সংবাদ শিরোনাম ::
Logo কপ ৩০: তৃতীয় দিন শেষ হয়েছে ঘোষণা, বিতর্ক, গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায় Logo কপ ৩০: জলবায়ু সংকট নিয়ে সম্মেলন করে ৩০ বছর পার, এখন সমাধানের সময়   Logo জাতীয় নির্বাচনের দিনই হবে গণভোট: প্রধান উপদেষ্টা Logo শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির মামলার রায় ১৭ নভেম্বর Logo জলবায়ু সংকটই এখন স্বাস্থ্য সংকট: ডব্লিউএইচও প্রধান    Logo আজ দুপুরে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা Logo সাভারে ডিগ্রেডেড এয়ারশেড বাস্তবায়নে অভিযান: চিমনি ভেঙে অবৈধ ইটভাটা বন্ধ, ১৮ লাখ টাকা জরিমানা Logo প্রকৃতি ও জীবনের এবারের পর্ব- ‘রক্ষিত অঞ্চল ব্যবস্থাপনা’    Logo জ্ঞান হারিয়ে হাসপাতালে ভর্তি নায়ক গোবিন্দ Logo বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রবেশে চালু হলো ই-টিকেটিং

বিশ্বের সবচেয়ে বিরল প্রাণী কোনটি? বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে আর কারা?

বিশ্বের সবচেয়ে বিরল প্রাণী কোনটি? বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে আর কারা?

জলবায়ু পরিবর্তন, বাসস্থান ও বাস্তুসংস্থান ধ্বংস, চোরা শিকারসহ নানা কারণে বিশ্বের বুক থেকে হারিয়ে গেছে খুবই সুন্দর ও বৈচিত্রময় অনেক প্রাণী। বিলুপ্ত প্রাণীর তালিকা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। এসবের মধ্যে কিছু প্রাণী পৃথিবীর নানা প্রান্তে খুবই অল্প সংখ্যায় টিকে আছে। চমৎকার কিছু প্রাণীর অস্তিত্ব আজ বিপন্ন।

ভ্যাকুইটা: এদের মধ্যে ভ্যাকুইটা বিশ্বের সবচেয়ে বিপন্ন প্রাণী। ক্যালিফোর্নিয়া উপসাগরে বিরলতম সামুদ্রিক এই স্তন্যপায়ী প্রাণীটির দেখা পাওয়া যায়। ডব্লিউডব্লিউএফ’র তথ্যানুসারে, ১৯৫৮ সালে এই প্রাণীটি আবিষ্কৃত হয়েছিল। আবিষ্কৃত হওয়ার মাত্র অর্ধ শতাব্দী পরেই এই প্রাণীটি বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।

ভ্যাকুইটা, বিশ্বের সবচেয়ে বিপন্ন প্রাণী

১৯৯৬  সালে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর অব ন্যাচার অ্যান্ড ন্যাচারাল রিসোর্সেস (আইইউসিএন) এই প্রাণীটিকে সবচেয়ে বিরল প্রাণী হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে মাত্র ১০টি ভ্যাকুইটা অবশিষ্ট আছে।

এরা পরপোয়েজ গোত্রের প্রাণী। দেখতে ডলফিনের সঙ্গে মিল থাকলেও এদের ডলফিনের মতো লম্বা মুখ নেই। তবে পানিতে থাকা অন্যান্য স্তন্যপায়ীদের মতো এই প্রাণীটির পানির ওপরে উঠে শ্বাস নিতে হয়। মেক্সিকোর ক্যালিফোর্নিয়া উপসাগরে বেআইনিভাবে মাছ ধরার জন্য পেতে রাখা গিলনেটের কারণে ভ্যাকুইটা বিলুপ্তির মুখে। গিলনেটে জড়িয়ে এগুলো পানিতে ডুবে যায় এবং নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যায়।

সুমাত্রান এবং জাভা গণ্ডার: গন্ডারের পাঁচটি প্রজাতির মধ্যে তিনটিই বিশ্বের সবচেয়ে বিপন্ন প্রাণীর তালিকায় রয়েছে। এগুলো হলো: কালো গন্ডার, জাভান গন্ডার ও সুমাত্রান গন্ডার। সুমাত্রান গন্ডার একটি মহাবিপন্ন প্রাণী। ডব্লিউডব্লিউএফ -এর তথ্যমতে, পৃথিবীতে মহাবিপন্ন এই প্রজাতির মাত্র ৪০টি গন্ডার টিকে আছে। অন্য সব গন্ডারের তুলনায় সুমাত্রান গন্ডার ছোট ও লোমশ।

সুমাত্রার রোমশ গণ্ডার
সুমাত্রার রোমশ গণ্ডার

ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপ এবং বোর্নিওর কালিমান্তান প্রদেশে এদের দেখা পাওয়া যায়। একসময় ভারত, থাইল্যান্ড, লাওস, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপপুঞ্জ, জাভা ও বোর্নিওতে এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে বেড়াত এরা। তবে, অন্যান্য গন্ডারের মতো এরাও শিংয়ের জন্য নির্বিচারে শিকারের কবলে পড়ে। এছাড়া আবাসস্থল হ্রাসের কারণেও এদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে রয়েছে।

