লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। ব্রাজিলে অবস্থিত পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহৎ প্রাকৃতিক বন আমাজন। সেখানে ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। দাবানলে এখন পর্যন্ত দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া দাবানলের কারণে দেশটির বহু মহাসড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। রবিবার (২৫ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দাবানল মোকাবিলা করার জন্য ব্রাজিলের সাও পাওলো প্রাদেশিক সরকার একটি ক্রাইসিস ক্যাবিনেট গঠন করেছে। আগুনের সৃষ্ট ধোঁয়া ১২টি মহাসড়কে যান চলাচল ব্যাহত করেছে। এছাড়া রাজধানী সাও পাওলো শহরটি ধূসর কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে।
বিবিসি বলছে, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা এবং কম আর্দ্রতা সেখানে বিপজ্জনক আগুনের পরিস্থিতি তৈরি করছে। এই অঞ্চল দীর্ঘকাল ধরে খরার মধ্যে রয়েছে। স্থানীয় সরকার জানিয়েছে, উরুপেস শহরের একটি শিল্প কারখানার দুই কর্মচারী শুক্রবার আগুন নেভানোর সময় মারা গেছেন। তবে এই ঘটনার আরও বিস্তারিত বিবরণ দেয়া হয়নি।
স্থানীয় প্রচারমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, উচ্চতাপ ও কালো ধোয়ার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে কারণে মারা যাওয়া গবাদি পশুর মৃতদেহ মাঠেঘাটে যত্রতত্র পড়ে আছে। সাও পাওলোর কর্তৃপক্ষ বলেছে, ৩৬ টি শহরে উচ্চ সতকর্তা জারি করা হয়েছে। খরা মৌসুমে ক্ষেত শুষ্ক হয়ে আছে। এরমধ্যেই আগুন ছড়িয়ে পড়ছে।

ব্রাজিল সম্প্রতি প্যান্টানাল জলাভূমিতে বিশাল দাবানল এবং রিও গ্র্যান্ডে ডো সুল প্রদেশে বিশাল বন্যার সম্মুখীন হয়েছে। প্রাদেশিক সরকার সতর্ক করে বলেছে, বনের দাবানল দমকা বাতাস থেকে আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং সম্ভাব্য প্রাকৃতিক গাছপালাগুলোর পাশাপাশি বিশাল এলাকাও ধ্বংস করতে পারে।
সোশ্যাল মিডিয়াতে দেয়া এক বার্তায় গভর্নর টারসিসিও ডি ফ্রেইটাস বলেছেন: ‘বর্তমানে আমাদের ৩০টি শহরে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের জন্য উচ্চ সতর্কতা জারি রয়েছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছি।’ পরে পৃথক এক পোস্টে তিনি লিখেছেন: ‘সাও পাওলো একটি কঠিন সময়ের মুখোমুখি হয়েছে এবং বিভিন্ন বাহিনীর সাথে কাজে যোগ দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে চেষ্টা করছে। মানুষকে নিরাপদ রাখতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ তিনি আরও বলেন, ‘পিরাসিকাবা, বারিনহা, সেরতাওজিনহো এবং রিবেইরো প্রেটোর মতো সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় দ্রুত পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে আমরা দিনভর মাঠে ছিলাম। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আমরা বিশ্রাম নেব না।’
সাও পাওলোর গভর্ণর তারচিসিও দ্য ফ্রেইতাস বলেছেন, ‘দমকল বাহিনীর বিমান থেকে পানি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। এছাড়া এই কাজের জন্য বাড়তি বিমান ভাড়া করা হয়েছে।’ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জরুরি টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। ব্রাজিল সাধারণত আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক দাবানলের শিকার হয়। তবে চলতি বছর মে মাসে বিশ্বের বৃহত্তম জলাভূমি পানতানালে ভয়াবহ আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সরকারি তথ্যমতে, আমাজনে জুলাই মাসে দু’দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক দাবানল দেখা গেছে। জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বছরের দাবানল একটু আগেভাগেই শুরু হয়েছে এবং তা আগের বছরের তুলনায় আরও তীব্র।
ডেস্ক রিপোর্ট 



















