সেপ্টেম্বর ২০০৬, সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন থাইল্যান্ডের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা। এরপর থাকসিনের বোন ইংলাক ২০১১ সালে বিপুল ভোটে জিতে থাইল্যান্ডের ক্ষমতায় আসেন। কিন্তু পরে তাকেও অযোগ্য ঘোষণা করেছিলো আদালত। তার সরকার দ্বিতীয় অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলো। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী এখনও নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন। তবে শেষ পর্যন্ত সিনাওয়াত্রা পরিবার যে থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে গুরুত্ব হারায়নি সেটাই আরেকবার প্রমাণিত হলো। সদ্যই থাই প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্তের পর নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন থাকসিনের মেয়ে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা। তাকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করেছে দেশটির পার্লামেন্ট।
৩৭ বছর বয়সী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা হবেন দেশটির সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী। এর আগে তার ফুফু ইংলাক সিনাওয়াত্রা থাইল্যান্ডের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
গত বুধবার থাইল্যান্ডের সাংবিধানিক আদালত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্রেথা থাভিসিনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ার দু’দিন পর তাকে নিয়োগ দেওয়া হল। তাদের দু’জনেই ফেউ থাই পার্টির নেতা। ২০২৩ সালের নির্বাচনে ফেউ থাই পার্টি দ্বিতীয় হয়েছিলো এবং একটি ক্ষমতাসীন জোট গঠন করেছিলো।
পেতংতার্ন এখন থাইল্যান্ডের স্থবির অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার মতো কঠিন কাজের মুখোমুখি হবেন। সামরিক অভ্যুত্থান সামাল দেওয়া এবং আদালতের হস্তক্ষেপ এড়িয়ে টিকে থাকাটাও তার জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জের বিষয়। আদালতের হস্তক্ষেপের কারণে তার দলের নেতৃত্বে পূর্ববর্তী চারটি প্রশাসন ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে।
গত শুক্রবার পার্লামেন্টে ভোটে জিতে পেতংতার্ন বলেন, ‘আমি সত্যিই আশা করি যে আমি মানুষের মাঝে আত্মবিশ্বাস পুনঃস্থাপন করে দিতে পারবো–থাই জনগণের জীবনমানের উন্নয়নে আমরা সুযোগ তৈরি করতে পারি। আমার একটি দৃঢ় ইচ্ছা আছে এবং আমার একটি ভালো দল আছে। আমার দল মজবুত, অভিজ্ঞ, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং আমরা সকলে একই ধারণা পোষণ করি। এগুলো আসলে এমন কিছু, যা আমার কাছে খুব মূল্যবান।’

এদিকে কন্যা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পরদিন রাজকীয় ক্ষমা পেয়েছেন থাকসিন সিনাওয়াত্রা। ২০০৬ সালে ক্ষমতা হারানোর দুই বছর পর কারাগারে যাওয়া এড়াতে থাকসিন নির্বাসনে চলে গিয়েছিলেন। গত বছরের অগাস্টে নাটকীয়ভাবে দেশে ফেরেন তিনি। দেশে ফেরার পর বিমানবন্দর থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে নিয়ে হাজির করে পুলিশ। আদালত ক্ষমতার অপব্যবহার ও অন্যান্য অভিযোগে তাকে আট বছরের কারাদণ্ড দেয়।
কারাগারে প্রথমদিনই অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ব্যাংককের পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। স্বাস্থ্যগত কারণে এই হাসপাতালে ছয় মাস আটক ছিলেন তিনি। তারপর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্যারলে মুক্তি পান তিনি।
গত সেপ্টেম্বরেই তার সাজার মেয়াদ কমিয়ে এক বছর করেছিলেন রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন। গত মাসে রাজার জন্মদিন উপলক্ষ্যে যে বন্দিদের রাজকীয় ক্ষমা করা হয়েছে তাদের মধ্যে থাকসিনও আছেন বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন তার আইনজীবী।
ডেস্ক রিপোর্ট 























