সংবাদ শিরোনাম ::
Logo আশা জাগিয়ে শুরু কপ ৩০, মুকিত মজুমদার বাবুর প্রত্যাশা পূর্বের প্রতিশ্রুতিগুলোর বাস্তবায়ন    Logo ট্রাম্পকে ইঙ্গিত করে লুলার প্রত্যয়, “কপ ৩০ হবে সত্যের কপ” Logo এবার নিজেকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন আরিফিন শুভ Logo ১৩ নভেম্বরের কর্মসূচি ঘিরে কোনো শঙ্কা নেই: ডিএমপি কমিশনার Logo ভারত-পাকিস্তানে একরাতের ব্যবধানে বোমা হামলা: দিল্লিতে নিহত ৯, ইসলামাবাদে নিহত ১২ Logo রাতের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে Logo সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ বাড়ল সাড়ে তিন মাস Logo দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হজ পালনের অনুমতি দিবে না সৌদি সরকার Logo নদী গিলে নিচ্ছে জমি: ভাঙনের সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তহীন লড়াই Logo ময়মনসিংহে বাসে আগুন, দগ্ধ হয়ে চালকের মৃত্যু

বিশ্লেষণ: ভারতে ভূমিধস বিপর্যয়ের নেপথ্যে কে অথবা কী?

  • নাসিমুল শুভ
  • আপডেট সময় ০৬:১২:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৪
  • 110

ভারতে ভূমিধস বিপর্যয়ের নেপথ্যে কে অথবা কী?

জুলাইতে দক্ষিণ ভারতে ভয়াবহ ভূমিধসের পেছনে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অতি ভারী বৃষ্টিপাতকে দায়ী করেছেন জলবায়ু ও দুর্যোগ বিশেষজ্ঞরা। কেরালার এই বিপর্যয়ের পর দ্রুত গবেষণার মাধ্যমে এবং প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে এ বিষয়ে একমত হয়েছেন তারা। তাদের এই বিশ্লেষণ ভারতীয় ও বিশ্বগণমাধ্যম গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করেছে।

ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন গ্রুপের হয়ে একদল গবেষক এই গবেষণা পরিচালনা করেন। এই গ্রুপের বিশেষজ্ঞরা সাধারণত কোনো দুর্যোগ-বিপর্যয়ে মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিশ্লেষণ করে থাকেন।

তারা কেরালার ওয়েনাড়ের ভয়াবহ ভূমিধস ও প্রাণহানির জন্য ভারী বৃষ্টিপাতকে দায়ী করেছেন। এই  বৃষ্টি, যা মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনে ১০ গুণ ভারী হয়ে মাটিতে ধস নামানোর পেছনে কাজ করেছে বলে মনে করেন তারা । তাদের গবেষণায় দেখা গেছে, ওয়েনাড়ে দৈনিক মৌসুমি বৃষ্টিপাত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ১০ শতাংশ বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।

দ্রুত সময়ের এই গবেষণায় উঠে এসেছে, গত ২৯-৩০ জুলাইতে ওয়েনাড়ে বৃষ্টি ১০ শতাংশ বেশি শক্তিশালী হয়ে ঝরেছিল। এই ভারী বৃষ্টিপাতের পেছনে তারা গ্রিনহাউস গ্যাস বিশেষ করে কার্বন নিঃসরণকে পরোক্ষ কারণ বলে মনে করেন।

লন্ডনের ইমপেরিয়াল কলেজের জলবায়ু বিজ্ঞানী মারিয়াম জাকারিয়া বলেন, ‘ওয়েনাড়ের ভয়াবহ ভূমিধস জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট বর্তমান সময়ের বিপর্যয়গুলোর এক অন্যতম উদাহরণ।’

বলা হচ্ছে, ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১৯০১ সাল থেকে বৃষ্টিপাতের রেকর্ড রাখা শুরু করে। রেকর্ড বলছে,  ২০২৪ সালের জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে কেরালার বৃষ্টিপাত ছিল এই সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ভারী বৃষ্টিপাতগুলোর মধ্যে তৃতীয়। অর্থাৎ এর আগে আর মাত্র দুইবার এত ভারী বৃষ্টি দেখেছে পুরো ভারত।

গবেষকরা বলেছেন, বিশ্ব যদি জীবাশ্ম জ্বলানীর ব্যবহার থেকে সরে না আসে আর বৈশ্বিক উষ্ণতা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যায় তাহলে কেরালার একদিনের যে অতি বৃষ্টি তা আগামীতে ৪ শতাংশ বেশি শক্তিশালী হয়ে আসবে।

ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্যোগ রোধে বন উজাড় এবং খনন হ্রাস করা, বিপজ্জনক ঢালে ঝুঁকি কমানোর ব্যবস্থা নেওয়া এবং দুর্বল এলাকা ধরে রাখার জন্য কাঠামো নির্মাণ করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। এর আগে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ রয়টার্সকে বলেছিলেন, ভূমিধসের আগে বেশ কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিপাতের কারণে মাটি নরম হয়ে গিয়েছিল, এর পাশাপাশি রাজ্যটিতে অতি উন্নয়ন ও অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন সম্ভবত ওই দুর্যোগের অন্যতম কারণ হিসেবে কাজ করেছে।

ভূমিধসে ব্যাপক হতাহতের জন্য অপ্রত্যাশিত ভারি বৃষ্টিপাতকে দায়ী করেছেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তিনি জানিয়েছেন, ওই অঞ্চলে পূর্ববর্তী ৪৮ ঘণ্টায় ৫৭২ মিলিমিটার (২৩ ইঞ্চি) বৃষ্টি হয়, আবহাওয়ার পূর্বাভাসে ২০৪ মিলিমিটার (৮ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত হতে পারে বলা হলেও হয়েছে তার দ্বিগুণেরও বেশি।

