা পড়ে। এরপর ফুসফুস এবং হাড়েও সেটি ক্রমশ সংক্রমিত হয়। মাঝে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এই শিল্পী ক্যানসারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে গেছেন দেশ ও বিদেশের চিকিৎসা সহযোগিতায়। অবশেষে চলতি বছরের ২৩ জুলাই রাত থেকে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। ২৫ জুলাই খানিক উন্নতির খবর পাওয়া গেলেও ৩০ জুলাই সকালে ক্যানসারের কাছে হার মানলেন এই শিল্পী।
নব্বই দশকের দিকে ব্যতিক্রমী কণ্ঠ নিয়ে হাজির হন শিল্পী হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল। আইয়ুব বাচ্চুর সুরে প্রথম অ্যালবাম ‘কুয়াশা প্রহর’ প্রকাশ হয় ১৯৯৩ সালে। প্রথম অ্যালবামেই বাজিমাত করেন জুয়েল। এরপর একে একে প্রকাশিত হয় ‘এক বিকেলে’ (১৯৯৪), ‘আমার আছে অন্ধকার’ (১৯৯৫), ‘একটা মানুষ’ (১৯৯৬), ‘দেখা হবে না’ (১৯৯৭), ‘বেশি কিছু নয়’ (১৯৯৮), ‘বেদনা শুধুই বেদনা’ (১৯৯৯), ‘ফিরতি পথে’ (২০০৩), ‘দরজা খোলা বাড়ি’ (২০০৯) এবং ‘এমন কেন হলো’ (২০১৭)। এছাড়াও বেশ কিছু সিঙ্গেল ও মিশ্র অ্যালবামে গেয়েছেন জুয়েল।
এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে ‘এক বিকেলে’ অ্যালবামটি। এই অ্যালবামটি প্রকাশের পরই তার নাম হয়ে যায় ‘এক বিকেলের জুয়েল’। তখন সবাই তাকে এই নামেই চিনতে শুরু করেন।
জুয়েলের গ্রামের বাড়ি বরিশালের মুলাদী। চাচা কিংবদন্তি সুরকার আলতাফ মাহমুদ ছিলেন জুয়েলের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। মা-বাবার অনুপ্রেরণাতেই গানের জগতে পা রাখেন জুয়েল। প্রথম শ্রেণিতে পড়ার সময় প্রতিবেশী একজনের কাছে গান শিখেছিলেন। আর মঞ্চে প্রথম গান করেছিলেন তখন তিনি পড়েন চতুর্থ শ্রেণিতে।
সংগীতশিল্পী জুয়েল ১৯৮৬ সালে ঢাকায় আসেন। এসেই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি কেন্দ্রিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক তৎপরতায় জড়িয়ে পড়েন। তখনই বিভিন্ন মিডিয়ার সাথে তার যোগাযোগ ঘটতে শুরু করে। তিনি একই সঙ্গে সংগীতশিল্পী, টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাতা ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
জুয়েলের জানাজা ও দাফন নিয়ে পারিবারিক সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে শিল্পীর মেজ ভাই মহিবুর রেজা রুবেল বলেন, আজ বাদ আসর জুয়েলের জানাজা হবে গুলশানের আজাদ মসজিদে। সন্ধ্যার পর বনানী কবরস্থানে হবে দাফন। তবে সময়ের একটু হেরফের হতে পারে।
নিজস্ব সংবাদ : 




















