বিশ্বব্যাপী আত্মহত্যার প্রবণতা ধীরে ধীরে কমছে, তিন দশকের তথ্য বিশ্লেষণে এমনটাই দেখা যাচ্ছে। তবে বাংলাদেশে এ হার এখনও তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি, যা দেশটিকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম আত্মহত্যাপ্রবণ দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
বিজ্ঞানভিত্তিক সাময়িকী ল্যানসেট-এর নিবন্ধে এসব তথ্য উঠে এসেছে। নিবন্ধে ১৯৯০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী আত্মহত্যার প্রবণতা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, গবেষকরা বিশ্বের ২০৪টি দেশের আত্মহত্যার পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করেছেন। ১৯৯০ সালে প্রতি লাখ মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার হার ছিল ১৪ দশমিক ৯, যা ২০২১ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ৯-এ। ভৌগোলিকভাবে আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশি পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে, যেখানে প্রতি লাখে ১৯ দশমিক ২ জন আত্মহত্যা করে থাকেন।
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম আত্মহত্যাপ্রবণ দেশ। ২০২১ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতি লাখে আত্মহত্যার হার ছিল ১১ দশমিক ৪, যা বৈশ্বিক গড় (৯.০)-এর চেয়ে বেশি। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার কম হলেও এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
বয়সভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ১০ থেকে ২৯ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ আত্মহত্যার হার বাংলাদেশে। ৩০ থেকে ৪৯ বছর বয়সী নারীদের মধ্যেও নিজেকে শেষ করে দেয়ার হার আশঙ্কাজনকভাবে বেশি। এছাড়া, বয়স্ক জনগোষ্ঠীর মধ্যেও আত্মহত্যার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশে।
প্রতিবেদনের উপসংহারে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আত্মহত্যা একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্য সমস্যা, যা কার্যকর নীতিমালা, মানসিক স্বাস্থ্যসেবা, সচেতনতা বাড়ানো এবং আইনি সংস্কারের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব।