ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটে আত্রাই (ভারতে আত্রেয়ী) নদীর ওপর মাত্র চার মাস আগে নির্মিত একটি বাঁধ ভেঙে পড়েছে। গত মঙ্গলবার (২০ মে) নদীর প্রবল স্রোতে প্রায় ৩০ কোটি রুপি ব্যয়ে নির্মিত এই বাঁধের একটি বড় অংশ ধসে পড়ে। এতে নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোতে চরম উদ্বেগ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রসঙ্গত, আত্রাই নদী বাংলাদেশ হয়ে ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর দিয়ে আবার বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এই নদীর তীব্র ভাঙন ও বন্যার কবল থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষায় গত বছর বাঁধ নির্মাণ শুরু করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
কিন্তু চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেই নির্মাণাধীন অবস্থায় প্রথমবারের মতো বাঁধটি ভেঙে পড়ে। এরপর দ্রুততার সঙ্গে সেটি মেরামত করা হয়। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছিলেন যে, নির্মাণে মানের ঘাটতি থাকলে তা টিকবে না। অবশেষে সেই মেরামতকৃত অংশই আবারও মঙ্গলবার ধসে পড়ে, যা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, নদীর পানিপ্রবাহ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলেও। নদী তীরবর্তী অঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, এভাবে পানির স্রোত অব্যাহত থাকলে বাঁধের বাকি অংশও ভেঙে যেতে পারে, ফলে জনপদ প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়তে পারে।
এদিকে বাঁধ ভাঙার পরপরই ঘটনাস্থলে পৌঁছান দক্ষিণ দিনাজপুরের সাংসদ ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি এবং ভারতের কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তিনি স্পষ্টভাবে বাঁধ নির্মাণে ‘চরম দুর্নীতি’র অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, “এর আগেও বাঁধ ভেঙেছিল, এবার আবার। এটা প্রমাণ করে নির্মাণকাজে বড় ধরনের দুর্নীতি হয়েছে।”
তবে পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় বালুরঘাট মিউনিসিপালিটির চেয়ারম্যান অশোক মিত্র এই ঘটনাকে ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “মানুষের কোনো হাত নেই এই ভাঙনের পেছনে।”