পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠের ৭১ শতাংশ পানি এবং বাকী ২৯ শতাংশ স্থল। পানি যেমন একদিকে জীবন অন্যদিকে বিশেষ ক্ষেত্রে মরণের কারণও। জলবায়ু পরিবর্তনের চরম সংকটে কোথাও পানির তীব্র অভাব দেখা দিচ্ছে কোথাও আবার জীবন-জনপদ ভাসিয়ে নিচ্ছে এই পানিই। কেবল প্রত্যন্ত জনপদই নয় শহরাঞ্চলগুলোও পানি সম্পর্কিত সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে।
৮০০ কোটি মানুষের পৃথিবীতে প্রায় অর্ধেক মানুষ বসবাসের জন্য বেছে নেন শহরকে। এ কারণে গ্রামীণ অঞ্চলের তুলনায় নগরাঞ্চল দ্রুত ‘উত্তপ্ত’ হচ্ছে। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা ওয়াটারএইডের নতুন গবেষণা অনুসারে, অনেক নগরাঞ্চল পানি-সম্পর্কিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে রয়েছে।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে এই গবেষণা সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে:
গবেষণায় ১০০ টিরও বেশি প্রধান শহরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি জরিপ করা হয়েছে, যেখানে গত চার দশক ধরে জলবায়ুর ধরণ নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়েছে।
কায়রো, মাদ্রিদ, হংকং একসময় বন্যার ঝুঁকিতে ছিল, এখন সেগুলো খরায় ভুগতে শুরু করেছে। অন্যদিকে ভারত, কলম্বিয়া, নাইজেরিয়া ও পাকিস্তানের শুষ্ক শহরগুলোতেও বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ওয়াটারএইড-এর বৈশ্বিক আন্তর্জাতিক বিষয়ক পরিচালক ক্যাথেরিন নাইটিঙ্গেল বলেন, এখানকার অবকাঠামো এমন এক সময়ে ডিজাইন ও নির্মাণ করা হয়েছিল, যখন এই শহরগুলো শুষ্ক ছিল। কিন্তু এখন এগুলো বন্যাপ্রবণ শহর।
ক্রমবর্ধমান বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ২০টি শহরের মধ্যে দুটি ছাড়া বাকি সবই এশিয়ায়। সে শহরগুলোর অর্ধেকই ভারতে। ইউরোপ, উত্তর আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্য সবচেয়ে বেশি শুষ্কতার প্রবণতা অনুভব করছে।
চীন, ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং পূর্ব আফ্রিকার শহরগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।
পাকিস্তানের বৃহত্তম শহর করাচিকে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ১০টি শহরের মধ্যে রেখেছে ওয়াটারএইড। করাচির দুই কোটি মানুষের অর্ধেকই বস্তিতে বাস করে।
দক্ষিণ আফ্রিকার দেশ জাম্বিয়া খরার সাথে লড়াই করছে। এ কারণে দেশটিতে পানি, স্যানিটেশন এবং বিদ্যুতের সংকট রয়েছে। স্বল্প আয়ের মানুষজনের উপর এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ছে।