পর্দা নামল মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলার

পর্দা নামল মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলার

পর্দা নামল বইপ্রেমী ও দর্শনার্থীদের পদচারণামুখর মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলার। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ছিল মেলার শেষদিন। সরকারি ছুটির দিন বেলা ১১টা থেকে শুরু হয়ে মেলা চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। শেষ দিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মেলায় আসেন দর্শনার্থীরা। বিকেল থেকে বইমেলার বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রান্তে ছিল দর্শনার্থীদের ভিড়; ছিল না তিল ধারণের ঠাঁই। ছবি তুলে, বই কিনে দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার চেষ্টা করেছেন অনেকেই।

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সমাপনী দিনে মেলায় প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ছিল ৩৩৫টি। আর গত ২৮ দিনে বইমেলায় মোট প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৩ হাজার ২৯৯টি।

বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ড. সরকার আমিনের দেওয়া তথ্যমতে, এবারের বইমেলায় মোট ৭৪৮ প্রতিষ্ঠানকে স্টল ও ৩৭টি প্যাভিলিয়ন অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। এতে শিশুদের জন্য ১২০টি স্টল, লিটল ম্যাগাজিন ১৩০টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। মেলায় (বৃহস্পতিবার পর্যন্ত) বাংলা একাডিমি ৬১ লাখ ৬৫ হাজার ৫৯৯ টাকার বই বিক্রি করেছে।

পর্দা নামল মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলার prokritibarta

পুরস্কার

এবারের বইমেলায় শিশুদের জন্য বৃহৎ জায়গা নির্ধারণ করে বিভিন্ন আয়োজন করা হয়েছে এবং তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে।

বইমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিষয়ের স্বীকৃতি স্বরূপ কয়েকটি শ্রেণিতে লেখক-প্রকাশকদের পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বাংলা একাডেমির ‘কবি জসীমউদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার ২০২৫’ এ ভূষিত হয়েছেন কবি আল মুজাহিদী এবং ‘সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’ এ ভূষিত হয়েছেন অধ্যাপক হান্স হার্ডার ও কথাশিল্পী বর্ণালী সাহা। পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকদের পুরস্কারের অর্থ, সম্মাননাপত্র ও সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়েছে।

অমর একুশে বইমেলা ২০২৫ উপলক্ষে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার, রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার এবং শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার দিয়েছে বাংলা একাডেমি।

এর মধ্যে ২০২৪ সালে প্রকাশিত বিষয় ও গুণমানসম্মত সর্বাধিক সংখ্যক বই প্রকাশের জন্য চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার ২০২৫ দেওয়া হয়েছে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান কথাপ্রকাশকে।

২০২৪ সালে প্রকাশিত বইয়ের মধ্য থেকে গুণমান ও শৈল্পিক বিচারে সেরা বইয়ের জন্য প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান পাঠক সমাবেশ (প্লেটো : জীবন ও দর্শন-আমিনুল ইসলাম ভুইয়া), ঐতিহ্য (ভাষাশহিদ আবুল বরকত: নেপথ্য কথা- বদরুদ্দোজা হারুন) এবং কথাপ্রকাশকে (গোরস্তানের পদ্য : স্মৃতি ও জীবনস্বপ্ন-সিরাজ সালেকীন) দেওয়া হয়েছে মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০২৫।

২০২৪ সালে গুণমান বিচারে সর্বাধিক সংখ্যক শিশুতোষ বই প্রকাশের জন্য প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান কাকাতুয়াকে দেওয়া হয়েছে রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার ২০২৫।

পর্দা নামল মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলার prokritibarta

প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন

অমর একুশে বইমেলায় প্রকৃতিপ্রেমীদের পছন্দের শীর্ষে ছিল বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের ৯৫৮ নম্বর স্টল। মেলার প্রথম দিন থেকেই প্রকৃতিপ্রেমীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রাণ প্রকৃতিকে ভালোবেসে পরিবেশ সংরক্ষনে অবদান রাখতে ও প্রিয়জনকে উপহার দিতে প্রিয় লেখক প্রকৃতিবন্ধু মুকিত মজুমদার বাবুর লেখা বইয়ের প্রতি পাঠকদের ছিল বিশেষ আকর্ষণ।

অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবুর লেখা প্রকৃতিকথা সিরিজের শিশুতোষ গল্পের অ্যানিমেটেড বই ছোট্ট পাখি চন্দনা ও বর্ণিল প্রজাপতি।

পর্দা নামল মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলার prokritibarta

