সংবাদ শিরোনাম ::
Logo তুরাগ দিয়েই নদী দখল ও দূষণমুক্তকরণের প্রক্রিয়া শুরু করবো: উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান Logo ট্রেনে ঈদযাত্রা: ৩ জুনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি আজ Logo রাতে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন প্রধান উপদেষ্টা Logo প্রকৃতির প্রতিশোধ: সংকটে জীববৈচিত্র্য Logo লঘুচাপ, ঘূর্ণিঝড়ের গুঞ্জন! কেমন যেতে পারে মাসের শেষ দিনগুলো, যা বলছে আবহাওয়ার পূর্বাভাস Logo প্রশাসনিক সমন্বয় ও সংস্কার ছাড়া পরিবেশ সংরক্ষণ সম্ভব নয় : পরিবেশ উপদেষ্টা Logo বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটা বাতিল Logo প্রকৃতির সঙ্গে সুর মিলিয়ে চলার বার্তা নিয়ে এবছরের আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস Logo জাতীয় নির্বাচন, ‘মানবিক করিডোর’, মব সহিংসতা নিয়ে যা বললেন সেনাপ্রধান Logo রিট খারিজ, মেয়র হিসেবে ইশরাককে শপথ পড়ানোর বাধা নেই

প্রত্যন্ত গ্রামে ৭’শ প্রজাতির বৈচিত্র্যময় গাছপালায় ভরা দ্বিজেন শর্মা উদ্ভিদ উদ্যান

প্রত্যন্ত গ্রামে ৭’শ প্রজাতির বৈচিত্র্যময় গাছপালায় ভরা দ্বিজেন শর্মা উদ্ভিদ উদ্যান

হাসমত আলী, পেশায় একজন কলেজ শিক্ষক। নেশায় বৃক্ষপ্রেমী। ছোটবেলা থেকেই প্রকৃতির প্রতি ছিল হাসমত আলীর অকৃত্রিম টান। কৈশোরে নিসর্গী দ্বিজেন শর্মার লেখা পড়ে তার প্রকৃতিপ্রেম আরও গভীর হয়।

নিসর্গী দ্বিজেন শর্মা

সেই শ্রদ্ধা থেকেই প্রিয় নিসর্গীর নামে জামালপুরের সরিষাবাড়ীর তারাকান্দির দৌলতপুর গ্রামে তিনি গড়ে তুলেছেন দ্বিজেন শর্মা উদ্ভিদ উদ্যান। আজ সেই উদ্যান ৭০০’র বেশি বৈচিত্র্যময় দুর্লভ গাছগাছালিতে সমৃদ্ধ।

কী নেই দ্বিজেন শর্মা উদ্যানে? কানাইডিঙ্গা, বৈলাম, উরিআম, কুরচি, কন্যারি, মাইলাম, চালমুগরা, বাঁশপাতা, ডাকরুম, তাসবি, কেরামন, তুন, শিলবাটনা, গুটগুটিয়া, ট্রাম্পেট, কামদেব, রিটা, চিকরাশি, নাগালিঙ্গম, বাওবাব, কর্পূর, উদাল, কুম্ভি, ঢাকিজাম, তানপুরা, সিভিট, হিজল, তমাল, চাপালিশ, হলদু, আগর, শ্বেতচন্দন, রক্তচন্দন, বইট্টা গর্জন, কাইজেলিয়া, মহুয়া, জহুরী চাঁপা, কুসুম চাঁপা, সুলতান চাঁপা, কাঠালি চাঁপা, স্বর্ণ চাঁপা, নাগেশ্বর চাঁপাসহ চেনা এবং নাম না জানা অসংখ্য বিরল গাছে ভরপুর এই উদ্যান। সেখানে আনুমানিক ৬ হাজার গাছপালা, প্রতিটি গাছের পরিচর্যা চলে নিবিড় ভালোবাসা ও যত্নে।

উদ্যানটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০২২ সালের শুরুতে। কিন্তু তার গাছের প্রতি ভালোবাসা এবং বাগানের অনেক গাছই তার বাড়িতে লাগানো ছিল অনেক আগে থেকে। প্রকৃতি থেকে ক্রমে অনেক গাছ হারিয়ে যাচ্ছে। সংরক্ষণের তাগিদে তিনি এখানে বাগান গড়ে তোলেন।

উদ্যানে গাছগাছালির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন প্রকৃতিপ্রেমী হাসমত আলী