৩০ জুলাই ভোরে ব্যাপক ভূমিধসে কেরালার পাহাড়ি জেলা ওয়েনাড়ের কয়েকটি গ্রামের তিন শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। ২০১৮ সালে বন্যায় ৪০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর পর এটি ছিল ওয়েনাড়ে ঘটা সবচেয়ে প্রাণঘাতী দুর্যোগ।

আপলোডকারীর তথ্য

Shuvo

জনপ্রিয় সংবাদ

আশা জাগিয়ে শুরু কপ ৩০, মুকিত মজুমদার বাবুর প্রত্যাশা পূর্বের প্রতিশ্রুতিগুলোর বাস্তবায়ন   

বিশ্লেষণ: ভারতে ভূমিধস বিপর্যয়ের নেপথ্যে কে অথবা কী?

আপডেট সময় ০৬:১২:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৪

জুলাইতে দক্ষিণ ভারতে ভয়াবহ ভূমিধসের পেছনে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অতি ভারী বৃষ্টিপাতকে দায়ী করেছেন জলবায়ু ও দুর্যোগ বিশেষজ্ঞরা। কেরালার এই বিপর্যয়ের পর দ্রুত গবেষণার মাধ্যমে এবং প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে এ বিষয়ে একমত হয়েছেন তারা। তাদের এই বিশ্লেষণ ভারতীয় ও বিশ্বগণমাধ্যম গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করেছে।

ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন গ্রুপের হয়ে একদল গবেষক এই গবেষণা পরিচালনা করেন। এই গ্রুপের বিশেষজ্ঞরা সাধারণত কোনো দুর্যোগ-বিপর্যয়ে মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিশ্লেষণ করে থাকেন।

তারা কেরালার ওয়েনাড়ের ভয়াবহ ভূমিধস ও প্রাণহানির জন্য ভারী বৃষ্টিপাতকে দায়ী করেছেন। এই  বৃষ্টি, যা মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনে ১০ গুণ ভারী হয়ে মাটিতে ধস নামানোর পেছনে কাজ করেছে বলে মনে করেন তারা । তাদের গবেষণায় দেখা গেছে, ওয়েনাড়ে দৈনিক মৌসুমি বৃষ্টিপাত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ১০ শতাংশ বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।

দ্রুত সময়ের এই গবেষণায় উঠে এসেছে, গত ২৯-৩০ জুলাইতে ওয়েনাড়ে বৃষ্টি ১০ শতাংশ বেশি শক্তিশালী হয়ে ঝরেছিল। এই ভারী বৃষ্টিপাতের পেছনে তারা গ্রিনহাউস গ্যাস বিশেষ করে কার্বন নিঃসরণকে পরোক্ষ কারণ বলে মনে করেন।

লন্ডনের ইমপেরিয়াল কলেজের জলবায়ু বিজ্ঞানী মারিয়াম জাকারিয়া বলেন, ‘ওয়েনাড়ের ভয়াবহ ভূমিধস জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট বর্তমান সময়ের বিপর্যয়গুলোর এক অন্যতম উদাহরণ।’

বলা হচ্ছে, ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১৯০১ সাল থেকে বৃষ্টিপাতের রেকর্ড রাখা শুরু করে। রেকর্ড বলছে,  ২০২৪ সালের জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে কেরালার বৃষ্টিপাত ছিল এই সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ভারী বৃষ্টিপাতগুলোর মধ্যে তৃতীয়। অর্থাৎ এর আগে আর মাত্র দুইবার এত ভারী বৃষ্টি দেখেছে পুরো ভারত।

গবেষকরা বলেছেন, বিশ্ব যদি জীবাশ্ম জ্বলানীর ব্যবহার থেকে সরে না আসে আর বৈশ্বিক উষ্ণতা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যায় তাহলে কেরালার একদিনের যে অতি বৃষ্টি তা আগামীতে ৪ শতাংশ বেশি শক্তিশালী হয়ে আসবে।

ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্যোগ রোধে বন উজাড় এবং খনন হ্রাস করা, বিপজ্জনক ঢালে ঝুঁকি কমানোর ব্যবস্থা নেওয়া এবং দুর্বল এলাকা ধরে রাখার জন্য কাঠামো নির্মাণ করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। এর আগে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ রয়টার্সকে বলেছিলেন, ভূমিধসের আগে বেশ কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিপাতের কারণে মাটি নরম হয়ে গিয়েছিল, এর পাশাপাশি রাজ্যটিতে অতি উন্নয়ন ও অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন সম্ভবত ওই দুর্যোগের অন্যতম কারণ হিসেবে কাজ করেছে।

ভূমিধসে ব্যাপক হতাহতের জন্য অপ্রত্যাশিত ভারি বৃষ্টিপাতকে দায়ী করেছেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তিনি জানিয়েছেন, ওই অঞ্চলে পূর্ববর্তী ৪৮ ঘণ্টায় ৫৭২ মিলিমিটার (২৩ ইঞ্চি) বৃষ্টি হয়, আবহাওয়ার পূর্বাভাসে ২০৪ মিলিমিটার (৮ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত হতে পারে বলা হলেও হয়েছে তার দ্বিগুণেরও বেশি।

৩০ জুলাই ভোরে ব্যাপক ভূমিধসে কেরালার পাহাড়ি জেলা ওয়েনাড়ের কয়েকটি গ্রামের তিন শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। ২০১৮ সালে বন্যায় ৪০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর পর এটি ছিল ওয়েনাড়ে ঘটা সবচেয়ে প্রাণঘাতী দুর্যোগ।