পার্বত্য চট্টগ্রামের গহীন অরণ্যে চিতাবাঘের অস্তিত্বের প্রমাণ মিলেছে। ওয়াইল্ডলাইফ নিয়ে কাজ করা সংস্থা ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স (সিসিএ) বান্দরবানের একটি সংরক্ষিত গহীন বনে এশিয়াটিক প্রজাতির একটি চিতাবাঘের ছবি ক্যামেরায় ধারণ করেছে।
চলতি জুন মাসে স্থাপিত ক্যামেরা ট্র্যাপে এই দুর্লভ প্রাণীর ছবি ধরা পড়ে। এর মাধ্যমে দীর্ঘদিনের ধারণার বাস্তব ভিত্তি পাওয়া গেল।
এই দুর্লভ প্রাণীর ছবি প্রমাণ করে যে, পার্বত্য চট্টগ্রামের বনভূমিতে এখনও চিতাবাঘের অস্তিত্ব রয়েছে। ঐতিহাসিকভাবে ১৯০৬ সালের একটি রেকর্ডে সাঙ্গু ও মাতামুহুরী অববাহিকার বনে চিতাবাঘের উপস্থিতির তথ্য পাওয়া গিয়েছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়েও এই বিরল প্রাণীকে ক্যামেরায় ধরা পড়তে দেখা গেছে।
সিসিএ-এর প্রধান নির্বাহী শাহরিয়ার সিজার জানান, চিতাবাঘটির সুরক্ষার স্বার্থে এর অবস্থান গোপন রাখা হয়েছে, যাতে শিকারিরা এর ক্ষতি করতে না পারে। তিনি জানান, ২০১৫ সালেও একটি চিতাবাঘের দেখা মিলেছিল, তবে বর্তমানে এর সংখ্যা আরো কমেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই সংশ্লিষ্ট বনের অবস্থান বান্দরবানের বলে ধারণা করছেন। বান্দরবানের চিম্বুক রেঞ্জ, মোদক রেঞ্জ ও রেং তলাং রেঞ্জের গভীর রাতের জঙ্গলে প্রায়শই অদ্ভুত পশুপাখির কণ্ঠস্বর শোনা যায় বলে দাবি করেন অনেকে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং বাঘ বিশেষজ্ঞ ড. মনিরুল এইচ খান এই আবিষ্কারকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে জানান, এই এলাকাটি চিতাবাঘের প্রজনন এবং বিচরণের জন্য সহায়ক হতে পারে, তবে শিকারিদের তৎপরতা একটি বড় হুমকি। তিনি এই এলাকায় চিতাবাঘ সংরক্ষণে জোর দেন। এ ছাড়া গবেষকরা বর্তমানে ধারণকৃত চিতাবাঘের লিঙ্গসহ অন্যান্য বৈশিষ্ট্য নির্ণয়ের জন্য কাজ করছেন।