আবুধাবিতে আইইউসিএন ওয়ার্ল্ড কনজারভেশন কংগ্রেসের দ্বিতীয় দিনে সাইড ইভেন্টে, জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ জরুরী বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশের সুন্দরবন এবং সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড নিয়ে বিশেষ আলোচনায় বক্তরা, বিপন্ন নানা প্রজাতির প্রাণি ও সামুদ্রিক বাস্ততন্ত্র সংরক্ষণে প্রযুক্তি ও যুব নেতৃত্বে গুরুত্বারোপ করেন।
সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে সভ্যতা ও তথ্য-প্রযুক্তি। তবে এগিয়ে যাওয়ার মিছিলে প্রাণ-প্রকৃতিকে বাদ দেয়ায় হুমকিতে পুরো সভ্যতা। এমন বাস্তবতায় আইইউসিএন এর বিশ্ব সংরক্ষণ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে, নানা ফোরামের আলোচনায় গুরুত্ব পাচ্ছে জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং পরিবেশবান্ধব কল্যাণকর রূপান্তরের ধারণা।
সাইড ইভেন্টে আইইউসিএন বাংলাদেশ ও জিআইজেড এর আয়োজনে, সুন্দরবন ও সামুদ্রিক বিপন্ন জলজ প্রাণী রক্ষায় টেকসই ব্যবস্থাপনা ও কার্যকর পদক্ষেপে গুরুত্বারোপ করেন পরিবেশবাদীরা।

জিআইজেড এর মুখ্য উপদেষ্টা ডরোথিয়া থিউনিসেন বলেছেন, ‘ আমরা বাংলাদেশে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি, চাইলে আমরা দেশটির সুনীল অর্থনীতিকে সহায়তা করতেও প্রস্তুত আছি। বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্যের তথ্যভাণ্ডার নিয়ে কাজ করছে আইইউসিএন, আমরা তাদের পাশে আছি।’
আইইউসিএন বাংলাদেশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক এবিএম সারওয়ার আলম বলেন, ‘এই কংগ্রেসে আমরা বঙ্গোপসাগরের সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে তিমি-ডলফিনসহ যেসব জলজপ্রাণী রয়েছে সেসব রক্ষায় তরুণদের ভূমিকা, জলজপ্রাণীর ডেটাবেজ আমরা তুলে ধরেছি, সংরক্ষণে বিশ্বসম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছি।’

প্রাণীসম্পদ রক্ষা ও সুনীল অর্থনীতির টেকসই ব্যবহারে প্রযুক্তিগত দক্ষতার পাশাপাশি সঠিক পরিকল্পনা এবং সমন্বিত উদ্যোগে জোর দেওয়া হয়।
প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের সমুদ্র, ব্লু ইকনমি, সুন্দরবন সংলগ্ন জলজ বাস্তুসংস্থানকে এই ইভেন্টে জোর দিয়ে তুলে ধরা হয়েছে। নানাভাবে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যকে আমরা হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছি। সুন্দরবনে এমন এক প্রাণী আছে, যাকে আমরা বলি সুন্দরী হাঁস যা অতিবিপন্ন এক পাখি। এরকম জীববৈচিত্র্যের আধার হলো বাংলাদেশ, কিন্তু দিন দিন আমাদের অবহেলা-অসচেতনতার কারণে আমরা এসব সম্পদ হারিয়ে ফেলছি।’

প্রকৃতিবন্ধু আরও বলেন, ‘আমাদের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কেবল বিদেশী সংস্থা নির্ভর হলে চলবে না, আমরা যখন একযোগে কাজ করবো তখনই একটা সুফল আসবে।’
উল্লেখ্য, এবারের সম্মেলনে রেড লিস্ট ও প্রজাতি-হ্রাস বিষয়ক বিশ্বজনীন সতর্কবার্তা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, লাল তালিকাভুক্ত ১ লাখ ৭২ হাজার ৬শ’ ২০টি প্রজাতির মধ্যে ৪৮ হাজার ৬শ ৪৬টি প্রাণী বিলুপ্তির হুমকিতে রয়েছে।
মূল প্রতিবেদক: আলীম আল রাজী
তথ্য ও চিত্র: মেহেদী হাসান
প্রকৃতিবার্তা ডেস্ক 



















