কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন মার্ক কার্নি। আগামী কিছুদিনের মধ্যেই শপথ নেবেন তিনি। দেশটির বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর উত্তরসূরি হিসেবে স্থানীয় সময় রোববার তাঁকে নির্বাচিত করেছে ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টি।
নির্বাচিত হওয়ার পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রথম ভাষণে দেশটির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কারোপের সমালোচনা করেন মার্ক কার্নি। যুক্তরাষ্ট্র মুক্ত বাণিজ্যের প্রতিশ্রুতি না দিলে, মার্কিন পণ্যের ওপর প্রতিশোধমূলক শুল্কারোপ বহাল রাখার অঙ্গীকার করেন তিনি।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, কানাডায় আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রোববার দলের নতুন নেতা বেছে নিতে ভোটাভুটি করে লিবারেল পার্টি। এতে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৭৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন মার্ক কার্নি। পরে কানাডার পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করেন লিবারেল পার্টির প্রেসিডেন্ট সচিত মেহরা।
মেয়াদ
আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বিদায়ী দলীয় নেতা জাস্টিন ট্রুডোর কাছ থেকে কার্নি দায়িত্ব নেবেন। তবে তিনি হয়তো বেশিদিন এই দায়িত্ব পালন করবেন না।
কানাডায় অক্টোবরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, কার্নি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আগাম নির্বাচন ঘোষণা করতে পারেন। বর্তমান জরিপে কানাডায় ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির চেয়ে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে রয়েছে বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টি।
কে এই মার্ক কার্নি
উত্তর-পশ্চিম টেরিটরিজে জন্ম নেয়া এবং আলবার্টা প্রদেশে বেড়ে ওঠা কার্নি নিজেকে রাজনীতির বাইরের একজন হিসেবে উপস্থাপন করেছেন, যিনি অর্থনৈতিক অস্থিরতার সময় কানাডাকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারেন।
কার্নি হার্ভার্ড ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নিয়েছেন এবং বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাকসে এক দশকেরও বেশি সময় কাজ করেছেন।
তিনি ব্রুকফিল্ড অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন, যেখানে তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিনিয়োগের প্রচারণা চালিয়েছেন।
তবে, সংকটকালীন সময়ে ব্যাংকিং খাত পরিচালনার অভিজ্ঞতাকেই কার্নি ও তার সমর্থকেরা তার সবচেয়ে বড় যোগ্যতা হিসেবে তুলে ধরছেন।
২০০৮ সালের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার সময় তিনি ব্যাংক অব কানাডার গভর্নর ছিলেন এবং তাৎক্ষণিক ও কার্যকর সিদ্ধান্তের মাধ্যমে কানাডাকে বড় ধরনের অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করেন।
২০১৩ সালে তিনি ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেন এবং ২০২০ সালে যুক্তরাজ্য আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া পর্যন্ত ওই পদে ছিলেন।
অর্থনৈতিক বিষয়ে তার দক্ষতা অস্বীকার করার মতো নয়, তবে নির্বাচনের রাজনীতিতে তার কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই, যা অনেকের উদ্বেগের কারণ। কার্নি এর আগে জাস্টিন ট্রুডোর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন।