পরিবেশগত বিবেচনায় দেশের ৫১ টি পাথর কোয়ারির মধ্যে ১৭টি পাথর কোয়ারির ইজারা দেয়া স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে ও প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষিত কোনো পাথর কোয়ারিতে ইজারা দেয়া যাবে না। এছাড়াও, নৈসর্গিক সৌন্দর্য রক্ষার স্বার্থে সিলেট জেলার ভোলাগঞ্জ, উৎমাছড়া, রতনপুর, বিছানাকান্দি ও লোভাছড়া পাথর মহালে ইজারা দেয়ার কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পরিবেশ,বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে: “আজ রবিবার (২৭ এপ্রিল) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এর সভাপতিত্বে সারা দেশের গেজেটভুক্ত পাথর/সিলিকাবালু/নুড়ি পাথর/সাদা মাটি কোয়ারিগুলোর ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং স্বরাষ্ট্র এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এসময় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় অন্যান্য কোয়ারিতে ইজারা প্রদানের পূর্বে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে পরিবেশগত ছাড়পত্র গ্রহণ বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনকে পাথর উত্তোলনকারী শ্রমিকদের নয়, প্রকৃত দায়ী ও দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেয়া করা হয়েছে। এখন থেকে অবৈধভাবে উত্তোলিত কোনো পাথর বিক্রি না করে তা কাস্টমসের মাধ্যমে সরকারের নির্মাণকাজে ব্যবহারের জন্য সরবরাহ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে পরিবেশ উপদেষ্টা জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রনালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন যে, ‘শুধু পাথর মহল নয়, অনিয়ন্ত্রিতভাবে বালু উত্তোলন রোধে ও একই নীতিমালা অনুসরণ করা যেতে পারে। এতে করে পরিবেশ ও জনস্বার্থ রক্ষিত হবে এবং বালু ও পাথরের মতন প্রাকৃতিক সম্পদ গুলো আইনমেনে জনগণের স্বার্থে ব্যবহার করা যাবে। অবৈধভাবে উত্তোলনকৃত কোন পাথর বিক্রি না করে বরং সেই পাথর কাস্টমস এর মাধ্যমে সরকারের নির্মাণকাজে সরবরাহ করা হলে পাথর ও বালি উত্তোলন কমবে।’
উপদেষ্টা জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের পূর্ববর্তী বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে এখন থেকে দেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
উল্লেখ্য, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালে দেশের সকল পাথর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করে। পরবর্তীতে, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে এ স্থগিতাদেশ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় উদ্বেগ প্রকাশ করে। তার প্রেক্ষিতে আজ সভায় এ সিদ্ধান্তগুলো গ্রহণ করা হয়।”