সংবাদ শিরোনাম ::
Logo আশা জাগিয়ে শুরু কপ ৩০, মুকিত মজুমদার বাবুর প্রত্যাশা পূর্বের প্রতিশ্রুতিগুলোর বাস্তবায়ন    Logo ট্রাম্পকে ইঙ্গিত করে লুলার প্রত্যয়, “কপ ৩০ হবে সত্যের কপ” Logo এবার নিজেকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন আরিফিন শুভ Logo ১৩ নভেম্বরের কর্মসূচি ঘিরে কোনো শঙ্কা নেই: ডিএমপি কমিশনার Logo ভারত-পাকিস্তানে একরাতের ব্যবধানে বোমা হামলা: দিল্লিতে নিহত ৯, ইসলামাবাদে নিহত ১২ Logo রাতের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে Logo সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ বাড়ল সাড়ে তিন মাস Logo দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হজ পালনের অনুমতি দিবে না সৌদি সরকার Logo নদী গিলে নিচ্ছে জমি: ভাঙনের সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তহীন লড়াই Logo ময়মনসিংহে বাসে আগুন, দগ্ধ হয়ে চালকের মৃত্যু

ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, জেলায় জেলায় শঙ্কা বাড়ছে

ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, জেলায় জেলায় শঙ্কা বাড়ছে

কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে। এতে এখন পর্যন্ত সাতজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও দুজন। বন্যার কারণে ডুম্বুর জলবিদ্যৎ প্রকল্পের বাঁধ খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ত্রিপুরার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে হাওড়া নদী বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়, ধলাই নদী মৌলভীবাজারে, মুহুরি নদী ফেনী জেলায় এবং খোয়াই নদী সিলেটে প্রবেশ করেছে। বাঁধ খুলে দেওয়ার ফলে হু হু করে পানি ঢুকছে বাংলাদেশে। এতে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে পড়েছে ফেনী জেলা, সেখানে এযাবতকালের ভয়াবহতম বন্যা দেখা দিয়েছে। এছাড়া আবার প্লাবিত হচ্ছে সিলেটের হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার। এদিকে নোয়াখালী-লক্ষ্মীপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

ফেনী: ভয়াবহ বন্যার কবলে ফেনীর উত্তরের তিন উপজেলা ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়ার শতাধিক গ্রামের লাখের বেশি মানুষ। তীব্র স্রোতে ভেসে গিয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট ও ঘর-বসতি। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর পানি। ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়ন, আনন্দপুর, মুন্সীরহাট, আমজাদহাট ইউনিয়নের ৪০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

পরশুরামের মির্জানগর,  চিথলিয়া, বক্সমাহমুদ এবং পৌরশহরসহ ৪৫টির বেশি গ্রাম পানিতে তলিয়ে রয়েছে। ছাগলনাইয়ার পাঠান নগর, রাধানগর, শুভপুর ইউনিয়নেরও বেশ কয়েকটি গ্রামে বন্যা হচ্ছে।

 

এসব এলাকায় তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট, পুকুর ও ফসলি জমি। কিছু কিছু এলাকায় মানুষের ঘরের ছাদ ও টিনের চালেও ছুঁয়েছে বন্যার পানি। এমন পরিস্থিতিতে আশ্রয় খুঁজছেন স্থানীয়রা। বন্যাদুর্গতদের জন্য ত্রাণ সহায়তা নিয়ে মাঠে নেমেছে স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। স্থানীয়রা বলছে, এটা ফেনীতে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা।

সিলেট: ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে আরেক দফা বন্যার মুখে সিলেট। টানা বৃষ্টির ফলে বাড়ছে নদ-নদীর পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হলেও বুধবার (২১ অগাস্ট) সকাল থেকে হালকা বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে সিলেট আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় মঙ্গলবার (২০ অগাস্ট) সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৩৬ দশমিক ৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বুধবার (২১ অগাস্ট) সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৩ দশমিক ২মিলিটারি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, টানা বৃষ্টিপাত ও ভারতের পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেটের নদ-নদীর পানিও বেড়েছে। বিশেষ করে চলতি মাসের শুরু থেকেই কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করেছে।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ধলাই নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে তিনটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। লোকালয়ে পানি ঢুকে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।

নোয়াখালী: নোয়াখালীতে পানিবন্দী কয়েক লাখ মানুষ।নোয়াখালীর ৯টি উপজেলা ও ৮টি পৌরসভার বেশির ভাগ সড়ক, বাসাবাড়ি পানিতে তলিয়েছে। ভেসে গেছে মাছের ঘের ও আমন ধানের বীজতলা। পানিবন্দী হয়ে বিপাকে জেলার প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ। এরই মধ্যে জলাবদ্ধ এলাকাগুলোর প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে টানা বৃষ্টি ও মেঘনা নদীর অতিরিক্ত জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে প্লাবিত হয়েছে উপকূলীয় এলাকার কয়েকটি গ্রাম। এতে তলিয়ে গেছে বসতবাড়িসহ ফসলি জমি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসাব মতে, নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় এক মিটার পানির উচ্চতা বেড়েছে। পূর্ণিমার প্রভাবে নদী উত্তাল থাকায় আরও অন্তত তিনদিন এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে।

