সংবাদ শিরোনাম ::
Logo আশা জাগিয়ে শুরু কপ ৩০, মুকিত মজুমদার বাবুর প্রত্যাশা পূর্বের প্রতিশ্রুতিগুলোর বাস্তবায়ন    Logo ট্রাম্পকে ইঙ্গিত করে লুলার প্রত্যয়, “কপ ৩০ হবে সত্যের কপ” Logo এবার নিজেকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন আরিফিন শুভ Logo ১৩ নভেম্বরের কর্মসূচি ঘিরে কোনো শঙ্কা নেই: ডিএমপি কমিশনার Logo ভারত-পাকিস্তানে একরাতের ব্যবধানে বোমা হামলা: দিল্লিতে নিহত ৯, ইসলামাবাদে নিহত ১২ Logo রাতের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে Logo সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ বাড়ল সাড়ে তিন মাস Logo দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হজ পালনের অনুমতি দিবে না সৌদি সরকার Logo নদী গিলে নিচ্ছে জমি: ভাঙনের সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তহীন লড়াই Logo ময়মনসিংহে বাসে আগুন, দগ্ধ হয়ে চালকের মৃত্যু
প্রযুক্তি

‘জেন-জি’দের পরিচয়

‘জেন-জি’দের পরিচয় । ছবি : সংগৃহীত

জেন জি বা জেনারেশন জেড, যাদেরকে জুমারস নামেও ডাকা হয়, তারা হলো এমন এক প্রজন্ম যারা ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছে। বর্তমান সময়ে তাদের বয়স ১২ থেকে ২৭ বছরের মধ্যে। এই প্রজন্মের মানুষদের জীবনে প্রযুক্তির প্রভাব অত্যন্ত গভীর। ডিজিটাল যুগে জন্ম নেওয়ার কারণে, তারা ইন্টারনেট, স্মার্টফোন ও সামাজিক মাধ্যমের সাথে বেড়ে উঠেছে, যা তাদের জীবনধারা ও দৃষ্টিভঙ্গিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।

জেনারেশন জেডের বৈশিষ্ট্য:

প্রযুক্তি-নির্ভরতা: জেনারেশন জেড প্রযুক্তির সাথে বেড়ে উঠেছে। তারা ইন্টারনেটকে জীবনের অপরিহার্য অংশ হিসেবে দেখেন। স্মার্টফোন, ট্যাবলেট ও কম্পিউটার তাদের প্রাত্যহিক জীবনের অপরিহার্য সরঞ্জাম। এই প্রজন্মের মানুষরা সোশ্যাল মিডিয়া, ইউটিউব ও অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিশ্বকে জানছে এবং শিখছে।

গ্লোবাল নাগরিকত্ব: জেনারেশন জেডের জন্য বিশ্ব এখন অনেক ছোট। তারা প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষের সাথে সংযোগ স্থাপন করছে ও বৈশ্বিক বিষয়াবলিতে গভীর আগ্রহ দেখাচ্ছে। এই প্রজন্মের মধ্যে অনেকেই বহুভাষিক ও বিভিন্ন সংস্কৃতি সম্পর্কে জ্ঞানী।

পরিবেশ সচেতনতা: জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়ে জেন-জিরা অত্যন্ত সচেতন। তারা পরিবেশ সংরক্ষণে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে আগ্রহী ও টেকসই উন্নয়নের জন্য জোর দিচ্ছে। গ্রেটা থানবার্গের মতো নেতারা এই প্রজন্মের মধ্যে পরিবেশ আন্দোলনের প্রতীক হয়ে উঠেছে।

সামাজিক ন্যায়বিচারের পক্ষে অবস্থান: এই প্রজন্মের মানুষরা সামাজিক ন্যায়বিচার, সমতা ও বৈচিত্র্যের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেয়। তারা জাতিগত সমতা ও লিঙ্গ বৈষম্যের মতো বিষয়গুলো নিয়ে সোচ্চার এবং সক্রিয়।

অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ: জেনারেশন জেডকে এমন এক সময়ে জীবনের মুখোমুখি হতে হচ্ছে যখন বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান। উচ্চতর শিক্ষার জন্য ঋণ, চাকরির অনিশ্চয়তা ও বর্ধিত জীবনের খরচ তাদের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে।

