ডায়েট নয় উপবাসেই সুস্থতার রহস্য” – এই ধারণাটি মূলত ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ (Intermittent Fasting – IF) সবিরাম উপবাসের মতো পদ্ধতিগুলির জনপ্রিয়তা থেকে এসেছে। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে, নির্দিষ্ট সময় ধরে উপবাস বা না খেয়ে থাকা শরীরের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপকার বয়ে আনতে পারে। মানবদেহে রয়েছে এক অবিশ্বাস্য প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। যা ক্ষুধার সময় সক্রিয় হয়ে ওঠে। খাবার না পেলে শরীরে শুরু হয় এক অনন্য প্রক্রিয়া অটোফ্যাগি (Autophagy)। যার অর্থই হলো নিজেকে খাওয়া। এই প্রক্রিয়ায় শরীর নিজেই অসুস্থ, ক্ষতিগ্রস্ত ও বয়স্ক কোষগুলোকে ধ্বংস করে ফেলে এবং তাদের পরিবর্তে নতুন সুস্থ কোষ তৈরি করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অটোফ্যাগি মানবদেহের স্বাস্থ্যের ভারসাম্য রক্ষা, আয়ু বৃদ্ধি এবং স্নায়বিক রোগ, সংক্রমণ এমনকি কিছু ধরনের ক্যানসার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়ন্ত্রিত উপবাস বা ক্যালরি সীমাবদ্ধতা অটোফ্যাগি প্রক্রিয়াকে সক্রিয় করে তোলে। এতে শরীর কোষীয় স্তরে নিজেকে মেরামত করার সুযোগ পায়। অভ্যন্তরীণভাবে পরিষ্কার হয়, শক্তি বাড়ে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দেহের এই প্রাকৃতিক ‘সেল ক্লিনিং’ সিস্টেমকে কাজে লাগানো ভবিষ্যতে প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা ও পুনর্জননবিদ্যায় বিপ্লব ঘটাতে পারে।
মানবদেহের এই গোপন পরিশোধন প্রক্রিয়া আমাদের শেখায়—নিজের শরীরের ছন্দকে সম্মান জানিয়ে মাঝে মাঝে তাকে বিশ্রাম ও উপবাসের সুযোগ দেওয়া। যাতে দেহ নিজেই নিজেকে সুস্থ করে তুলতে পারে এবং জীবনকাল বাড়াতে পারে।
তবে মনে রাখা জরুরি, ডায়েটিং (সুষম এবং নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস) এবং উপবাসের মধ্যে পার্থক্য আছে। উপবাসের মাধ্যমে সুস্থতা লাভ করতে হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া এবং শরীরের প্রয়োজন অনুসারে একটি নিরাপদ ও সুষম উপায়ে করা উচিত। সবার জন্য এটি উপযুক্ত নাও হতে পারে, বিশেষ করে যাদের গ্যাস্ট্রিক বা আলসারের মতো স্বাস্থ্য সমস্যা আছে।
প্রকৃতিবার্তা ডেস্ক 




















