সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ভারত-পাকিস্তানে একরাতের ব্যবধানে বোমা হামলা: দিল্লিতে নিহত ৯, ইসলামাবাদে নিহত ১২ Logo রাতের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে Logo সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ বাড়ল সাড়ে তিন মাস Logo দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হজ পালনের অনুমতি দিবে না সৌদি সরকার Logo নদী গিলে নিচ্ছে জমি: ভাঙনের সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তহীন লড়াই Logo ময়মনসিংহে বাসে আগুন, দগ্ধ হয়ে চালকের মৃত্যু Logo টাঙ্গুয়ার, হাকালুকি হাওরে সুরক্ষা আদেশ জারি: উচ্চস্বরে গান-বাজনা, পার্টি করা যাবে না Logo জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ১৮টি প্রকল্প অনুমোদন: উপকূল, পাহাড়ে বাড়লো নিরাপদ পানির আশা     Logo কপ ৩০: জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় এবারের সম্মেলন খুঁজবে দুটি জরুরি প্রশ্নের উত্তর Logo বয়স চল্লিশের পর সকালের নাস্তা কেমন হবে
ঢাকা জেলার প্রকৃতি ও জীবন ক্লাব-এর মতবিনিময় সভা

ঢাকার পরিবেশ-জীববৈচিত্র্য রক্ষায় নগরবাসীদের হাতে হাত রেখে কাজ করার আহ্বান

দেশব্যাপী প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন। দেশের ব্যতিক্রমী এই কর্মযজ্ঞকে আরও সক্রিয় করতে, প্রকৃতিপ্রেমীদের নিয়ে ২০২২ সালের ৫ জুন থেকে যাত্রা শুরু করে প্রকৃতি ও জীবন ক্লাব। এখন দেশের সব জেলায় এই ক্লাবের সদস্যরা বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি থেকে শুরু করে দূষণমুক্তকরণ, পরিচ্ছন্নতা ও প্রচারাভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। এবার পরিবেশ-জীববৈচিত্র্য হারাতে বসা ঢাকায় আরও সক্রিয় ও সম্মিলিতভাবে কাজ করার প্রত্যয়ে হয়ে গেল ঢাকা জেলার প্রকৃতি ও জীবন ক্লাব-এর পরিচিতি ও মতবিনিময় সভা।

শনিবার (১০ মে) চ্যানেল আইয়ের ছাদবারান্দায় আয়োজিত এই সভায় ঢাকা জেলার নানা প্রান্ত থেকে আসেন সদস্যরা। তাদের কেউ শিক্ষক, কেউ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, কেউ সংগঠক আবার কেউ শিক্ষার্থী।

সভায় আগতদের প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে শুরুতেই দেখানো হয় একটি তথ্যচিত্র। যেখানে দেশ-বিদেশে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের পথচলার খণ্ডচিত্র দেখতে পান ঢাকার প্রকৃতি ও জীবন ক্লাবের সদস্যরা।

সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মুকিত মজুমদার বাবু।

পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষার কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ঢাকা শহর থেকে গাছ বলতে গেলে হারিয়ে গেছে। আমরা ইট-পাথরের এক জঞ্জাল শহরে বসবাস করছি। আমরা বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, মাটিদূষণে জর্জরিত। আমরাই দূষণ করছি, আবার আমরা দূষণ থেকে পরিত্রাণ চাইছি! কিন্তু আমি যদি সচেতন না হই, আমাদের আশপাশে যারা আছেন তাদের যদি সচেতন না করি তাহলে এসব দূষণতো কখনোই কমবে না।’

অন্যরা করবে এই ভরসায় না থেকে সচেতনদের নিজ থেকে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রকৃতিবন্ধু বলেন, ‘পরিবেশ-জীববৈচিত্র্য রক্ষার কাজটা করবে কে? কাউকে না কাউকে কাজটা করতে হবে। আর এই কারণেই আমাদের এই ক্লাব। সুতরাং আসুন আমরা সবাই হাতে হাত মিলিয়ে সেই ৭১ এর মতো এবার পরিবেশ ভালো রাখার জন্য একসাথে ঝাঁপিয়ে পড়ি।’