এবারের বইমেলায় প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন স্টলে অন্যান্য বইয়ের মধ্যে ছিল: হৃদয়ে সবুজ বাংলা, সবুজে সাজাই আমার বাংলাদেশ (বাংলা ও ইংরেজি), স্বপ্নের প্রকৃতি, বাংলাদেশের জলাভূমি, বাংলাদেশের রক্ষিত অঞ্চল, আমার রূপসী বাংলা, এক দশকে পথচলা, প্রকৃতি ও জীবন (বাংলা ও ইংরেজি), বাংলাদেশের বন ও বন্যপ্রাণী, সবুজে আমার ভালোবাসা, আমার দেশ আমার প্রকৃতি, ছন্দে ছন্দে বাংলার প্রকৃতি (পরিবেশ বিষয়ক কিশোর কাব্যগ্রন্থ), আমার অনেক ঋণ আছে, বাংলার প্রকৃতিতে পাখি, প্রকৃতিকথা (সম্পাদিত), বাংলাদেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশ, বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী ও পরিবেশ এবং শিশুদের জন্য পেঁচার পাঁচালি ১ এবং ২। এছাড়া প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের নিয়মিত প্রকাশনা হিসেবে থাকছে ত্রৈমাসিক পত্রিকা ‘প্রকৃতিবার্তা’র সবগুলো সংখ্যা।

বই মেলায় প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের স্টলের পিয়মিত আপডেট দিয়েছে অনলাইন নিউজপোর্টাল প্রকৃতিবার্তা

পর্দা নামল মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলার prokritibarta

অমর একুশে বইমেলা ২০২৫ পরিচালনা কমিটি সদস্য-সচিব ড. সরকার আমিন বইমেলায় দেওয়া সেবা সম্পর্কে বলেন, বাংলা একাডেমি এবার মেলায় তথ্যকেন্দ্র, নামাজের স্থান, টয়লেট ব্যবস্থা, ব্রেস্টফিডিং কর্নার, সরাসরি সম্প্রচার, নিরাপত্তা, মোড়ক উন্মোচন, ‘লেখক বলছি’ ও ‘জুলাইয়ের গল্প’ মঞ্চ, মাসব্যাপী আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মেলায় আগত লেখক, প্রকাশক এবং আগ্রহী পাঠক, ক্রেতা, দর্শনার্থীদের সেবা দিয়েছে।

বইমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মেহাম্মদ আজম বলেন, এবার অংশ নেওয়া প্রকাশকের সংখ্যা বেড়েছে। আমরা চেষ্টা করেছি বইমেলার সমস্যাগুলো যথাসম্ভব দূর করার। আমরা কিছু ক্ষেত্রে সফল হয়েছি কিছু ক্ষেত্রে পারিনি। এসময় তিনি বইমেলা সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

পর্দা নামল মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলার prokritibarta

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, আমরা মনে করি, বাংলা একাডেমির সংস্কার প্রয়োজন। এতে লেখক, গবেষক ও গুণীজনেরা কাজ করবেন। গুণীজন হিসেবে প্রবীণদের সঙ্গে তরুণ লেখকরাও যুক্ত হবেন। আমরা ইতোপূর্বে দেখেছি, নবীনরা বাংলা একাডেমিতে যুক্ত হতেন না। এমনকি বর্তমান মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম আগে বাংলা একাডেমির সাধারণ সদস্যও ছিলেন না। আমরা এমনটা চাই না। আমরা আশা করব তারা যেন দ্রুত বাংলা একাডেমির সংস্কার রিপোর্ট মন্ত্রণালয়ের জমা দেন।

তিনি আরও বলেন, এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এসেও আমরা সফলতার সঙ্গে মেলা সফলভাবে শেষ করতে পেরেছি। ৫ আগস্টের পরবর্তী সময়ে এ দেশে সবাই স্টেকহোল্ডার। কারণ এ দেশের মানুষ রক্ত দিয়ে হাসিনাকে বিদায় করেছে। আমাদের বিরুদ্ধে সীমানার অন্য পাশ থেকে প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে তা আমরা কাজের মাধ্যমে দূর করার চেষ্টা করছি। অভ্যুত্থানের পরে সাংস্কৃতিক কাজকে আরও বেগবান করতে দেশের সব কালচারাল সংগঠনগুলোকে একত্রিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। যার অংশ হিসেবে কুষ্টিয়াকে মিউজিক্যাল টাউন, পানাম নগরকে কালচারাল টাউন করার জন্য মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে।

বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, ভাষা আন্দোলনের চেতনাবহ ফেব্রুয়ারি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ মাস। মাসব্যাপী আয়োজিত অমর একুশে বইমেলা ভাষার জন্য জীবনদানকারী শহীদদের স্মৃতি ধরে রাখার একটি মাধ্যম।

অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হকের সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সচিবের রুটিন দায়িত্ব) মো. মফিদুর রহমান। অনুষ্ঠানে মেলার সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন বইমেলার সদস্য সচিব ড. আমিন সরকার এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।

