ভারী বৃষ্টিপাতে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের প্রবল চাপ ও অভ্যন্তরীণ অবিরাম বৃষ্টিতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে ফেনী। বৃহস্পতিবার সকালে বিপৎসীমার ১০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছিল ফেনীর মুহুরী নদীর পানি। তীব্র স্রোতে যেন ফুঁসছে পানি। প্রবল স্রোতে ফেনীর তিন উপজেলার বিস্তীর্ণ জনপদে পানিবন্দি প্রায় চার লাখ মানুষের প্রাণ বাঁচানোই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। উদ্ধারকাজ চলছে, কাজ করছে সামরিক বাহিনী। তবে পানির স্রোত বেশি হওয়ায় স্পিড বোটেও বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা বলেছেন, ফেনীতে এমন ভয়াবহ বন্যা আগে দেখেনি কেউ। প্রতিনিয়ত পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। ফুলগাজী, পরশুরাম এবং ছাগলনাইয়া উপজেলার প্রায় ৯৫ শতাংশ এলাকা ডুবে গেছে। ফুলগাজীতে অনেক বাড়ির নিচতলা পুরোটাই ডুবে গেছে। উপজেলাটিতে একজন ডুবে মারা গেছেন, তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এদিকে, বন্যার পানিতে লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গত সোমবার (১৯ অগাস্ট) রাত থেকেই জেলার পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার প্রায় বেশিরভাগ এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় মঙ্গলবার থেকে এ তিন উপজেলাসহ সোনাগাজী ও দাগনভূঞা উপজেলার কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ পুরোপুরি বন্ধ করা দেওয়া হয়। একইসঙ্গে, ভারী বৃষ্টিতে ফেনী শহরে জলাবদ্ধতার কারণে দুপুর থেকে রাত অবধি বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। মোবাইল নেটওয়ার্ক কাজ করছে না, অনেকেই ফেনীতে এই তিন উপজেলার স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না।
বন্যাদুর্গতদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের ২৪টি বোট নিয়োজিত রয়েছে। তাদের পাশাপাশি বিজিবি, ফায়ারসার্ভিস ও স্বেচ্ছাসেবীরাও উদ্ধার তৎপরতায় যোগ দিয়েছেন।
বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ফেনীর ফাজিলপুর এলাকায় রেললাইনের একটি অংশ। পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম-ঢাকা-সিলেট-চাঁদপুরসহ অন্যান্য গন্তব্যের মধ্যে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

রেল সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পানিতে ফেনীর ফাজিলপুর এলাকায় রেললাইনের একটি অংশ ডুবে যায়। পানির স্রোতের সাথে লাইন থেকে পাথর ও মাটি সরে গেছে।
নিজস্ব সংবাদ : 



















