সংবাদ শিরোনাম ::
Logo প্রকৃতির প্রতিশোধ: সংকটে জীববৈচিত্র্য Logo লঘুচাপ, ঘূর্ণিঝড়ের গুঞ্জন! কেমন যেতে পারে মাসের শেষ দিনগুলো, যা বলছে আবহাওয়ার পূর্বাভাস Logo প্রশাসনিক সমন্বয় ও সংস্কার ছাড়া পরিবেশ সংরক্ষণ সম্ভব নয় : পরিবেশ উপদেষ্টা Logo বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটা বাতিল Logo প্রকৃতির সঙ্গে সুর মিলিয়ে চলার বার্তা নিয়ে এবছরের আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস Logo জাতীয় নির্বাচন, ‘মানবিক করিডোর’, মব সহিংসতা নিয়ে যা বললেন সেনাপ্রধান Logo রিট খারিজ, মেয়র হিসেবে ইশরাককে শপথ পড়ানোর বাধা নেই Logo প্রাক বর্ষায় রাজধানীসহ নানাস্থানে মাঝারি-ভারী বৃষ্টি Logo শিল্পে বিনামূল্যে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন বন্ধে নীতিমালা চূড়ান্ত হচ্ছে : রিজওয়ানা হাসান Logo শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন শপথবাক্য পাঠ করানোর নির্দেশ

পদত্যাগ করছেন ট্রুডো! কিন্তু কেন?  

পদত্যাগ করছেন ট্রুডো! কিন্তু কেন?  

পদত্যাগের কথা ভাবছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তার এই ভাবনার সম্পর্কে অবগত একটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছে।

দেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরেই কোণঠাসা কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। বিরোধীদের পাশাপাশি দলের মধ্যে থেকেই উঠছে পদত্যাগের দাবি।

আর তখনি বার্তাসংস্থাটি বলছে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সোমবারের মধ্যে লিবারেল পার্টির নেতা হিসেবে পদত্যাগের কথা ঘোষণা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। সম্ভবত বুধবার অনুষ্ঠিতব্য প্রধান একটি জাতীয় ককাস বৈঠকের আগেই তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেবেন।

তবে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এই বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি। এদিকে ট্রুডো এখনই তার পদ ছেড়ে চলে যাবেন নাকি নতুন নেতা নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকবেন সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়।

রয়টার্স বলছে, ট্রুডোর সম্ভাব্য এই পদত্যাগের ফলে দেশটির ক্ষমতাসীন এই দলটিকে এমন এক সময়ে স্থায়ী প্রধান ছাড়াই রাজনৈতিক ময়দানে ছেড়ে দেবে। এখন জরিপগুলোতেও দেখা যাচ্ছে যে- চলতি বছরের অক্টোবরের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হতে হওয়া নির্বাচনে লিবারেলরা রক্ষণশীলদের কাছে খারাপভাবে হেরে যাবে। তবে ট্রুডোর পদত্যাগের ফলে নতুন সরকার গঠনের জন্য দ্রুত নির্বাচনের আহ্বান জানানোরও সম্ভাবনা রয়েছে।

কেন পদত্যাগের দাবি জোরালো হলো? 

কানাডার প্রধান তিনটি বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি, এনডিপি এবং ব্লক ক্যুইবেক জানিয়ে দিয়েছে, তারা আর জাস্টিন ট্রুডোকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সমর্থন করে না। ২০২১ সালের সর্বশেষ সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর লিবারেল পার্টি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি।

সেই নির্বাচনের পর থেকে তাকে এনডিপির সমর্থন নিয়ে সরকার চালাতে হচ্ছে। অন্যদিকে জাস্টিন ট্রুডোর দলের প্রায় ৫০ জন পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি) জানিয়ে দিয়েছেন, তারা তাকে আর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নেবেন না।

তার জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ার মূল কারণ হিসেবে যেগুলো এখন ধরা হচ্ছে, তা হলো—

দ্রব্যমূল্য: তার শাসন আমলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ছিল চরম। প্রায় ৩০ থেকে ৫০ ভাগ বেড়ে গেছে সবকিছুর দাম। যে হারে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে, মানুষের আয় সে হারে বাড়েনি।

আবাসন সংকট: তিনি ক্ষমতা গ্রহণের পর বাড়িভাড়া বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে, বাড়ির দামও বেড়ে হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ, যার ফলে সাধারণ মানুষের বাড়িভাড়া দিয়ে থাকা কিংবা বাড়ি কেনা একেবারে অসম্ভব হয়ে গেছে। যে হারে মানুষ বেড়েছে, তার চেয়ে কম বাড়ি তৈরি হয়েছে। এর ফলে দেখা দিয়েছে বাসস্থানসংকট।

অতি উদারতায় শরণার্থী বোঝা: অত্যাধিক মানবতা দেখাতে গিয়ে জাস্টিন ট্রুডো সিরিয়া, ইউক্রেন, আফগানিস্তান, ইরান, ফিলিস্তিনসহ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে প্রচুর পরিমাণ শরণার্থী নিয়ে এসেছেন। তারা কানাডায় আসার পর কানাডার ইকোনোমিতে তেমন কোনো অবদান রাখছেন না। উল্টো সরকারি বিভিন্ন সাহায্য–সহযোগিতার ওপর নির্ভর করে দিন কাটাচ্ছেন।

বেকারত্ব চরমে: বেকারের সংখ্যা কানাডায় এখন দিন দিন বাড়ছে। এ মুহূর্তে কানাডায় বেকারত্বের হার ৬ দশমিক ৮ শতাংশ, যা কোভিডের পর কানাডার স্মরণকালের সর্বোচ্চ বেকারত্বের হার। সারা দেশের বেকারত্বের হার ৬ দশমিক ৮ শতাংশ হলেও বড় বড় শহরগুলো যেমন টরন্টো, মন্ট্রিয়লসহ বড় শহরে বেকারত্বের হার আরও বেশি।

নিজে না খেয়ে ইউক্রেন!:  জাস্টিন ট্রুডো তার নিজের দেশের জনগণের কথা চিন্তা না করে তার মিত্রদেশের কথা শুনে প্রচুর পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছেন ইউক্রেনে। এখন পর্যন্ত তিনি ইউক্রেন যুদ্ধে ১৯ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছেন। এত বিশাল অঙ্কের ঘাটতি মেটাতে তাঁকে জনগণের ওপর বিভিন্ন ধরনের ট্যাক্স বসাতে হয়েছে, যা সাধারণ জনগণ মেনে নিচ্ছেন না।

হিতে বিপরীত ভিসানীতি: কোভিডের পর তিনি অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য কানাডার ভিসানীতিতে দুটি নতুন পথ বেছে নেন। প্রথম পথ, একেবারে গণহারে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষকে ভিজিট ভিসায় কানাডায় নিয়ে আসা। তার সরকার ভেবেছিল, এই মানুষগুলো কানাডায় এসে কিছুদিন থেকে অর্থনীতিতে অবদান রেখে চলে যাবেন। কিন্তু এর ফল হয়েছে উল্টো। মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে ভিজিট ভিসায় কানাডায় এসে অ্যাসাইলাম (আশ্রয়প্রার্থী) দাবি করেছেন।

কানাডার নিয়ম অনুযায়ী, এ দেশে এসে যে কেউ অ্যাসাইলাম দাবি করতে পারেন এবং সরকারের ‘প্রোটেকটিভ পার্সন’ হিসেবে সরকার তাকে মাসিক নিয়মিত ভাতা, চিকিৎসা সুবিধা, সন্তানদের ১২ ক্লাস পর্যন্ত বিনা মূল্যে পড়াশোনা–সুবিধা দিতে বাধ্য। যারা অ্যাসাইলাম দাবি করেছেন, তাদের অধিকাংশই এখন পর্যন্ত ওয়ার্ক পারমিট থাকা সত্ত্বেও কোনো কাজে ঢোকেননি।

দ্বিতীয় পথটি হচ্ছে অর্থনীতিকে চাঙা করতে প্রচুর পরিমাণে বিদেশি শিক্ষার্থী (ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট) কানাডাতে নিয়ে আসা হয়েছে। এসব শিক্ষার্থী পড়াশোনা শেষে পিআরের জন্য অর্থাৎ কানাডার স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার জন্য কোনোভাবেই এলিজিবল হচ্ছেন না। এর ফলে তারাও পড়াশোনা শেষে নিজ দেশে ফিরে না গিয়ে সরকারের কাছে অ্যাসাইলাম (আশ্রয়) দাবি করেছেন।

এই যখন অবস্থা তখন ট্রুডোর ও কানাডার জন্য মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে উঠেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনে বিজয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প জয় লাভ করার পর কানাডিয়ান ডলারের দ্রুত দরপতন হয় আমেরিকান ডলারের বিপরীতে। কয়েক দিন ধরে ১ কানাডিয়ান ডলারের বিনিময়ে ৬৯ থেকে ৭০ সেন্ট পাওয়া যাচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণ করার সঙ্গে সঙ্গে এ বিনিময় হার আরও কমে যাবে বলে অর্থনীতিবিদেরা আশঙ্কা করছেন। প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ কানাডা এখন আর জাস্টিন টুডোর হাতে নিরাপদ নয় বলে মনে করছেন অধিকাংশ কানাডিয়ান।

অতএব সুদর্শন-স্মার্ট উদার নেতা জাস্টিন ট্রুডোকে সম্ভবত বিদায় নিতে হচ্ছে।

আপলোডকারীর তথ্য

Shuvo

প্রকৃতির প্রতিশোধ: সংকটে জীববৈচিত্র্য

পদত্যাগ করছেন ট্রুডো! কিন্তু কেন?  

আপডেট সময় ১২:৫১:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫

পদত্যাগের কথা ভাবছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তার এই ভাবনার সম্পর্কে অবগত একটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছে।

দেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরেই কোণঠাসা কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। বিরোধীদের পাশাপাশি দলের মধ্যে থেকেই উঠছে পদত্যাগের দাবি।

আর তখনি বার্তাসংস্থাটি বলছে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সোমবারের মধ্যে লিবারেল পার্টির নেতা হিসেবে পদত্যাগের কথা ঘোষণা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। সম্ভবত বুধবার অনুষ্ঠিতব্য প্রধান একটি জাতীয় ককাস বৈঠকের আগেই তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেবেন।

তবে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এই বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি। এদিকে ট্রুডো এখনই তার পদ ছেড়ে চলে যাবেন নাকি নতুন নেতা নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকবেন সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়।

রয়টার্স বলছে, ট্রুডোর সম্ভাব্য এই পদত্যাগের ফলে দেশটির ক্ষমতাসীন এই দলটিকে এমন এক সময়ে স্থায়ী প্রধান ছাড়াই রাজনৈতিক ময়দানে ছেড়ে দেবে। এখন জরিপগুলোতেও দেখা যাচ্ছে যে- চলতি বছরের অক্টোবরের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হতে হওয়া নির্বাচনে লিবারেলরা রক্ষণশীলদের কাছে খারাপভাবে হেরে যাবে। তবে ট্রুডোর পদত্যাগের ফলে নতুন সরকার গঠনের জন্য দ্রুত নির্বাচনের আহ্বান জানানোরও সম্ভাবনা রয়েছে।

কেন পদত্যাগের দাবি জোরালো হলো? 

কানাডার প্রধান তিনটি বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি, এনডিপি এবং ব্লক ক্যুইবেক জানিয়ে দিয়েছে, তারা আর জাস্টিন ট্রুডোকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সমর্থন করে না। ২০২১ সালের সর্বশেষ সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর লিবারেল পার্টি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি।

সেই নির্বাচনের পর থেকে তাকে এনডিপির সমর্থন নিয়ে সরকার চালাতে হচ্ছে। অন্যদিকে জাস্টিন ট্রুডোর দলের প্রায় ৫০ জন পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি) জানিয়ে দিয়েছেন, তারা তাকে আর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নেবেন না।

তার জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ার মূল কারণ হিসেবে যেগুলো এখন ধরা হচ্ছে, তা হলো—

দ্রব্যমূল্য: তার শাসন আমলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ছিল চরম। প্রায় ৩০ থেকে ৫০ ভাগ বেড়ে গেছে সবকিছুর দাম। যে হারে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে, মানুষের আয় সে হারে বাড়েনি।

আবাসন সংকট: তিনি ক্ষমতা গ্রহণের পর বাড়িভাড়া বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে, বাড়ির দামও বেড়ে হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ, যার ফলে সাধারণ মানুষের বাড়িভাড়া দিয়ে থাকা কিংবা বাড়ি কেনা একেবারে অসম্ভব হয়ে গেছে। যে হারে মানুষ বেড়েছে, তার চেয়ে কম বাড়ি তৈরি হয়েছে। এর ফলে দেখা দিয়েছে বাসস্থানসংকট।

অতি উদারতায় শরণার্থী বোঝা: অত্যাধিক মানবতা দেখাতে গিয়ে জাস্টিন ট্রুডো সিরিয়া, ইউক্রেন, আফগানিস্তান, ইরান, ফিলিস্তিনসহ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে প্রচুর পরিমাণ শরণার্থী নিয়ে এসেছেন। তারা কানাডায় আসার পর কানাডার ইকোনোমিতে তেমন কোনো অবদান রাখছেন না। উল্টো সরকারি বিভিন্ন সাহায্য–সহযোগিতার ওপর নির্ভর করে দিন কাটাচ্ছেন।