তাছাড়া সুমাত্রান গন্ডারগুলো ‘ছোট, বিচ্ছিন্ন ও অস্থায়ী দলে’ বাস করে।  এভাবে একে অপরের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে, তাই বংশ বিস্তারও কম হয়।

জাভা গণ্ডারও মহাবিপন্ন। পৃথিবীতে একমাত্র ইন্দোনেশিয়ার জাভার উজুং কুলন ন্যাশনাল পার্কেই এই প্রজাতির মাত্র ৭০টি গন্ডার টিকে আছে। অথচ একসময় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া জুড়ে দেখা মিলত এই গন্ডারের। তবে শিকার ও আবাসস্থল হ্রাসের কারণে জাভান গন্ডারের সংখ্যা অবিশ্বাস্য হারে হ্রাস পায়।

আমুর চিতা: বর্তমানে রাশিয়ার সুদূর পূর্ব এবং উত্তরপূর্ব চীনের তুলনামূলক ছোট অঞ্চলে আমুর চিতাবাঘের দেখা পাওয়া যায়। শিকার, আবাসস্থল হ্রাস, খাদ্য ঘাটতি এবং মানুষের বিভিন্ন অবকাঠামো তৈরি যেমন: সড়ক, রেললাইন প্রভৃতি কারণে এগুলো বিলুপ্তির মুখে।

বরফের প্রান্তরে আমুর চিতা
বরফের প্রান্তরে আমুর চিতা

এসব কারণে আমুর চিতাবাঘ বিশ্বের বিরলতম প্রাণীগুলোর মধ্যে একটি। এই প্রজাতির মাত্র ৮৪টির বা তার কিছু বেশি সংখ্যক প্রাণী পৃথিবীতে অবশিষ্ট রয়েছে।

সাওলা: অদ্ভুত দেখতে এক হরিণ সদৃশ প্রাণী। রহস্যময়ও বটে। এর নাম সাওলা। সাওলা পৃথিবীর বিরলতম স্তন্যপায়ী প্রাণীগুলোর মধ্যে একটি। ১৯৯২ সালে ভিয়েতনামের অ্যানামাইট রেঞ্জে এটি প্রথম আবিষ্কৃত হয়।

লাজুক ও রহস্যময় প্রাণী সাওলা
লাজুক ও রহস্যময় প্রাণী সাওলা

এটি এতই কম দেখা যায় যে এটিকে এশিয়ান ইউনিকর্ন বলা হয়! তাই এ প্রাণীর সংখ্যা নির্ভুলভাবে নির্ধারণ করা শক্ত। তবে এটি মহাবিপন্ন প্রাণী হিসেবে বিবেচিত হয়। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, পৃথিবীতে ৭৫০টিরও কম সাওলা বেঁচে আছে।

 

আপলোডকারীর তথ্য

Shuvo

জনপ্রিয় সংবাদ

কপ ৩০: তৃতীয় দিন শেষ হয়েছে ঘোষণা, বিতর্ক, গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায়

বিশ্বের সবচেয়ে বিরল প্রাণী কোনটি? বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে আর কারা?

আপডেট সময় ০৭:১১:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৪

জলবায়ু পরিবর্তন, বাসস্থান ও বাস্তুসংস্থান ধ্বংস, চোরা শিকারসহ নানা কারণে বিশ্বের বুক থেকে হারিয়ে গেছে খুবই সুন্দর ও বৈচিত্রময় অনেক প্রাণী। বিলুপ্ত প্রাণীর তালিকা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। এসবের মধ্যে কিছু প্রাণী পৃথিবীর নানা প্রান্তে খুবই অল্প সংখ্যায় টিকে আছে। চমৎকার কিছু প্রাণীর অস্তিত্ব আজ বিপন্ন।

ভ্যাকুইটা: এদের মধ্যে ভ্যাকুইটা বিশ্বের সবচেয়ে বিপন্ন প্রাণী। ক্যালিফোর্নিয়া উপসাগরে বিরলতম সামুদ্রিক এই স্তন্যপায়ী প্রাণীটির দেখা পাওয়া যায়। ডব্লিউডব্লিউএফ’র তথ্যানুসারে, ১৯৫৮ সালে এই প্রাণীটি আবিষ্কৃত হয়েছিল। আবিষ্কৃত হওয়ার মাত্র অর্ধ শতাব্দী পরেই এই প্রাণীটি বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।

ভ্যাকুইটা, বিশ্বের সবচেয়ে বিপন্ন প্রাণী

১৯৯৬  সালে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর অব ন্যাচার অ্যান্ড ন্যাচারাল রিসোর্সেস (আইইউসিএন) এই প্রাণীটিকে সবচেয়ে বিরল প্রাণী হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে মাত্র ১০টি ভ্যাকুইটা অবশিষ্ট আছে।

