২০২৪ সালের মার্চ, রমজান মাস তখন, চারদিকে ইসরায়েলি আগ্রাসন, ভারী বোমায় কেঁপে উঠছে অন্তর, ঘর-বাড়ি ধূলিসাৎ, গাজাবাসী তখন বেশিরভাগই উদ্বাস্তু, বসবাস তাবুতে। এদিকে সেবছর গাজায় ঢুকতে পারছিল না কোনো ত্রাণের ট্রাক, গাজাবাসীকে তাই ইফতারে খেতে হয়েছিল ঘাস সেদ্ধ! বিশ্বগণমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছিল গাজাবাসীর সেই করুণ সময়।
এবার অবশ্য গাজাবাসী গত বছরের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি শান্তিতে রমজানের ইবাদত করতে পারছেন, কারণ গাজায় চলছে যুদ্ধবিরতি। ঘর-বাড়ি হারানো গাজাবাসীরা এবার রমজানের প্রথম ইফতার করেছে ধ্বংসস্তুপের মাঝে বসে, তবে তাদের মুখে হাসি ছিল।
কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ধ্বংসস্তুপের মাঝেই টেবিল সাজিয়ে ঐতিহ্যবাহী মাকলুবা (মাংস-রাইস) শিশুদের পাতে তুলে দিচ্ছেন স্বজনেরা।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে গাজার এবারের রমজানের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। গাজা থেকে বাসিন্দা এসরা আবো কামার লিখেছেন, ‘নুসেইরাতের বড় সুপারমার্কেট হাইপারমল আবার খুলেছে। রমজানের আগে আমার বাবা আমাকে এবং আমার বোনকে সেখানে নিয়ে যান। উজ্জ্বল আলোকিত মলে পা দিয়ে আমরা খুবই উত্তেজনা বোধ করছিলাম, এক মুহুর্তের জন্য, মনে হয়েছিল যে আমরা সেই আগের সময়ে ফিরে এসেছি। তাকগুলিতে পণ্য মজুত করা হয়েছে, যেমনটা আমরা চেয়েছিলাম। বিভিন্ন ধরণের চকলেট, বিস্কুট এবং চিপস দিয়ে ভরা। সেখানে রমজানের সাজসজ্জা, সব আকার-আকৃতির ফানুস, খেজুরের বাক্স, রঙিন শুকনো ফল ছিল, কামার আল দ্বীন (পানীয়) ছিল।
গাজার বাসিন্দা এসরা আরও লিখেছেন, তবে এবারের রমজানে কেবল টিনের কৌটার বিন খেয়ে থাকতে হচ্ছে না। মলোখিয়া (রাইস), সবজি পাতে উঠছে এবার। প্রথম ইফতারের জন্য, আমার পরিবার মুসাখান পাবে, একটি ফিলিস্তিনি খাবার যা মুরগির মাংস, সাজ রুটি এবং প্রচুর পেঁয়াজ দিয়ে তৈরি। আমরা বলতে গেলে ভাগ্যবানদের মধ্যে আছি। আসলে গাজার সিংহভাগ মানুষ তাজা মুরগি কেনার অবস্থায় নেই। যুদ্ধের আগের দামের দ্বিগুণ দামে বাজারে মুরগি বিক্রি হচ্ছে।’