আপলোডকারীর তথ্য

চবি’র কলোনি থেকে ৯ ফুট লম্বা অজগর উদ্ধার  

পর্দা নামল মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলার

আপডেট সময় ১১:০৬:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

পর্দা নামল বইপ্রেমী ও দর্শনার্থীদের পদচারণামুখর মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলার। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ছিল মেলার শেষদিন। সরকারি ছুটির দিন বেলা ১১টা থেকে শুরু হয়ে মেলা চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। শেষ দিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মেলায় আসেন দর্শনার্থীরা। বিকেল থেকে বইমেলার বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রান্তে ছিল দর্শনার্থীদের ভিড়; ছিল না তিল ধারণের ঠাঁই। ছবি তুলে, বই কিনে দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার চেষ্টা করেছেন অনেকেই।

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সমাপনী দিনে মেলায় প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ছিল ৩৩৫টি। আর গত ২৮ দিনে বইমেলায় মোট প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৩ হাজার ২৯৯টি।

বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ড. সরকার আমিনের দেওয়া তথ্যমতে, এবারের বইমেলায় মোট ৭৪৮ প্রতিষ্ঠানকে স্টল ও ৩৭টি প্যাভিলিয়ন অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। এতে শিশুদের জন্য ১২০টি স্টল, লিটল ম্যাগাজিন ১৩০টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। মেলায় (বৃহস্পতিবার পর্যন্ত) বাংলা একাডিমি ৬১ লাখ ৬৫ হাজার ৫৯৯ টাকার বই বিক্রি করেছে।

পর্দা নামল মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলার prokritibarta

পুরস্কার

এবারের বইমেলায় শিশুদের জন্য বৃহৎ জায়গা নির্ধারণ করে বিভিন্ন আয়োজন করা হয়েছে এবং তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে।

বইমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিষয়ের স্বীকৃতি স্বরূপ কয়েকটি শ্রেণিতে লেখক-প্রকাশকদের পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বাংলা একাডেমির ‘কবি জসীমউদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার ২০২৫’ এ ভূষিত হয়েছেন কবি আল মুজাহিদী এবং ‘সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’ এ ভূষিত হয়েছেন অধ্যাপক হান্স হার্ডার ও কথাশিল্পী বর্ণালী সাহা। পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকদের পুরস্কারের অর্থ, সম্মাননাপত্র ও সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়েছে।

অমর একুশে বইমেলা ২০২৫ উপলক্ষে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার, রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার এবং শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার দিয়েছে বাংলা একাডেমি।

এর মধ্যে ২০২৪ সালে প্রকাশিত বিষয় ও গুণমানসম্মত সর্বাধিক সংখ্যক বই প্রকাশের জন্য চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার ২০২৫ দেওয়া হয়েছে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান কথাপ্রকাশকে।

২০২৪ সালে প্রকাশিত বইয়ের মধ্য থেকে গুণমান ও শৈল্পিক বিচারে সেরা বইয়ের জন্য প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান পাঠক সমাবেশ (প্লেটো : জীবন ও দর্শন-আমিনুল ইসলাম ভুইয়া), ঐতিহ্য (ভাষাশহিদ আবুল বরকত: নেপথ্য কথা- বদরুদ্দোজা হারুন) এবং কথাপ্রকাশকে (গোরস্তানের পদ্য : স্মৃতি ও জীবনস্বপ্ন-সিরাজ সালেকীন) দেওয়া হয়েছে মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০২৫।

২০২৪ সালে গুণমান বিচারে সর্বাধিক সংখ্যক শিশুতোষ বই প্রকাশের জন্য প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান কাকাতুয়াকে দেওয়া হয়েছে রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার ২০২৫।

পর্দা নামল মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলার prokritibarta

প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন

অমর একুশে বইমেলায় প্রকৃতিপ্রেমীদের পছন্দের শীর্ষে ছিল বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের ৯৫৮ নম্বর স্টল। মেলার প্রথম দিন থেকেই প্রকৃতিপ্রেমীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রাণ প্রকৃতিকে ভালোবেসে পরিবেশ সংরক্ষনে অবদান রাখতে ও প্রিয়জনকে উপহার দিতে প্রিয় লেখক প্রকৃতিবন্ধু মুকিত মজুমদার বাবুর লেখা বইয়ের প্রতি পাঠকদের ছিল বিশেষ আকর্ষণ।

অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবুর লেখা প্রকৃতিকথা সিরিজের শিশুতোষ গল্পের অ্যানিমেটেড বই ছোট্ট পাখি চন্দনা ও বর্ণিল প্রজাপতি।

পর্দা নামল মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলার prokritibarta

