বছর ঘুরে আবারও এসেছে পবিত্র রমজান মাস। আর এই মাসে খাওয়া-দাওয়ায় অনিয়ম হয় সবচেয়ে বেশি। এ সময় সারাদিন না খেয়ে উপবাস করা হয়। শুধু ইফতার থেকে সাহরি পর্যন্ত খাওয়ার সময় থাকে। ফলে এ সময়ের মধ্যে যার যা ইচ্ছে; তা-ই খেতে থাকেন! ভুল খাবার নির্বাচনের কারণেই গ্যাস্ট্রিক বা বদহজমের সমস্যা দেখা দেয় বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
যদিও সংযমের মাস, তারপরেও ইফতারে অতিভোজন, অতিরিক্ত তেল ও মসলাযুক্ত ভাজাভুজি খাবার কমবেশি সবাই খেয়ে থাকেন। এসব তৈলাক্ত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার কয়েক দিন খেলেই অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা তৈরি হয় সব বয়সীদেরই। পেট ফাঁপা, বুক ও গলা জ্বালাপোড়া করা, টক ঢেকুর, বদহজম যেন নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে যায়। পাশাপাশি ক্লান্তি এবং অবসাদও বাড়ে। এসব ক্ষেত্রে প্রথম দিকে ওষুধে মুক্তি মিললেও এক পর্যায়ে ওষুধও তেমন একটা কাজ করে না। তাই ওষুধের বদলে অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভরসা রাখতে পারেন কিছু প্রাকৃতিক উপাদানের ওপর।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধানে প্রাকৃতিক উপাদান:
জিরা: সহজেই রান্নাঘরে পাওয়া যায় এমন একটি মসলা হলো জিরা। জিরা হজম রসকে উদ্দীপিত করে, অ্যাসিডিটি, পেট ফাঁপা, বদহজমের মতো সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পেতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
তুলসি: তুলসি পাতা ও এলাচ দিয়ে ফোটানো পানি পান করলে খুব সহজেই পেটের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তুলসি পাতার নির্যাস গ্যাস্ট্রিকের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্র থেকেই পেটের সমস্যায় তুলসীর ব্যবহার হয়ে আসছে।
আদা: আদা কুঁচি করে সামান্য লবণসহ চিবিয়ে খেলে অ্যাসিডিটি উপশম হয়। আদার অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান অ্যাসিডিটির সমস্যা দূর করে। তবে বেশি আদা সিদ্ধ পানি খাওয়া যাবে না।
পার্সলে: আয়ুর্বেদের মতে পার্সলে মূত্রবর্ধক। এটি শরীর থেকে পানি ও লবণের ক্ষয় বাড়াতে সাহায্য করে। তাই এসিডিটি সম্যসায় অত্যন্ত কার্যকর এই পাতা।
মৌরি: মৌরি হজম শক্তি বাড়ায় ও হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। পেট ফাঁপা সমস্যা থেকেও মুক্তি দেয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও সাহায্য করে।
পুদিনা: যাদের খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পেট ফাঁপার সমস্যা রয়েছে তারা পুদিনা খেতে পারেন। এটি পেটে অতিরিক্ত গ্যাস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। পানিতে কয়েকটি পুদিনা পাতা সেদ্ধ করে খেতে পারেন বা কাঁচা চিবিয়েও খেতে পারেন।
এ ছাড়া অ্যাসিডিটির জ্বালাপোড়া, পেট ফাঁপার সমস্যা থেকে বাঁচতে সব সময় বেশি বেশি করে পানি পান করার চেষ্টা করুন। এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ মেথি গুঁড়া মেশানো পানি খেতে পারেন।
আর নিয়মিত খাবার গ্রহণ, ভাজাপোড়া খাবার পরিহার, দুশ্চিন্তা পরিহার, পর্যাপ্ত ঘুম, ধূমপান অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। এবং ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া থেকে যথাসম্ভব বিরত থাকতে হবে।