বেকারত্ব চরমে: বেকারের সংখ্যা কানাডায় এখন দিন দিন বাড়ছে। এ মুহূর্তে কানাডায় বেকারত্বের হার ৬ দশমিক ৮ শতাংশ, যা কোভিডের পর কানাডার স্মরণকালের সর্বোচ্চ বেকারত্বের হার। সারা দেশের বেকারত্বের হার ৬ দশমিক ৮ শতাংশ হলেও বড় বড় শহরগুলো যেমন টরন্টো, মন্ট্রিয়লসহ বড় শহরে বেকারত্বের হার আরও বেশি।

নিজে না খেয়ে ইউক্রেন!:  জাস্টিন ট্রুডো তার নিজের দেশের জনগণের কথা চিন্তা না করে তার মিত্রদেশের কথা শুনে প্রচুর পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছেন ইউক্রেনে। এখন পর্যন্ত তিনি ইউক্রেন যুদ্ধে ১৯ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছেন। এত বিশাল অঙ্কের ঘাটতি মেটাতে তাঁকে জনগণের ওপর বিভিন্ন ধরনের ট্যাক্স বসাতে হয়েছে, যা সাধারণ জনগণ মেনে নিচ্ছেন না।

হিতে বিপরীত ভিসানীতি: কোভিডের পর তিনি অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য কানাডার ভিসানীতিতে দুটি নতুন পথ বেছে নেন। প্রথম পথ, একেবারে গণহারে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষকে ভিজিট ভিসায় কানাডায় নিয়ে আসা। তার সরকার ভেবেছিল, এই মানুষগুলো কানাডায় এসে কিছুদিন থেকে অর্থনীতিতে অবদান রেখে চলে যাবেন। কিন্তু এর ফল হয়েছে উল্টো। মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে ভিজিট ভিসায় কানাডায় এসে অ্যাসাইলাম (আশ্রয়প্রার্থী) দাবি করেছেন।

কানাডার নিয়ম অনুযায়ী, এ দেশে এসে যে কেউ অ্যাসাইলাম দাবি করতে পারেন এবং সরকারের ‘প্রোটেকটিভ পার্সন’ হিসেবে সরকার তাকে মাসিক নিয়মিত ভাতা, চিকিৎসা সুবিধা, সন্তানদের ১২ ক্লাস পর্যন্ত বিনা মূল্যে পড়াশোনা–সুবিধা দিতে বাধ্য। যারা অ্যাসাইলাম দাবি করেছেন, তাদের অধিকাংশই এখন পর্যন্ত ওয়ার্ক পারমিট থাকা সত্ত্বেও কোনো কাজে ঢোকেননি।

দ্বিতীয় পথটি হচ্ছে অর্থনীতিকে চাঙা করতে প্রচুর পরিমাণে বিদেশি শিক্ষার্থী (ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট) কানাডাতে নিয়ে আসা হয়েছে। এসব শিক্ষার্থী পড়াশোনা শেষে পিআরের জন্য অর্থাৎ কানাডার স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার জন্য কোনোভাবেই এলিজিবল হচ্ছেন না। এর ফলে তারাও পড়াশোনা শেষে নিজ দেশে ফিরে না গিয়ে সরকারের কাছে অ্যাসাইলাম (আশ্রয়) দাবি করেছেন।

এই যখন অবস্থা তখন ট্রুডোর ও কানাডার জন্য মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে উঠেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনে বিজয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প জয় লাভ করার পর কানাডিয়ান ডলারের দ্রুত দরপতন হয় আমেরিকান ডলারের বিপরীতে। কয়েক দিন ধরে ১ কানাডিয়ান ডলারের বিনিময়ে ৬৯ থেকে ৭০ সেন্ট পাওয়া যাচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণ করার সঙ্গে সঙ্গে এ বিনিময় হার আরও কমে যাবে বলে অর্থনীতিবিদেরা আশঙ্কা করছেন। প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ কানাডা এখন আর জাস্টিন টুডোর হাতে নিরাপদ নয় বলে মনে করছেন অধিকাংশ কানাডিয়ান।

অতএব সুদর্শন-স্মার্ট উদার নেতা জাস্টিন ট্রুডোকে সম্ভবত বিদায় নিতে হচ্ছে।