আপলোডকারীর তথ্য

Shuvo

জনপ্রিয় সংবাদ

আশা জাগিয়ে শুরু কপ ৩০, মুকিত মজুমদার বাবুর প্রত্যাশা পূর্বের প্রতিশ্রুতিগুলোর বাস্তবায়ন   

ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, জেলায় জেলায় শঙ্কা বাড়ছে

আপডেট সময় ০১:৩৭:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ অগাস্ট ২০২৪

কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে। এতে এখন পর্যন্ত সাতজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও দুজন। বন্যার কারণে ডুম্বুর জলবিদ্যৎ প্রকল্পের বাঁধ খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ত্রিপুরার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে হাওড়া নদী বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়, ধলাই নদী মৌলভীবাজারে, মুহুরি নদী ফেনী জেলায় এবং খোয়াই নদী সিলেটে প্রবেশ করেছে। বাঁধ খুলে দেওয়ার ফলে হু হু করে পানি ঢুকছে বাংলাদেশে। এতে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে পড়েছে ফেনী জেলা, সেখানে এযাবতকালের ভয়াবহতম বন্যা দেখা দিয়েছে। এছাড়া আবার প্লাবিত হচ্ছে সিলেটের হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার। এদিকে নোয়াখালী-লক্ষ্মীপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

ফেনী: ভয়াবহ বন্যার কবলে ফেনীর উত্তরের তিন উপজেলা ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়ার শতাধিক গ্রামের লাখের বেশি মানুষ। তীব্র স্রোতে ভেসে গিয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট ও ঘর-বসতি। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর পানি। ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়ন, আনন্দপুর, মুন্সীরহাট, আমজাদহাট ইউনিয়নের ৪০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

পরশুরামের মির্জানগর,  চিথলিয়া, বক্সমাহমুদ এবং পৌরশহরসহ ৪৫টির বেশি গ্রাম পানিতে তলিয়ে রয়েছে। ছাগলনাইয়ার পাঠান নগর, রাধানগর, শুভপুর ইউনিয়নেরও বেশ কয়েকটি গ্রামে বন্যা হচ্ছে।

 

এসব এলাকায় তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট, পুকুর ও ফসলি জমি। কিছু কিছু এলাকায় মানুষের ঘরের ছাদ ও টিনের চালেও ছুঁয়েছে বন্যার পানি। এমন পরিস্থিতিতে আশ্রয় খুঁজছেন স্থানীয়রা। বন্যাদুর্গতদের জন্য ত্রাণ সহায়তা নিয়ে মাঠে নেমেছে স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। স্থানীয়রা বলছে, এটা ফেনীতে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা।

সিলেট: ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে আরেক দফা বন্যার মুখে সিলেট। টানা বৃষ্টির ফলে বাড়ছে নদ-নদীর পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হলেও বুধবার (২১ অগাস্ট) সকাল থেকে হালকা বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে সিলেট আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় মঙ্গলবার (২০ অগাস্ট) সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৩৬ দশমিক ৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বুধবার (২১ অগাস্ট) সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৩ দশমিক ২মিলিটারি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, টানা বৃষ্টিপাত ও ভারতের পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেটের নদ-নদীর পানিও বেড়েছে। বিশেষ করে চলতি মাসের শুরু থেকেই কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করেছে।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ধলাই নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে তিনটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। লোকালয়ে পানি ঢুকে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।

নোয়াখালী: নোয়াখালীতে পানিবন্দী কয়েক লাখ মানুষ।নোয়াখালীর ৯টি উপজেলা ও ৮টি পৌরসভার বেশির ভাগ সড়ক, বাসাবাড়ি পানিতে তলিয়েছে। ভেসে গেছে মাছের ঘের ও আমন ধানের বীজতলা। পানিবন্দী হয়ে বিপাকে জেলার প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ। এরই মধ্যে জলাবদ্ধ এলাকাগুলোর প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে টানা বৃষ্টি ও মেঘনা নদীর অতিরিক্ত জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে প্লাবিত হয়েছে উপকূলীয় এলাকার কয়েকটি গ্রাম। এতে তলিয়ে গেছে বসতবাড়িসহ ফসলি জমি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসাব মতে, নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় এক মিটার পানির উচ্চতা বেড়েছে। পূর্ণিমার প্রভাবে নদী উত্তাল থাকায় আরও অন্তত তিনদিন এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে।