বছর জুড়ে অপেক্ষায় থাকা লেখক-পাঠকদের মনের খোড়াকের যোগান দিতে অমর একুশে বইমেলার পর্দা উন্মোচন হলো বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে। ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান: নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ’ প্রতিপাদ্যে শুরু হলো মাসব্যাপী এ মেলা। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় বইমেলার উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রতিবছরের মতো এবারও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজন করা হয়েছে প্রাণের বইমেলা। এবার সবচেয়ে বড় বইমেলা আয়োজন করেছে বাংলা একাডেমি।
বইমেলায় অংশগ্রহণকারী ৭০৮ জন প্রকাশকের মধ্যে ৯৯টি স্টল বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে, ৬০৯টি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নির্মাণ করা হয়েছে।
বইমেলার প্রথম দিনে মানুষ কিছুটা কম থাকলেও, বইপ্রেমীরা পছন্দের প্রকাশনীতে ভিড় করছিলেন। প্রিয় মানুষের জন্য কিনছিলেন বই।
প্রকৃতিপ্রেমীদের ভিড় দেখা গেলো বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন এর ৯৫৮ নম্বর স্টলে ।বইপ্রেমীদের উৎসাহ আরো কয়েক গুণ বেড়ে গেল যখন প্রকৃত ও জীবন ফাউন্ডেশনের স্টলে প্রকৃতিবন্ধু বীর মুক্তিযোদ্ধা মুকিত মজুমদার বাবু নিজেই উপস্থিত ছিলেন।
কেউ নিচ্ছিলেন তার অটোগ্রাফ। কেউবা তার সাথে ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ মূল্য ছাড়ে বই কিনতে পেরে খুশি মনে বাড়ি ফেরেন বইপ্রেমীরা।
বইমেলায় প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের স্টলে থাকছে কুইজ প্রতিযোগীতা, যেখানে প্রশ্নের উত্তর দিয়ে জিতে নেয়া যাবে প্রাণ-প্রকৃতির বই, ক্যালেন্ডার, ম্যাগাজিন, ক্যাপ,স্মারকসহ নানা আকর্ষণীয় পুরস্কার।
এছাড়াও স্টলে এসে ১০০ টাকায় ফরম কিনে প্রকৃতি ও জীবন ক্লাবের সদস্য হতে পারবেন। এই ক্লাব বছরজুড়ে প্রকৃতি সংরক্ষণ, প্রচারণা ও বৃক্ষরোপণসহ নানা জনহিতৈষী কাজ করে, সদস্য হলে এতে যুক্ত হতে পারবেন আপনিও।
‘সুন্দর প্রকৃতিতে গড়ি সুস্থ জীবন’ স্লোগানে ২০০৯ সালে যাত্রা শুরু করা প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন প্রকৃতি ও পরিবেশের নানা উপাদান সাধারণ মানুষের কাছে উপস্থাপন, জীববৈচিত্র্য সংক্রান্ত গবেষণা এবং পরিবেশ সংরক্ষণে কাজ করে যাচ্ছে। বিপন্ন প্রতিবেশ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে গবেষণা ও তৃণমূল পর্যায়ে সচেতনতা গড়ে তোলার পাশাপাশি প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের রয়েছে বিভিন্ন প্রকাশনা। ফাউন্ডেশন ২০১১ সালে অমর একুশে গ্রন্থমেলায় বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ শিরোনামে একটি বই প্রকাশ করে। এরই ধারাবাহিকতায় পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য নিয়ে নিজস্ব প্রকাশনী এবং অন্যান্য প্রকাশনীর মাধ্যমে বেশ কিছু বই-সাময়িকী প্রকাশিত হয়েছে। চলছে প্রাণ-প্রকৃতি নিয়ে গবেষণামূলক আরও বই প্রকাশের কাজ।
এবারের বইমেলায় প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন স্টলের বইয়ের তালিকা:
হৃদয়ে সবুজ বাংলা, সবুজে সাজাই আমার বাংলাদেশ (বাংলা ও ইংরেজি), স্বপ্নের প্রকৃতি, বাংলাদেশের জলাভূমি, বাংলাদেশের রক্ষিত অঞ্চল, আমার রূপসী বাংলা, এক দশকে পথচলা, প্রকৃতি ও জীবন (বাংলা ও ইংরেজি), বাংলাদেশের বন ও বন্যপ্রাণী, সবুজে আমার ভালোবাসা, আমার দেশ আমার প্রকৃতি, ছন্দে ছন্দে বাংলার প্রকৃতি (পরিবেশ বিষয়ক কিশোর কাব্যগ্রন্থ), আমার অনেক ঋণ আছে, বাংলার প্রকৃতিতে পাখি, প্রকৃতিকথা (সম্পাদিত), বাংলাদেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশ, বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী ও পরিবেশ এবং শিশুদের জন্য পেঁচার পাঁচালি ১ এবং ২। এছাড়া প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের নিয়মিত প্রকাশনা হিসেবে থাকছে ত্রৈমাসিক পত্রিকা ‘প্রকৃতিবার্তা’র সবগুলো সংখ্যা।
এই প্রকাশনাগুলোর মাধ্যমে পাঠক সহজেই বাংলার প্রকৃতি ও পরিবেশ সম্পর্কে বিস্তারিত এবং নিবিড় তথ্য-উপাত্ত জানতে পারবেন। মেলায় প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন স্টলের আপডেট পেতে ক্লিক করতে পারেন নিউজপোর্টাল প্রকৃতিবার্তা অনলাইনে।
প্রতি কর্মদিবসে সকলের জন্য বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং সরকারি ছুটির দিনে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে বইমেলা। দুপুরের খাবার ও নামাজের জন্য এক ঘন্টা বিরতি থাকবে। ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মেলা সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।