দুর্লভ, ভেষজ, ম্যানগ্রোভ, প্রায় ২০ প্রজাতির বাঁশ, ৫০ ধরনের অর্কিড, ফুল, ফল, সৌন্দর্যবর্ধক উদ্ভিদ, ক্যাকটাসসহ অসংখ্য বিদেশি ও স্থানীয় ফলদ বৃক্ষ রয়েছে উদ্যানটিতে।

উদ্যানের মধ্যে রয়েছে দুটি ছোট ছোট জলাধার। গুল্মজাতীয় জলজ উদ্ভিদ রয়েছে। সেখানে উদ্যানের পাখিরা জলকেলি করতে পারে। পাখির খাদ্যের জোগান দিতে তিনি রোপণ করেছেন অনেক ফলদ বৃক্ষ। গাছ সংরক্ষণের পাশাপাশি হাসমত আলী উদ্যানের মধ্যে গড়ে তুলছেন একটি প্রজাপতি পার্ক। এ কাজে তাকে পরামর্শ ও সহযোগিতা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রজাপতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন।

প্রজাপতির জন্য তিনি উদ্যানে রেখেছেন জবা, নয়নতারা, কসমস, টগর, রঙ্গন, অলকানন্দা, গাঁদা, জুঁই, করবী, মুসেন্ডা, মাধুরীলতা, কামিনী, লেবু, লিচু, কদম, এরিকাপাম, আশ শেওড়া, লজ্জাবতী, ঝুমকোলতা ও আঙ্গুরলতার মতো গুল্ম প্রজাতির প্রায় শতাধিক গাছ। এখানে প্রজাপতির প্রায় ১৫/২০টি প্রজাতি দেখা যায়।

হাসমত আলী প্রজাপতি সংরক্ষণ ও গবেষণার জন্য ‘বাটারফ্লাই অ্যাওয়ার্ড -২০২১’ এবং দুর্লভ উদ্ভিদ সংরক্ষণ ও গবেষণার জন্য ডিভাইন কেয়ার ফাউন্ডেশনের ‘গ্রিন ক্লাইমেট লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০২৩’ অর্জন করেন। এ ছাড়াও তিনি বৃক্ষ গবেষণা, সংরক্ষণ, উদ্ভাবন বিভাগে জাতীয় পুরস্কার-২০২৩ লাভ করেন। বাংলাদেশ ন্যাশনাল হারবেরিয়াম থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি তার উদ্যান চত্বরে স্বল্প পরিসরে একটি হারবেরিয়াম স্থাপন করেছেন। এখানে তিনি বিভিন্ন উদ্ভিদের নমুনা সংগ্রহ করেন। বিশেষ করে বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদ হারবেরিয়াম করে প্রজাতি সংরক্ষণ করছেন।

আপলোডকারীর তথ্য

Shuvo

তুরাগ দিয়েই নদী দখল ও দূষণমুক্তকরণের প্রক্রিয়া শুরু করবো: উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান

প্রত্যন্ত গ্রামে ৭’শ প্রজাতির বৈচিত্র্যময় গাছপালায় ভরা দ্বিজেন শর্মা উদ্ভিদ উদ্যান

আপডেট সময় ০২:০১:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

হাসমত আলী, পেশায় একজন কলেজ শিক্ষক। নেশায় বৃক্ষপ্রেমী। ছোটবেলা থেকেই প্রকৃতির প্রতি ছিল হাসমত আলীর অকৃত্রিম টান। কৈশোরে নিসর্গী দ্বিজেন শর্মার লেখা পড়ে তার প্রকৃতিপ্রেম আরও গভীর হয়।

নিসর্গী দ্বিজেন শর্মা

সেই শ্রদ্ধা থেকেই প্রিয় নিসর্গীর নামে জামালপুরের সরিষাবাড়ীর তারাকান্দির দৌলতপুর গ্রামে তিনি গড়ে তুলেছেন দ্বিজেন শর্মা উদ্ভিদ উদ্যান। আজ সেই উদ্যান ৭০০’র বেশি বৈচিত্র্যময় দুর্লভ গাছগাছালিতে সমৃদ্ধ।

