রমজান মাসে রোজা রাখার পর ইফতারে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া জরুরি। অনেকেই সারাদিন না খেয়ে থাকার পর ইফতারে একসাথে অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলেন, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আমাদের দেশে ইফতারে ভাজা পোড়া খাওয়ার প্রবণতা বেশ। কিন্তু সারাদিন খালি পেটে থাকার পর এই জাতীয় তেলের খাবার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, ইফতারে এমন খাবার খাওয়া উচিৎ যা আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবারহ করে এবং পানিশূন্যতা দূর করে। এক্ষেত্রে দই চিড়া একটি আদর্শ খাবার। এটি শরীরের পানিশূন্যতা পূরণ করবে, ক্লান্তি ভাব দূর করতে কাজ করবে। পুষ্টিবিদরা জানান, চিড়ায় পটাশিয়াম ও সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকার জন্য কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে চিড়া খাওয়ার উপকারিতা অনেক।
অন্যদিকে দই একটি দুর্দান্ত প্রোবায়োটিক (একটি উপাদান যাতে জীবন্ত ব্যাকটেরিয়া থাকে)। এটি ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি-২, ভিটামিন বি -১২, পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো বেশ কয়েকটি প্রয়োজনীয় পুষ্টিতে ভরা। দইয়ের একটি সুবিধা হলো এটি হালকা এবং দুধের চেয়ে সহজে হজম হয়।
দই চিড়ার উপকারিতা:
- পেট ঠান্ডা রাখে ও পানির অভাব পূরণ করে।
- ডায়রিয়া, অন্ত্রের প্রদাহ ও কিডনি রোগীদের জন্য উপকারী।
- সহজপাচ্য ও শক্তি যোগায়।
- ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ।
দই চিড়া তৈরির উপকরণ:
- টক দই ২ কাপ
- চিড়া ১/২ কাপ
- পাকা কলা স্কয়ার করে কাটা ১টি
- চিনি প্রয়োজন মতো
- লবণ প্রয়োজন মতো
- এলাচি গুঁড়া ১/৪ চা চামচ
- কিসমিস ১ টেবিল চামচ।
দই চিড়া তৈরির সহজ রেসিপি:
চিড়া ভালো করে ধুয়ে পানিতে আধ-ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। ভালো করে ভেজানো হয়ে গেলে পানি ঝরিয়ে একটি পাত্রে রাখুন চিড়াগুলোকে। যদি চিনি খেতে চান তাহলে চিড়ার সঙ্গে চিনি মিশিয়ে নিন। তবে চিনি না খাওয়াটাই উত্তম।
এবার চিড়ার উপরে মিষ্টি বা টক দই দিন। সবশেষে চিড়ার উপর কলা কিংবা ছোট মিষ্টি দিয়ে সাজিয়ে দিন। ইফতারে প্রথমে খেজুর খেয়ে তার পরে খান এই স্বাস্থ্যকর দই-চিড়া।
সতর্কতা:
- বেশি শর্করা ও উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- পরিমাণমতো চিড়া খান।
- ডায়াবেটিস রোগীদের চিনি এড়িয়ে চলা উচিত।
তাই প্রতিদিন ইফতারে দই-চিড়া খেলে শরীর সুস্থ থাকবে এবং রোজা রাখার ক্লান্তি দূর হবে।