প্রকৃতি থেকে শীত চলে গেলেও বারো মাসই রাজধানীর বাতাস দূষিত করছে ধুলোর আস্তরণ। বায়ুমণ্ডল দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র ক্যাপসের তথ্য মতে, গত ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দূষণ ঘটেছে চলতি বছরের জানুয়ারিতে। বিগত ২০১৭ সালে যেখানে রাজধানীর গড় বায়ুমান ছিল ২৪০, সেখানে চলতি বছর বায়ুমান দাঁড়িয়েছে ৩১৮ তে। সদ্য শেষ হওয়া ফেব্রুয়ারির দূষণ আগের আট বছরকে ছাড়িয়ে গেছে। বায়ুমান নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থার হিসাব আরও ভয়াবহ। আইকিউএয়ারের তথ্য বলছে, গত ডিসেম্বরে একটি দিনও নির্মল বায়ু পায়নি রাজধানীবাসী।
বিশ্বের ১২৫ নগরীর মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সকালে বায়ুদূষণে পঞ্চম স্থানে আছে ঢাকা। আজ সকাল ৯টার দিকে আইকিউএয়ারের মানসূচকে ঢাকার গড় বায়ুমান ছিল ১৭৩। এ মানকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়।
আন্তর্জাতিক বায়ুমণ্ডলীয় সূচক অনুযায়ী বায়ুমান শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকলে তা স্বাভাবিক হিসেবে ধরা হয়। এর মাত্রা দেড়শ অতিক্রম করলে সেটি হয়ে ওঠে অস্বাস্থ্যকর, বাতাসকে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করা হয় ৩০০ অতিক্রম করলে।
ক্যাপসের সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, গত জানুয়ারি মাসের ১৬ দিন ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ১৫ দিন ‘দুর্যোগপূর্ণ’ বায়ুমান ছিল রাজধানীতে। যার প্রভাব পড়ছে রাজধানীবাসীর স্বাস্থ্যে। ফুসফুস সংক্রমণ, কাশি এখন প্রায় প্রত্যেক নগরবাসীর জন্য যেন অতি সাধারণ রোগ হয়ে উঠেছে! মানসিক চাপ, অবসাদ, শিশুর বিকাশে বাঁধা হয়ে উঠছে দূষিত বাতাস।
রাজধানী ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উৎসগুলোর মধ্যে আছে কলকারখানা ও যানবাহনের দূষিত ধোঁয়া, ইটভাটা, বর্জ্য পোড়ানো। দূষণ রোধে হাঁকডাক এবং নানা ধরনের প্রকল্পও কম হয়নি সরকারি স্তরে, কিন্তু দূষণ কমছে না।
ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উপাদান হলো বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫-এর উপস্থিতি। ঢাকার বাতাসে এর উপস্থিতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বেঁধে দেয়া মানমাত্রার চেয়ে ১৫ দশমিক ৫ গুণ বেশি!