এই বক্তব্যের পর শুরু হয় সদস্যদের মতামত, প্রশ্ন ও পরামর্শের পর্ব।

ধানমণ্ডি থেকে সভায় আসা প্রকৃতি ও জীবন ক্লাবের এক সদস্য ধানমণ্ডি লেক পরিচ্ছন্ন করার প্রস্তাব দেন। রাজধানীর পূর্বাচল এলাকায় জীববৈচিত্র্য রক্ষা, বিশেষ করে পাখির জন্য উপযোগী বৃক্ষ রাখা, সবুজায়নের আহ্বান জানান আরেকজন সদস্য।

ঢাকার স্বনামধন্য একটি স্কুলের শিক্ষক পুরান ঢাকার বানর রক্ষায় কোনো ব্যবস্থা নেয়া যায় কিনা সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

জবাবে মুকিত মজুমদার বাবু বলেন, প্রকৃতি ও জীবন ক্লাব ঢাকার সদস্যরা নিজ নিজ এলাকায় যেকোনো পরিবেশ রক্ষা বিষয়ক সচেতনতা, পরিচ্ছন্নতা অভিযানের আয়োজন করলে তাদের পাশে থাকবে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন।

পুরান ঢাকার বানরদের সংরক্ষণ বিষয়ে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম ম্যানেজার শামীম আহমেদ বলেন, ‘শুধু পুরান ঢাকায় না, বাংলাদেশের অনেক জায়গায় মানুষ ও বানর একসাথে বসবাস করে। আসলে বানর আমাদের জায়গায় থাকে না, আমরা তাদের আদি নিবাস দখলে নিয়ে তাদের চাপে ফেলেছি। এই অবস্থায় সংকটে পড়া প্রাণীদের সংরক্ষণে বাংলাদেশ বন বিভাগ রয়েছে। আমরা প্রকৃতি ও জীবন ক্লাব থেকে যেটা করতে পারি সেটা হলো বন বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সমাধান বের করা।’

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত চলা এই সভায় প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের নতুন উদ্যোগ ‘প্রকৃতি ও জীবন মিউজিক ক্লাব’ এর সঙ্গে আগতদের পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। গানে গানে প্রকৃতির কথা বলা এবং বাংলার হারিয়ে যেতে বসা গান, মাটির সুর ধরে রাখতেই এই উদ্যোগ বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

সভা শেষের আকর্ষণ ছিল র‍্যাফেল ড্র। এই পর্বে প্রকৃতি ও জীবন ক্লাব ঢাকার সদস্য- মোহাম্মদ আব্দুল হাই, লায়ন মোহাম্মদ আব্দুল বাশার এবং মোহাম্মদ হিবজুর রহমান, এই ৩ জনের হাতে তুলে দেয়া হয় আকর্ষণীয় উপহার।

আপলোডকারীর তথ্য

Shuvo

জনপ্রিয় সংবাদ

ভারত-পাকিস্তানে একরাতের ব্যবধানে বোমা হামলা: দিল্লিতে নিহত ৯, ইসলামাবাদে নিহত ১২

ঢাকা জেলার প্রকৃতি ও জীবন ক্লাব-এর মতবিনিময় সভা

ঢাকার পরিবেশ-জীববৈচিত্র্য রক্ষায় নগরবাসীদের হাতে হাত রেখে কাজ করার আহ্বান

আপডেট সময় ০১:৫৭:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

দেশব্যাপী প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন। দেশের ব্যতিক্রমী এই কর্মযজ্ঞকে আরও সক্রিয় করতে, প্রকৃতিপ্রেমীদের নিয়ে ২০২২ সালের ৫ জুন থেকে যাত্রা শুরু করে প্রকৃতি ও জীবন ক্লাব। এখন দেশের সব জেলায় এই ক্লাবের সদস্যরা বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি থেকে শুরু করে দূষণমুক্তকরণ, পরিচ্ছন্নতা ও প্রচারাভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। এবার পরিবেশ-জীববৈচিত্র্য হারাতে বসা ঢাকায় আরও সক্রিয় ও সম্মিলিতভাবে কাজ করার প্রত্যয়ে হয়ে গেল ঢাকা জেলার প্রকৃতি ও জীবন ক্লাব-এর পরিচিতি ও মতবিনিময় সভা।

শনিবার (১০ মে) চ্যানেল আইয়ের ছাদবারান্দায় আয়োজিত এই সভায় ঢাকা জেলার নানা প্রান্ত থেকে আসেন সদস্যরা। তাদের কেউ শিক্ষক, কেউ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, কেউ সংগঠক আবার কেউ শিক্ষার্থী।

সভায় আগতদের প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে শুরুতেই দেখানো হয় একটি তথ্যচিত্র। যেখানে দেশ-বিদেশে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের পথচলার খণ্ডচিত্র দেখতে পান ঢাকার প্রকৃতি ও জীবন ক্লাবের সদস্যরা।

সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মুকিত মজুমদার বাবু।

পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষার কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ঢাকা শহর থেকে গাছ বলতে গেলে হারিয়ে গেছে। আমরা ইট-পাথরের এক জঞ্জাল শহরে বসবাস করছি। আমরা বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, মাটিদূষণে জর্জরিত। আমরাই দূষণ করছি, আবার আমরা দূষণ থেকে পরিত্রাণ চাইছি! কিন্তু আমি যদি সচেতন না হই, আমাদের আশপাশে যারা আছেন তাদের যদি সচেতন না করি তাহলে এসব দূষণতো কখনোই কমবে না।’

অন্যরা করবে এই ভরসায় না থেকে সচেতনদের নিজ থেকে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রকৃতিবন্ধু বলেন, ‘পরিবেশ-জীববৈচিত্র্য রক্ষার কাজটা করবে কে? কাউকে না কাউকে কাজটা করতে হবে। আর এই কারণেই আমাদের এই ক্লাব। সুতরাং আসুন আমরা সবাই হাতে হাত মিলিয়ে সেই ৭১ এর মতো এবার পরিবেশ ভালো রাখার জন্য একসাথে ঝাঁপিয়ে পড়ি।’

এই বক্তব্যের পর শুরু হয় সদস্যদের মতামত, প্রশ্ন ও পরামর্শের পর্ব।

ধানমণ্ডি থেকে সভায় আসা প্রকৃতি ও জীবন ক্লাবের এক সদস্য ধানমণ্ডি লেক পরিচ্ছন্ন করার প্রস্তাব দেন। রাজধানীর পূর্বাচল এলাকায় জীববৈচিত্র্য রক্ষা, বিশেষ করে পাখির জন্য উপযোগী বৃক্ষ রাখা, সবুজায়নের আহ্বান জানান আরেকজন সদস্য।

ঢাকার স্বনামধন্য একটি স্কুলের শিক্ষক পুরান ঢাকার বানর রক্ষায় কোনো ব্যবস্থা নেয়া যায় কিনা সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

জবাবে মুকিত মজুমদার বাবু বলেন, প্রকৃতি ও জীবন ক্লাব ঢাকার সদস্যরা নিজ নিজ এলাকায় যেকোনো পরিবেশ রক্ষা বিষয়ক সচেতনতা, পরিচ্ছন্নতা অভিযানের আয়োজন করলে তাদের পাশে থাকবে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন।

পুরান ঢাকার বানরদের সংরক্ষণ বিষয়ে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম ম্যানেজার শামীম আহমেদ বলেন, ‘শুধু পুরান ঢাকায় না, বাংলাদেশের অনেক জায়গায় মানুষ ও বানর একসাথে বসবাস করে। আসলে বানর আমাদের জায়গায় থাকে না, আমরা তাদের আদি নিবাস দখলে নিয়ে তাদের চাপে ফেলেছি। এই অবস্থায় সংকটে পড়া প্রাণীদের সংরক্ষণে বাংলাদেশ বন বিভাগ রয়েছে। আমরা প্রকৃতি ও জীবন ক্লাব থেকে যেটা করতে পারি সেটা হলো বন বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সমাধান বের করা।’

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত চলা এই সভায় প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের নতুন উদ্যোগ ‘প্রকৃতি ও জীবন মিউজিক ক্লাব’ এর সঙ্গে আগতদের পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। গানে গানে প্রকৃতির কথা বলা এবং বাংলার হারিয়ে যেতে বসা গান, মাটির সুর ধরে রাখতেই এই উদ্যোগ বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

সভা শেষের আকর্ষণ ছিল র‍্যাফেল ড্র। এই পর্বে প্রকৃতি ও জীবন ক্লাব ঢাকার সদস্য- মোহাম্মদ আব্দুল হাই, লায়ন মোহাম্মদ আব্দুল বাশার এবং মোহাম্মদ হিবজুর রহমান, এই ৩ জনের হাতে তুলে দেয়া হয় আকর্ষণীয় উপহার।