এরা পরপোয়েজ গোত্রের প্রাণী। দেখতে ডলফিনের সঙ্গে মিল থাকলেও এদের ডলফিনের মতো লম্বা মুখ নেই। তবে পানিতে থাকা অন্যান্য স্তন্যপায়ীদের মতো এই প্রাণীটির পানির ওপরে উঠে শ্বাস নিতে হয়। মেক্সিকোর ক্যালিফোর্নিয়া উপসাগরে বেআইনিভাবে মাছ ধরার জন্য পেতে রাখা গিলনেটের কারণে ভ্যাকুইটা বিলুপ্তির মুখে। গিলনেটে জড়িয়ে এগুলো পানিতে ডুবে যায় এবং নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যায়।

সুমাত্রান এবং জাভা গণ্ডার: গন্ডারের পাঁচটি প্রজাতির মধ্যে তিনটিই বিশ্বের সবচেয়ে বিপন্ন প্রাণীর তালিকায় রয়েছে। এগুলো হলো: কালো গন্ডার, জাভান গন্ডার ও সুমাত্রান গন্ডার। সুমাত্রান গন্ডার একটি মহাবিপন্ন প্রাণী। ডব্লিউডব্লিউএফ -এর তথ্যমতে, পৃথিবীতে মহাবিপন্ন এই প্রজাতির মাত্র ৪০টি গন্ডার টিকে আছে। অন্য সব গন্ডারের তুলনায় সুমাত্রান গন্ডার ছোট ও লোমশ।

সুমাত্রার রোমশ গণ্ডার
সুমাত্রার রোমশ গণ্ডার

ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপ এবং বোর্নিওর কালিমান্তান প্রদেশে এদের দেখা পাওয়া যায়। একসময় ভারত, থাইল্যান্ড, লাওস, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপপুঞ্জ, জাভা ও বোর্নিওতে এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে বেড়াত এরা। তবে, অন্যান্য গন্ডারের মতো এরাও শিংয়ের জন্য নির্বিচারে শিকারের কবলে পড়ে। এছাড়া আবাসস্থল হ্রাসের কারণেও এদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে রয়েছে।

তাছাড়া সুমাত্রান গন্ডারগুলো ‘ছোট, বিচ্ছিন্ন ও অস্থায়ী দলে’ বাস করে।  এভাবে একে অপরের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে, তাই বংশ বিস্তারও কম হয়।

জাভা গণ্ডারও মহাবিপন্ন। পৃথিবীতে একমাত্র ইন্দোনেশিয়ার জাভার উজুং কুলন ন্যাশনাল পার্কেই এই প্রজাতির মাত্র ৭০টি গন্ডার টিকে আছে। অথচ একসময় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া জুড়ে দেখা মিলত এই গন্ডারের। তবে শিকার ও আবাসস্থল হ্রাসের কারণে জাভান গন্ডারের সংখ্যা অবিশ্বাস্য হারে হ্রাস পায়।

আমুর চিতা: বর্তমানে রাশিয়ার সুদূর পূর্ব এবং উত্তরপূর্ব চীনের তুলনামূলক ছোট অঞ্চলে আমুর চিতাবাঘের দেখা পাওয়া যায়। শিকার, আবাসস্থল হ্রাস, খাদ্য ঘাটতি এবং মানুষের বিভিন্ন অবকাঠামো তৈরি যেমন: সড়ক, রেললাইন প্রভৃতি কারণে এগুলো বিলুপ্তির মুখে।

বরফের প্রান্তরে আমুর চিতা
বরফের প্রান্তরে আমুর চিতা

এসব কারণে আমুর চিতাবাঘ বিশ্বের বিরলতম প্রাণীগুলোর মধ্যে একটি। এই প্রজাতির মাত্র ৮৪টির বা তার কিছু বেশি সংখ্যক প্রাণী পৃথিবীতে অবশিষ্ট রয়েছে।

সাওলা: অদ্ভুত দেখতে এক হরিণ সদৃশ প্রাণী। রহস্যময়ও বটে। এর নাম সাওলা। সাওলা পৃথিবীর বিরলতম স্তন্যপায়ী প্রাণীগুলোর মধ্যে একটি। ১৯৯২ সালে ভিয়েতনামের অ্যানামাইট রেঞ্জে এটি প্রথম আবিষ্কৃত হয়।

লাজুক ও রহস্যময় প্রাণী সাওলা
লাজুক ও রহস্যময় প্রাণী সাওলা

এটি এতই কম দেখা যায় যে এটিকে এশিয়ান ইউনিকর্ন বলা হয়! তাই এ প্রাণীর সংখ্যা নির্ভুলভাবে নির্ধারণ করা শক্ত। তবে এটি মহাবিপন্ন প্রাণী হিসেবে বিবেচিত হয়। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, পৃথিবীতে ৭৫০টিরও কম সাওলা বেঁচে আছে।