গ্রিস, ভূমধ্য-এজিয়ান সাগরঘেষা সুন্দর এক দেশ, বিশ্বের অন্যতম পর্যটক আকর্ষণ করা দেশ। গ্রিসের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র সান্তোরিনি দ্বীপ। চমৎকার পাহাড়ি পরিবেশে ছবির মতো সুন্দর সাদা রঙের ঘরবাড়ি, কোথাও আবার নীলচে গম্বুজ, পাথুরে রাস্তা, সুদৃশ্য ফুলে সাজানো। বেশ কিছু বলিউড চলচ্চিত্রের রোমান্টিক গানের চিত্রায়ন হয়েছে এই দ্বীপেই। উপমহাদেশের দর্শকদের কাছেও তাই সান্তোরিনি পরিচিত। কিন্তু হঠাৎ এই দ্বীপ ছেড়ে পালাচ্ছেন বাসিন্দারা। বিশ্বকে আকর্ষণ করা দ্বীপের বাসিন্দারাই ছাড়ছেন বসতবাড়ি! এর কারণ ধারাবাহিক ভূমিকম্প।
গ্রিক সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম ইআরটি জানিয়েছে, কয়েক দিনের মধ্যে ৬ হাজারের বেশি বাসিন্দা দ্বীপটি ছেড়ে গেছে। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ভোরে শত শত মানুষ তাদের মালপত্র হাতে দ্বীপের একটি বন্দরে জড়ো হন। সেখানে তারা এথেন্সগামী ফেরির জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
মঙ্গলবার ভোরবেলায় ফের ৪.৮ মাত্রার একটি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে, যা গত সপ্তাহান্তে হওয়া ৪.৯ মাত্রার ভূমিকম্পের কাছাকাছি। সেটি ছিল এখন পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী কম্পন। গত তিন দিনে এজিয়ান সাগরে সান্তোরিনি ও কাছের আমোরগোস ও ইওস দ্বীপের মধ্যবর্তী এলাকায় সাড়ে পাঁচ’শরও বেশি ভূমিকম্প হয়েছে, যেগুলোর মাত্রা ছিল ৩ মাত্রার বেশি।
গ্রিসের ভূমিকম্প পরিকল্পনা ও সুরক্ষা সংস্থা (ওএএসপি) ধারণা করছে, এই তীব্র ভূমিকম্প প্রবণতা আরও অনেক দিন, এমনকি কয়েক সপ্তাহও স্থায়ী হতে পারে।

‘ইনস্টাগ্রামের দ্বীপ’ নামে পরিচিত সান্তোরিনি প্রতি বছর ৩৪ লাখ পর্যটক আকর্ষণ করে। তবে সেখানে স্থানীয় বাসিন্দার সংখ্যা মাত্র ২০ হাজার। এদের মধ্যে অনেকেই এখন মূল দ্বীপটির নিরাপত্তায় উদ্বিগ্ন হয়ে তা ছেড়ে যাচ্ছেন।
৩৫ বছর বয়সী বাসিন্দা জুলিয়ান সিনানাজ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমি দ্বীপে কাজ করি, আমি এখানে বহু বছর ধরে বাস করছি। কিন্তু আজ কেউ ভাবতেও পারেনি এমন কিছু ঘটতে যাচ্ছে। এখন দ্বীপে যা ঘটছে তা অবিশ্বাস্য।’
সোমবার গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোটাকিস বাসিন্দাদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এবং বলেন, ‘আমরা একটি অত্যন্ত তীব্র ভূ-গাঠনিক ঘটনার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, তবে কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছে।
নাগরিকদের নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার জন্য অতিরিক্ত ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মঙ্গলবার সান্তোরিনি থেকে এথেন্সগামী ১৫টি ফ্লাইট নির্ধারিত হয়েছে। দ্বীপের সব স্কুল শুক্রবার পর্যন্ত বন্ধ থাকবে এবং বাসিন্দাদের বড় ধরনের ঘরোয়া সমাবেশ এড়ানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
প্রকৃতিবার্তা ডেস্ক 



