এবারের বইমেলায় প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন স্টলে অন্যান্য বইয়ের মধ্যে ছিল: হৃদয়ে সবুজ বাংলা, সবুজে সাজাই আমার বাংলাদেশ (বাংলা ও ইংরেজি), স্বপ্নের প্রকৃতি, বাংলাদেশের জলাভূমি, বাংলাদেশের রক্ষিত অঞ্চল, আমার রূপসী বাংলা, এক দশকে পথচলা, প্রকৃতি ও জীবন (বাংলা ও ইংরেজি), বাংলাদেশের বন ও বন্যপ্রাণী, সবুজে আমার ভালোবাসা, আমার দেশ আমার প্রকৃতি, ছন্দে ছন্দে বাংলার প্রকৃতি (পরিবেশ বিষয়ক কিশোর কাব্যগ্রন্থ), আমার অনেক ঋণ আছে, বাংলার প্রকৃতিতে পাখি, প্রকৃতিকথা (সম্পাদিত), বাংলাদেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশ, বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী ও পরিবেশ এবং শিশুদের জন্য পেঁচার পাঁচালি ১ এবং ২। এছাড়া প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের নিয়মিত প্রকাশনা হিসেবে থাকছে ত্রৈমাসিক পত্রিকা ‘প্রকৃতিবার্তা’র সবগুলো সংখ্যা।

বই মেলায় প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের স্টলের পিয়মিত আপডেট দিয়েছে অনলাইন নিউজপোর্টাল প্রকৃতিবার্তা

পর্দা নামল মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলার prokritibarta

অমর একুশে বইমেলা ২০২৫ পরিচালনা কমিটি সদস্য-সচিব ড. সরকার আমিন বইমেলায় দেওয়া সেবা সম্পর্কে বলেন, বাংলা একাডেমি এবার মেলায় তথ্যকেন্দ্র, নামাজের স্থান, টয়লেট ব্যবস্থা, ব্রেস্টফিডিং কর্নার, সরাসরি সম্প্রচার, নিরাপত্তা, মোড়ক উন্মোচন, ‘লেখক বলছি’ ও ‘জুলাইয়ের গল্প’ মঞ্চ, মাসব্যাপী আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মেলায় আগত লেখক, প্রকাশক এবং আগ্রহী পাঠক, ক্রেতা, দর্শনার্থীদের সেবা দিয়েছে।

বইমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মেহাম্মদ আজম বলেন, এবার অংশ নেওয়া প্রকাশকের সংখ্যা বেড়েছে। আমরা চেষ্টা করেছি বইমেলার সমস্যাগুলো যথাসম্ভব দূর করার। আমরা কিছু ক্ষেত্রে সফল হয়েছি কিছু ক্ষেত্রে পারিনি। এসময় তিনি বইমেলা সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

পর্দা নামল মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলার prokritibarta

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, আমরা মনে করি, বাংলা একাডেমির সংস্কার প্রয়োজন। এতে লেখক, গবেষক ও গুণীজনেরা কাজ করবেন। গুণীজন হিসেবে প্রবীণদের সঙ্গে তরুণ লেখকরাও যুক্ত হবেন। আমরা ইতোপূর্বে দেখেছি, নবীনরা বাংলা একাডেমিতে যুক্ত হতেন না। এমনকি বর্তমান মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম আগে বাংলা একাডেমির সাধারণ সদস্যও ছিলেন না। আমরা এমনটা চাই না। আমরা আশা করব তারা যেন দ্রুত বাংলা একাডেমির সংস্কার রিপোর্ট মন্ত্রণালয়ের জমা দেন।

তিনি আরও বলেন, এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এসেও আমরা সফলতার সঙ্গে মেলা সফলভাবে শেষ করতে পেরেছি। ৫ আগস্টের পরবর্তী সময়ে এ দেশে সবাই স্টেকহোল্ডার। কারণ এ দেশের মানুষ রক্ত দিয়ে হাসিনাকে বিদায় করেছে। আমাদের বিরুদ্ধে সীমানার অন্য পাশ থেকে প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে তা আমরা কাজের মাধ্যমে দূর করার চেষ্টা করছি। অভ্যুত্থানের পরে সাংস্কৃতিক কাজকে আরও বেগবান করতে দেশের সব কালচারাল সংগঠনগুলোকে একত্রিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। যার অংশ হিসেবে কুষ্টিয়াকে মিউজিক্যাল টাউন, পানাম নগরকে কালচারাল টাউন করার জন্য মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে।

বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, ভাষা আন্দোলনের চেতনাবহ ফেব্রুয়ারি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ মাস। মাসব্যাপী আয়োজিত অমর একুশে বইমেলা ভাষার জন্য জীবনদানকারী শহীদদের স্মৃতি ধরে রাখার একটি মাধ্যম।

অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হকের সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সচিবের রুটিন দায়িত্ব) মো. মফিদুর রহমান। অনুষ্ঠানে মেলার সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন বইমেলার সদস্য সচিব ড. আমিন সরকার এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।