‘জেন-জি’দের পরিচয় prokritibarta

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে জেন-জি

বাংলাদেশে জেনারেশন জেড নতুন নতুন সুযোগ ও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। তারা দ্রুত পরিবর্তনশীল একটি বিশ্বে বেড়ে উঠছে, যেখানে প্রযুক্তি, অর্থনীতি ও সামাজিক পরিবর্তন একসাথে প্রভাব ফেলছে। সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ‘জেন-জি’ শব্দটি বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। কারণ এই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ও নেতৃত্ব দেওয়া বেশিরভাগই ছিলেন এই প্রজন্মের সদস্য।

শিক্ষা ও প্রযুক্তি: বাংলাদেশের জেনারেশন জেড প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের শিক্ষা ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে নতুন নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করছে। অনলাইন শিক্ষার প্রসার ও ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষার গ্রহণযোগ্যতা তাদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করেছে।

উদ্যোক্তা মনোভাব: এই প্রজন্মের মধ্যে উদ্যোক্তা হওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে। তারা নিজেদের উদ্যোগে নতুন ব্যবসা শুরু করছে এবং নিজেদের স্বপ্ন পূরণের জন্য কাজ করছে। অনলাইন মার্কেটপ্লেস ও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম তাদের এই উদ্যোগকে সহজতর করেছে।

সামাজিক সচেতনতা: বাংলাদেশের জেনারেশন জেড সমাজের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। তারা নারীর অধিকার, শিশু শ্রম ও শিক্ষা বিস্তারে কাজ করছে। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে তারা সমাজের উন্নয়নে অবদান রাখছে।

সংস্কৃতি ও বিনোদন: বাংলাদেশের জেনারেশন জেড নিজেদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা করার পাশাপাশি পশ্চিমা ও আন্তর্জাতিক সংস্কৃতির সাথেও সংযোগ স্থাপন করছে। তারা বাংলা সংস্কৃতির প্রচার ও বিকাশে সোচ্চার। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সঙ্গীত, চলচ্চিত্র ও অন্যান্য বিনোদন মাধ্যমের সাথেও সম্পৃক্ত।

‘জেন-জি’দের পরিচয় prokritibarta

জেনারেশন জেডের প্রভাব

জেনারেশন জেড একটি শক্তিশালী প্রজন্ম, যারা ভবিষ্যতের সমাজকে রূপ দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। তাদের প্রযুক্তি, সামাজিক সচেতনতা ও উদ্যোক্তা মনোভাবের কারণে তারা ভবিষ্যতের নেতৃত্ব গ্রহণের জন্য প্রস্তুত। তাদের দ্বারা প্রভাবিত সমাজে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আসতে পারে। এই প্রজন্মের মূল চ্যালেঞ্জ হলো একদিকে দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তি ও অর্থনীতির সাথে মানিয়ে নেওয়া, অন্যদিকে সামাজিক ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা। তবে তাদের শক্তি ও ক্ষমতা এই চ্যালেঞ্জগুলোকে পরিণত করবে নতুন সুযোগে।

জনপ্রিয় সংবাদ

আশা জাগিয়ে শুরু কপ ৩০, মুকিত মজুমদার বাবুর প্রত্যাশা পূর্বের প্রতিশ্রুতিগুলোর বাস্তবায়ন   

প্রযুক্তি

‘জেন-জি’দের পরিচয়

আপডেট সময় ০৪:২৫:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৪

জেন জি বা জেনারেশন জেড, যাদেরকে জুমারস নামেও ডাকা হয়, তারা হলো এমন এক প্রজন্ম যারা ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছে। বর্তমান সময়ে তাদের বয়স ১২ থেকে ২৭ বছরের মধ্যে। এই প্রজন্মের মানুষদের জীবনে প্রযুক্তির প্রভাব অত্যন্ত গভীর। ডিজিটাল যুগে জন্ম নেওয়ার কারণে, তারা ইন্টারনেট, স্মার্টফোন ও সামাজিক মাধ্যমের সাথে বেড়ে উঠেছে, যা তাদের জীবনধারা ও দৃষ্টিভঙ্গিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।

জেনারেশন জেডের বৈশিষ্ট্য:

প্রযুক্তি-নির্ভরতা: জেনারেশন জেড প্রযুক্তির সাথে বেড়ে উঠেছে। তারা ইন্টারনেটকে জীবনের অপরিহার্য অংশ হিসেবে দেখেন। স্মার্টফোন, ট্যাবলেট ও কম্পিউটার তাদের প্রাত্যহিক জীবনের অপরিহার্য সরঞ্জাম। এই প্রজন্মের মানুষরা সোশ্যাল মিডিয়া, ইউটিউব ও অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিশ্বকে জানছে এবং শিখছে।

