অবৈধ শিকারি বা পোচারদের মাধ্যমে হাতি, গণ্ডার বা প্যাঙ্গোলিনের মতো বড় প্রাণীর দেহাংশ পাচার কেনিয়ায় সাধারণ ঘটনা। এই চোরাচালানকারীদের বিরুদ্ধে বহুদিন থেকেই লড়াই করছে দেশের প্রশাসন। তবে পিঁপড়াও চোরাচালান হয় এই খবর রীতিমতো চমকে দিলো। সম্প্রতি পিঁপড়া পাচার, চোরাচালানের অপরাধে দুই বেলজিয়ান তরুণ-সহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে কেনিয়া কর্তৃপক্ষ। বন্যপ্রাণী ডাকাতির দায়ে মঙ্গলবার আদালতে তোলা হয় তাদেরকে।
কেনিয়া ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিস ঘটনাটি প্রসঙ্গে জানিয়েছে, ‘বন্যপ্রাণী চোরাচালানের ক্ষেত্রে একটা পরিবর্তন দেখা গেছে। বড় স্তন্যপায়ী প্রাণীর পরিবর্তে এখন ছোট কিন্তু পরিবেশগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এমন প্রাণী পাচার হচ্ছে।’
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, দুই জন ১৯ বছর বয়সী বেলজিয়ান যুবকের কাছ থেকে গত ৫ এপ্রিল দুই হাজার ২৪৪ টি সিরিঞ্জ আর টেস্ট টিউবে তুলো দিয়ে রাখা পাঁচ হাজার পিঁপড়া উদ্ধার করা হয়েছে। জায়ান্ট আফ্রিকান হারভেস্টার অ্যান্ট নামের এই পিঁপড়া গুরুত্বপূর্ণ মেসর সেফালোটেস প্রজাতিভুক্ত।
কেনিয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে এই পিঁপড়ার মূল্য প্রায় সাত হাজার ৭০০ মার্কিন ডলার! তাদের পাচার করা হচ্ছিল বিশেষভাবে তৈরি টেস্ট টিউবে, সিরিঞ্জে যার মধ্যে পিঁপড়াগুলি দুই মাস পর্যন্ত বেঁচে থাকবে অথচ বিমানবন্দরের সুরক্ষাদ্বারে আটকাবে না।
এক্স হ্যান্ডেলে এক বিবৃতিতে কেনিয়ার বন্যপ্রাণী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, “যাত্রা পথে বাঁচিয়ে রাখার জন্য পিঁপড়েগুলিকে তুলা দিয়ে রাখা হয়ছিল। এর থেকে প্রমাণিত হয় যে এটি পূর্বপরিকল্পিত চোরাচালানের অংশ।”
তারা আরো জানিয়েছে, ট্যুরিস্ট ভিসায় দেশে ঢুকে গ্রেপ্তারকৃতরা ইউরোপ এবং এশিয়ার পোষ্য বাজারে চড়া দামে এই পিঁপড়া বিক্রি করার পরিকল্পনা করেছিল। পোষ্য দুনিয়ায় এখন পোকামাকড়ের চাহিদা বাড়ছে।
অন্য দুই গ্রেপ্তারকৃতের মধ্যে একজন ভিয়েতনামের এবং আরেজকন কেনিয়ার বাসিন্দা। তাদের থেকে ৪০০টি পিঁপড়া উদ্ধার হয়েছে।
আদালতে চারজনই তাদের অপরাধ স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে কেনিয়ার বন্যপ্রাণী কর্তৃপক্ষ। গ্রেপ্তারকৃত বেলজিয়ান যুবক জানান, “আমরা এখানে বেআইনি কাজ করতে আসিনি। নিজেদের নির্বুদ্ধিতায় ঘটনাচক্রে এই কাজ করেছি।”
এই যুবকদের দাবি, তারা মজা করে পিঁপড়ে ধরেছিল। এই কাজ যে বেআইনি তা তারা জানত না । আদালত যেন তাদের প্রতি কঠোর মনোভাব না দেখায় সেই কারণে অপরাধ স্বীকার করেছে তারা।