মাত্র আট দিনের জন্য বিশেষ মিশনে গিয়ে ন’মাসের জন্য আটকে পড়েছিলেন সুনিতা উইলিয়ামস এবং বুচ উইলমোর। যান্ত্রিক গোলযোগ হওয়ায় পৃথিবীতে ফেরা কার্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল এই দুই মার্কিন মহাকাশচারীর। এবার ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের ড্রাগন ক্যাপসুলে চেপে অবশেষে তারা ফিরলেন পৃথিবীতে। রচনা করলেন একাধিক রেকর্ড, ইতিহাস।
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন-আইএসএস থেকে যাত্রা করার ১৭ ঘণ্টা পর তাদের স্পেসএক্স ক্যাপসুলটি তীব্র গতিতে আর আগুনে হল্কার মধ্যে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে।
পরে চারটি প্যারাশুট খুলে যায়, যা তাদের ফ্লোরিডা উপকূলে নামিয়ে আনে। একঝাঁক ডলফিনকে তাদের ক্যাপসুল ঘিরে ঘুরতে দেখা যায়।
বাংলাদেশ সময় বুধবার প্রথম প্রহরে একটি উদ্ধারকারী জাহাজ ক্যাপসুলটি পানি থেকে তুলে নেওয়ার পর হ্যাচ খুলে বেরিয়ে আসেন বুচ উইলমোর ও সুনিতা উইলিয়ামস। তারা হাসিমুখে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান।
তাদের সঙ্গী নাসার নভোচারী নিক হেগ এবং রুশ মহাকাশচারী আলেকজান্ডার গর্বুনভও তাদের সঙ্গে বেরিয়ে আসেন।
নাসার কমার্শিয়াল ক্রু প্রোগ্রামের ব্যবস্থাপক স্টিভ স্টিচ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পৃথিবীতে ফেরা চার নভোচারীর সবাই ভালো আছেন।
বুচ ও সুনিতার পৃথিবীতে ফেরার মাধ্যমে এমন এক অভিযানের সমাপ্তি ঘটল, যা এরইমধ্যে বিশ্বের সবার মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।
মহাকাশ বিষয়ক গবেষণার কাজে কেবল আট দিনের জন্য গত বছরের ৫ জুন আইএসএসে গিয়েছিলেন তারা। বোয়িংয়ের স্টারলাইনার মহাকাশযানে ত্রুটি ধরা পড়ায় তাদের স্পেস স্টেশনে থাকার সময় নাটকীয়ভাবে বেড়ে যায়।
বুচ ও সুনিতার যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০২৪ সালের জুন মাসে। মার্কিন মহাকাশযান নির্মাতা কোম্পানি বোয়িংয়ের তৈরি স্টারলাইনার মহাকাশযানের প্রথম মনুষ্যবাহী পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ ছিল সেটি। তারা ক্রু নাইন মিশনের অংশ হিসেবে মহাকাশে গিয়েছিলেন।
মহাকাশ স্টেশনে যাত্রার সময় ক্যাপসুলটি বেশ কয়েকটি প্রযুক্তিগত সমস্যার মুখে পড়ে ও নভোচারীদের ফিরে আসা অনিশ্চিত হয়ে ওঠে। সেপ্টেম্বরের গোড়ার দিকে স্টারলাইনার মহাকাশযানটি খালি অবস্থায় পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হয়।
দীর্ঘ সময় পর নভোচারীদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে শুক্রবার নাসা-স্পেসএক্স-এর যৌথ মিশনে আইএসএসে পাঠানো হয় স্পেসএক্সের ক্রু-১০ মিশনের ফ্যালকন ৯ রকেটটিকে। আর তাতে চেপেই তারা ফিরে এলেন পৃথিবীর বুকে।