যুক্তরাজ্যের মালিকানাধীন সাউথ জর্জিয়া দ্বীপের দিকে সরাসরি এগিয়ে আসছে দানবীয় আকৃতির একটি ভাসমান বরফখণ্ড বা আইসবার্গ। আশঙ্কা করা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হিমশৈলটির সঙ্গে (আইসবার্গ) দ্বীপটির সরাসরি সংঘর্ষ হতে পারে। এতে ওই অঞ্চলের পেঙ্গুইন ও সিলের মতো প্রাণীদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে।
বিশালাকারের হিমশৈলটি এ২৩এ নামে পরিচিত। আইসবার্গটি দক্ষিণ মেরুর মহাদেশ অ্যান্টার্কটিকা থেকে ক্রমাগত উত্তরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং যুক্তরাজ্যের সাউথ জর্জিয়া দ্বীপের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এটি জর্জিয়া দ্বীপ থেকে মাত্র ১৭৩ মাইল দূরে অবস্থান করছে।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, দ্বীপের সঙ্গে ধাক্কা খেলে হিমশৈলটি টুকরো টুকরো হয়ে যেতে পারে, অথবা দ্বীপের সঙ্গে আটকে যেতে পারে। এতে বেশ কিছু সময় দ্বীপের প্রতিবেশ মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হতে পারে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান এবং ফরাসি সংবাদমাধ্যম ফ্রান্স টোয়েন্টিফোর জানিয়েছে, হিমশৈলটি আকারে ইংল্যান্ডের রাজধানী লন্ডনের দ্বিগুণ, ফ্রান্সের প্যারিসের চেয়ে তিনগুণ বড়।
অতিকায় এ২৩এ’র আয়তন এখন প্রায় ৩ হাজার বর্গকিলোমিটার। বিশ্বের সবচেয়ে বড় আইসবার্গটির উৎপত্তি দেখা যায় ১৯৮৬ সালে। ২০২০ সালে এটি অ্যান্টার্কটিকা থেকে ছুটে এগুতে থাকে।
ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভের সমুদ্রবিজ্ঞানী অ্যান্ড্রু মেইজার্স বলেন, ‘স্রোতে বড়ধরনের কোনো পরিবর্তন না আসলে আগামী ২ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে আইসবার্গটি সাউথ জর্জিয়ার কাছাকাছি চলে আসবে। আর এতে দ্বীপে ছানা বড় করা, খাবার খাওয়াতে ব্যস্ত পেঙ্গুইন এবং সিলের মতো প্রাণীরা পড়বে মহাবিপদে।’
উল্লেখ্য, সাউথ জর্জিয়ায় এখন গ্রীষ্মকাল চলছে এবং এর দক্ষিণ উপকূলরেখা বরাবর পেঙ্গুইন এবং সিলরা তাদের বাচ্চাদের মোটাতাজা করার জন্য পর্যাপ্ত খাবার আনতে হিমশীতল পানিতে লাগাতার ডুব দিচ্ছে।
এপরিস্থিতিতে অতিকায় আইসবার্গটি দ্বীপের ধারে আসলে সম্ভাব্য পরিণতি ভাল হবে না জানিয়ে মেইজার্স বলেন, ‘যদি আইসবার্গ সেখানে আটকে যায়, তবে পেঙ্গুইন-সিলেরা যেখান থেকে খাবার খায় সেই জায়গাটা আটকে দেবে অথবা তাদের এই বাঁধা পেরিয়ে পাশকাটিয়ে যেতে হবে। আর এটি করতে গিয়ে তাদের প্রচুর পরিমাণে অতিরিক্ত শক্তি পোড়াতে হবে। তাই পেঙ্গুইন ছানা এবং সিল শিশুরা কম খাবার পেয়ে দুর্বল হবে, যা মৃত্যুর হার বাড়িয়ে দেবে।’