যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য নিউ হ্যাম্পশায়ারে মশাবাহিত ইস্টার্ন ইক্যুইন এনসেফালাইটিস (ইইই) ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। সেখানে ট্রিপল-ই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইতোমধ্যে একজন মারা গেছে।
এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিউ হ্যাম্পশায়ার ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিস (ডিএইচএইচএস) বুধবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হ্যাম্পস্টেড শহরের একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির দেহে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়। স্নায়ুতন্ত্রে গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে কয়েকদিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি বুধবার মারা যান।
তবে নিউ হ্যাম্পশায়ারের ওই ব্যক্তিই ট্রিপল ই রোগে আক্রান্ত প্রথম রোগী নন। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) জানিয়েছে, এর আগে ২০১৪ সালে অঙ্গরাজ্যটিতে প্রথমবারের মতো ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছিলো। সেবার তিনজন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাদের মধ্যে দুইজন মারা গিয়েছিলেন। এদিকে চলতি মাসের শুরুর দিকে ম্যাসাচুসেটস রাজ্যে ট্রিপল ই আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন।
ইইই’র ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি সম্পর্কে সম্প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইংল্যান্ড অঞ্চলের কর্মকর্তারা। তার মধ্যেই আরেকটি অঙ্গরাজ্যে নতুন সংক্রমণ ও মৃত্যুর খবর সামনে এলো। নিউ ইংল্যান্ড কর্মকর্তাদের বিশ্বাস, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে।
এদিকে ট্রিপল ই নিয়ে যতো গবেষণা হচ্ছে, আসছে নতুন তথ্য। আগে বলা হতো কিউলেক্স মশার কামড়ে এই রোগ ছড়ায়। এখন বিভিন্ন গবেষণায় বলা হচ্ছে জলাভূমি অঞ্চলের এডিস, কিউলেক্স এবং কোকুইলেটিডিয়া মশার মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ায়।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থার (সিডিসি) তথ্যমতে, ইস্টার্ন ইক্যুইন এনসেফালাইটিসে আক্রান্ত হলে জ্বর, মাথাব্যথা, বমি, ডায়রিয়া, খিঁচুনি, আচরণগত পরিবর্তন এবং তন্দ্রার মতো লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে।এটি গুরুতর স্নায়বিক রোগও সৃষ্টি করতে পারে, যেমন- মস্তিষ্কের প্রদাহ এবং মেরুদণ্ডের চারপাশে ঝিল্লি, যা এনসেফালাইটিস ও মেনিনজাইটিস নামে পরিচিত।
১৫ বছরের কম এবং ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে ইইই আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি বলে মনে করা হয়। আক্রান্তদের প্রায় ৩০ শতাংশই মারা যান। অর্থাৎ আক্রান্ত ১০০ জনের ৩০ জনই মারা যান। বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরাও বাকি জীবন এর শারীরিক বা মানসিক প্রভাব ভোগ করেন। ট্রিপল-ই’র কোনো টিকা বা চিকিৎসা নেই।
ডেস্ক রিপোর্ট 




