গ্লোবাল নাগরিকত্ব: জেনারেশন জেডের জন্য বিশ্ব এখন অনেক ছোট। তারা প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষের সাথে সংযোগ স্থাপন করছে ও বৈশ্বিক বিষয়াবলিতে গভীর আগ্রহ দেখাচ্ছে। এই প্রজন্মের মধ্যে অনেকেই বহুভাষিক ও বিভিন্ন সংস্কৃতি সম্পর্কে জ্ঞানী।

পরিবেশ সচেতনতা: জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়ে জেন-জিরা অত্যন্ত সচেতন। তারা পরিবেশ সংরক্ষণে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে আগ্রহী ও টেকসই উন্নয়নের জন্য জোর দিচ্ছে। গ্রেটা থানবার্গের মতো নেতারা এই প্রজন্মের মধ্যে পরিবেশ আন্দোলনের প্রতীক হয়ে উঠেছে।

সামাজিক ন্যায়বিচারের পক্ষে অবস্থান: এই প্রজন্মের মানুষরা সামাজিক ন্যায়বিচার, সমতা ও বৈচিত্র্যের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেয়। তারা জাতিগত সমতা ও লিঙ্গ বৈষম্যের মতো বিষয়গুলো নিয়ে সোচ্চার এবং সক্রিয়।

অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ: জেনারেশন জেডকে এমন এক সময়ে জীবনের মুখোমুখি হতে হচ্ছে যখন বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান। উচ্চতর শিক্ষার জন্য ঋণ, চাকরির অনিশ্চয়তা ও বর্ধিত জীবনের খরচ তাদের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে।

‘জেন-জি’দের পরিচয় prokritibarta

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে জেন-জি

বাংলাদেশে জেনারেশন জেড নতুন নতুন সুযোগ ও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। তারা দ্রুত পরিবর্তনশীল একটি বিশ্বে বেড়ে উঠছে, যেখানে প্রযুক্তি, অর্থনীতি ও সামাজিক পরিবর্তন একসাথে প্রভাব ফেলছে। সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ‘জেন-জি’ শব্দটি বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। কারণ এই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ও নেতৃত্ব দেওয়া বেশিরভাগই ছিলেন এই প্রজন্মের সদস্য।

শিক্ষা ও প্রযুক্তি: বাংলাদেশের জেনারেশন জেড প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের শিক্ষা ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে নতুন নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করছে। অনলাইন শিক্ষার প্রসার ও ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষার গ্রহণযোগ্যতা তাদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করেছে।

উদ্যোক্তা মনোভাব: এই প্রজন্মের মধ্যে উদ্যোক্তা হওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে। তারা নিজেদের উদ্যোগে নতুন ব্যবসা শুরু করছে এবং নিজেদের স্বপ্ন পূরণের জন্য কাজ করছে। অনলাইন মার্কেটপ্লেস ও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম তাদের এই উদ্যোগকে সহজতর করেছে।

সামাজিক সচেতনতা: বাংলাদেশের জেনারেশন জেড সমাজের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। তারা নারীর অধিকার, শিশু শ্রম ও শিক্ষা বিস্তারে কাজ করছে। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে তারা সমাজের উন্নয়নে অবদান রাখছে।

সংস্কৃতি ও বিনোদন: বাংলাদেশের জেনারেশন জেড নিজেদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা করার পাশাপাশি পশ্চিমা ও আন্তর্জাতিক সংস্কৃতির সাথেও সংযোগ স্থাপন করছে। তারা বাংলা সংস্কৃতির প্রচার ও বিকাশে সোচ্চার। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সঙ্গীত, চলচ্চিত্র ও অন্যান্য বিনোদন মাধ্যমের সাথেও সম্পৃক্ত।

‘জেন-জি’দের পরিচয় prokritibarta

জেনারেশন জেডের প্রভাব

জেনারেশন জেড একটি শক্তিশালী প্রজন্ম, যারা ভবিষ্যতের সমাজকে রূপ দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। তাদের প্রযুক্তি, সামাজিক সচেতনতা ও উদ্যোক্তা মনোভাবের কারণে তারা ভবিষ্যতের নেতৃত্ব গ্রহণের জন্য প্রস্তুত। তাদের দ্বারা প্রভাবিত সমাজে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আসতে পারে। এই প্রজন্মের মূল চ্যালেঞ্জ হলো একদিকে দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তি ও অর্থনীতির সাথে মানিয়ে নেওয়া, অন্যদিকে সামাজিক ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা। তবে তাদের শক্তি ও ক্ষমতা এই চ্যালেঞ্জগুলোকে পরিণত করবে নতুন সুযোগে।