কী নেই দ্বিজেন শর্মা উদ্যানে? কানাইডিঙ্গা, বৈলাম, উরিআম, কুরচি, কন্যারি, মাইলাম, চালমুগরা, বাঁশপাতা, ডাকরুম, তাসবি, কেরামন, তুন, শিলবাটনা, গুটগুটিয়া, ট্রাম্পেট, কামদেব, রিটা, চিকরাশি, নাগালিঙ্গম, বাওবাব, কর্পূর, উদাল, কুম্ভি, ঢাকিজাম, তানপুরা, সিভিট, হিজল, তমাল, চাপালিশ, হলদু, আগর, শ্বেতচন্দন, রক্তচন্দন, বইট্টা গর্জন, কাইজেলিয়া, মহুয়া, জহুরী চাঁপা, কুসুম চাঁপা, সুলতান চাঁপা, কাঠালি চাঁপা, স্বর্ণ চাঁপা, নাগেশ্বর চাঁপাসহ চেনা এবং নাম না জানা অসংখ্য বিরল গাছে ভরপুর এই উদ্যান। সেখানে আনুমানিক ৬ হাজার গাছপালা, প্রতিটি গাছের পরিচর্যা চলে নিবিড় ভালোবাসা ও যত্নে।

উদ্যানটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০২২ সালের শুরুতে। কিন্তু তার গাছের প্রতি ভালোবাসা এবং বাগানের অনেক গাছই তার বাড়িতে লাগানো ছিল অনেক আগে থেকে। প্রকৃতি থেকে ক্রমে অনেক গাছ হারিয়ে যাচ্ছে। সংরক্ষণের তাগিদে তিনি এখানে বাগান গড়ে তোলেন।

উদ্যানে গাছগাছালির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন প্রকৃতিপ্রেমী হাসমত আলী

দুর্লভ, ভেষজ, ম্যানগ্রোভ, প্রায় ২০ প্রজাতির বাঁশ, ৫০ ধরনের অর্কিড, ফুল, ফল, সৌন্দর্যবর্ধক উদ্ভিদ, ক্যাকটাসসহ অসংখ্য বিদেশি ও স্থানীয় ফলদ বৃক্ষ রয়েছে উদ্যানটিতে।

উদ্যানের মধ্যে রয়েছে দুটি ছোট ছোট জলাধার। গুল্মজাতীয় জলজ উদ্ভিদ রয়েছে। সেখানে উদ্যানের পাখিরা জলকেলি করতে পারে। পাখির খাদ্যের জোগান দিতে তিনি রোপণ করেছেন অনেক ফলদ বৃক্ষ। গাছ সংরক্ষণের পাশাপাশি হাসমত আলী উদ্যানের মধ্যে গড়ে তুলছেন একটি প্রজাপতি পার্ক। এ কাজে তাকে পরামর্শ ও সহযোগিতা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রজাপতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন।

প্রজাপতির জন্য তিনি উদ্যানে রেখেছেন জবা, নয়নতারা, কসমস, টগর, রঙ্গন, অলকানন্দা, গাঁদা, জুঁই, করবী, মুসেন্ডা, মাধুরীলতা, কামিনী, লেবু, লিচু, কদম, এরিকাপাম, আশ শেওড়া, লজ্জাবতী, ঝুমকোলতা ও আঙ্গুরলতার মতো গুল্ম প্রজাতির প্রায় শতাধিক গাছ। এখানে প্রজাপতির প্রায় ১৫/২০টি প্রজাতি দেখা যায়।

হাসমত আলী প্রজাপতি সংরক্ষণ ও গবেষণার জন্য ‘বাটারফ্লাই অ্যাওয়ার্ড -২০২১’ এবং দুর্লভ উদ্ভিদ সংরক্ষণ ও গবেষণার জন্য ডিভাইন কেয়ার ফাউন্ডেশনের ‘গ্রিন ক্লাইমেট লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০২৩’ অর্জন করেন। এ ছাড়াও তিনি বৃক্ষ গবেষণা, সংরক্ষণ, উদ্ভাবন বিভাগে জাতীয় পুরস্কার-২০২৩ লাভ করেন। বাংলাদেশ ন্যাশনাল হারবেরিয়াম থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি তার উদ্যান চত্বরে স্বল্প পরিসরে একটি হারবেরিয়াম স্থাপন করেছেন। এখানে তিনি বিভিন্ন উদ্ভিদের নমুনা সংগ্রহ করেন। বিশেষ করে বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদ হারবেরিয়াম করে প্রজাতি সংরক্ষণ করছেন।