চিরবিদায় নিয়েছেন বাংলা সিনেমার কিংবদন্তী অভিনেতা প্রবীর মিত্র। রোববার (৫ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়ী এই অভিনেতা। তার মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনসহ তার ভক্ত-অনুরাগীরা।
বর্ষীয়ান অভিনেতা প্রবীর মিত্রের মরদেহ নেওয়া হবে চলচ্চিত্রের আঁতুড়ঘর এফডিসিতে। আজ দুপুর ১২টার দিকে সেখানে শ্রদ্ধা জানানো শেষে বাদ জোহর তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার বাদ যোহর এফডিসিতে প্রথম জানাজা হবে। এরপর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে চ্যানেল আইতে। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে।
প্রসঙ্গত, রোববার (৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১০টা ১০ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন প্রবীর মিত্র। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
এর আগে, গত ২২ ডিসেম্বর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল প্রবীর মিত্রকে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হয়।
১৯৪৩ সালের ১৮ আগস্ট কুমিল্লার চান্দিনায় জন্মগ্রহণ করেন প্রবীর মিত্র। তাঁর পুরো নাম প্রবীর কুমার মিত্র। পুরান ঢাকায় বড় হওয়া প্রবীর স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত হন। সেসময়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে অভিনয় করেছিলেন তিনি।
১৯৬৯ সালে ‘জলছবি’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রাঙ্গনে অভিষেক করেন প্রবীর মিত্র। সিনেমাটি মুক্তি পায় ১৯৭১ সালে। ক্যারিয়ারের শুরুতে কয়েকটি সিনেমায় নায়ক হিসেবে কাজ করলেও পরে চরিত্রাভিনেতা হিসেবে দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি।
১৯৮২ সালে ‘বড় ভালো লোক ছিল’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান প্রবীর মিত্র। ২০১৮ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের ‘আজীবন সম্মাননা’তেও ভূষিত হন এই অভিনেতা। সবশেষ এ অভিনেতাকে ২০২৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বৃদ্ধাশ্রম’ নামে একটি সিনেমায় দেখা গেছে।
দীর্ঘ ৫ দশকের ক্যারিয়ারে ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সেয়ানা’, ‘জালিয়াত’, ‘ফরিয়াদ’, ‘রক্ত শপথ’, ‘চরিত্রহীন’, ‘জয় পরাজয়’, ‘অঙ্গার’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘ফকির মজনু শাহ’, ‘মধুমিতা’, ‘অশান্ত ঢেউ’, ‘অলংকার’, ‘অনুরাগ’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘তরুলতা’, ‘গাঁয়ের ছেলে’, ‘পুত্রবধূ’সহ চারশ সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।