ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জোহরান মামদানি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির ১১১তম মেয়র নির্বাচিত হয়ছেন। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে জোহরান মামদানি নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর ও স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমো এবং রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়াকে পরাজিত করে ইতিহাস গড়লেন।
খবর দ্য গার্ডিয়ান ও নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়, এ জয়ের মধ্য দিয়ে মামদানি নিউইয়র্ক শহরের প্রথম মুসলিম মেয়র হলেন। ৩৪ বছর বয়সী এই বিজয়ী গত এক শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে কনিষ্ঠ মেয়রও।
এনবিসি নিউজের পূর্বাভাস অনুযায়ী, প্রগতিশীল ভোটারদের উজ্জীবিত করে এবং দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে মামদানি এই ঐতিহাসিক জয় ছিনিয়ে নেন। তার বিজয়ে উল্লসিত প্রগতিশীল শিবির, তবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রিপাবলিকান নেতারা এবং কিছু মধ্যপন্থী ডেমোক্র্যাট।

নিউইয়র্কের ১১১তম মেয়র হিসেবে শপথ নিতে যাওয়া মামদানি মাত্র এক বছর আগেও ছিলেন তুলনামূলক অখ্যাত এক স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান। অল্প সময়ের ব্যবধানে তিনি নিউইয়র্কের রাজনীতির কেন্দ্রে উঠে এসেছেন এবং প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারগুলোর প্রার্থীদের পরপর দুটি নির্বাচনে পরাজিত করেছেন।
তার বিজয়ে অনেকেই বলছেন, এটি শুধু নিউইয়র্ক নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রগতিশীল রাজনীতির নতুন এক অধ্যায় সূচনা করেছে। এখন তার সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সিটি প্রশাসনের বিশাল কাঠামো সামলানো, উচ্চাভিলাষী নীতিমালা বাস্তবায়ন করা এবং ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতর ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা।
মামদানি নির্বাচনী প্রচারণায় জীবনযাত্রার ব্যয় সংকট, আবাসন সমস্যা এবং গণপরিবহন সংস্কারকে মুখ্য ইস্যু হিসেবে তুলে ধরেন। তার ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ভাড়া নিয়ন্ত্রিত ফ্ল্যাটে ভাড়া বৃদ্ধিতে স্থগিতাদেশ, সার্বজনীন শিশুসেবা, বিনামূল্যে বাস চলাচল ব্যবস্থা এবং সিটি করপোরেশন পরিচালিত মুদি দোকান চালুর পরিকল্পনা।

কুইন্সে নির্বাচনের আগ মুহূর্তে এক সমাবেশে মামদানি বলেন, যখন আমি প্রচারণা শুরু করি, তখন সেখানে কোনো টেলিভিশন ক্যামেরা ছিল না। ফেব্রুয়ারিতেও আমাদের সমর্থন ছিল মাত্র এক শতাংশ। কিন্তু নিউইয়র্কের সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করেছে যে পরিবর্তন সম্ভব।
এদিকে মামদানির এই ঐতিহাসিক জয় অনেক ডেমোক্র্যাটকে উদ্দীপ্ত করেছে, তবে তার সামনে এখনও অনেক প্রশ্ন ও চ্যালেঞ্জ রয়েছে—বিশেষ করে তিনি কতটা বাস্তবায়ন করতে পারবেন তার উচ্চাভিলাষী প্রগতিশীল কর্মসূচি। ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউজের সঙ্গে কতটা কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে পারবেন—তা নিয়েই এখন মূল আগ্রহ।
প্রকৃতিবার্তা ডেস্ক 



















