একদল বিজ্ঞানী পৃথিবীর সবচেয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে দক্ষিণ মহাসাগরের গভীরে ৩০টি অজানা সামুদ্রিক প্রজাতির জীব আবিষ্কার করেছেন। এই জীবগুলোর একটি হলো ‘ডেথ বল’ স্পঞ্জ। অদ্ভুত এই জীবের দেহে রয়েছে বেলুনের মতো দেখতে অঙ্গ। যা শিকার আটকানোর জন্য ক্ষুদ্র হুকযুক্ত।
৩০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এনডিটিভি জানিয়েছে, এই আবিষ্কার জাপানের নিপপন ফাউন্ডেশন-নেকটন ওশন সেনসাস এবং শ্মিডট ওশন ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা এসব জীব আবিষ্কার করেছেন। তারা দক্ষিণ স্যান্ডউইচ দ্বীপপুঞ্জের আগ্নেয়গিরির ক্যালডেরা, সাউথ স্যান্ডউইচ ট্রেঞ্চ এবং মোন্টাগু ও স্যান্ডার্স দ্বীপের সমুদ্র তলদেশ ঘুরে এসব প্রজাতি সন্ধান করেন।

ডেথ বল স্পঞ্জের গোলাকার শারীরিক আকৃতি এবং হুকযুক্ত উপরিতল অধিকাংশ স্পঞ্জের শান্ত, ফিল্টার-ফিডিং পদ্ধতির সঙ্গে পুরোপুরি বিপরীত। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি গভীর সমুদ্রের জীববৈচিত্র্যের অদ্ভুত ও রহস্যময় দিক তুলে ধরে। গবেষণার সময় কিছু জোম্বি কৃমিও দেখা গেছে। মুখ বা অন্ত্র না থাকলেও এই জীব মূলত ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে তিমিসহ বড় প্রাণীদের কশেরুকা হাড়ের চর্বি ভাঙে এবং তাতেই বাঁচে।
গবেষক দলটি ১৪টি প্রাণীর দল (ফাইলা) থেকে প্রায় ২০০০ নমুনা সংগ্রহ করে, পাশাপাশি হাজার হাজার হাই-ডেফিনেশন ছবি এবং ঘন্টার পর ঘন্টা ভিডিওও সংগ্রহ করে।

গভীর সাগরতলে গবেষণায় পাওয়া উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলির মধ্যে রয়েছে প্রায় ৭০০ মিটার উচ্চতায় কেমোসিন্থেটিক সম্প্রদায় সহ নতুন হাইড্রোথার্মাল ভেন্ট, প্রাণবন্ত প্রবাল বাগান, সমুদ্রের নীচে বিস্ফোরক আগ্নেয়গিরির প্রমাণ এবং একটি অল্পবয়সী বিশাল স্কুইডের প্রথম নিশ্চিত ফুটেজ।
নিপ্পন ফাউন্ডেশন-নেকটন ওশান সেন্সাসের বিজ্ঞান প্রধান ড. মিশেল টেলর বলেন, ‘দক্ষিণ মহাসাগর এখনও আমাদের জানাশোনার জগতে গভীরভাবে অনুপস্থিত। আজ পর্যন্ত, আমরা এই অভিযান থেকে সংগৃহীত নমুনার মাত্র ৩০ শতাংশেরও কম মূল্যায়ন করতে পেরেছি, তাই ৩০ টি নতুন প্রজাতির নিশ্চিতকরণ ইতিমধ্যেই দেখায় যে কতটা জীববৈচিত্র্য এখনও আমাদের জানাশোনার বাইরেই থেকে গেছে।’
প্রকৃতিবার্তা ডেস্ক 



















