রমজান মাস সিয়াম সাধনা ও তাকওয়ার মাস, কল্যাণ ও বরকতের মাস, রহমত ও মাগফিরাত এবং জাহান্নামের অগ্নি থেকে মুক্তি লাভের মাস। মহান আল্লাহ এ মাসটিকে বহু ফজিলত ও মর্যাদা দিয়ে অভিষিক্ত করেছেন। যখন রমজানের আগমন হত তখন রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অতিশয় আনন্দিত হতেন, তার সাহাবাদের বলতেন : তোমাদের দ্বারে বরকতময় মাস রমজান এসেছে।
এরপর তিনি এ মাসের কিছু ফজিলত বর্ণনা করে বলতেন : আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য সিয়াম পালন ফরজ করেছেন। এ মাসে আকাশের দ্বারসমূহ খুলে দেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় জাহান্নামের দরজাগুলো। অভিশপ্ত শয়তানকে বন্দি করা হয়। এ মাসে রয়েছে একটি রাত যা হাজার রাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। যে ব্যক্তি এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো সে মূলত সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হল।[ বর্ণনায় : নাসায়ী ]
প্রিয় মুসলিম উম্মাহ আসুন আমরা জেনে নেই রমজান মাস সম্মানিত হওয়ার কারণসমূহ কি কি?
১) আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা মানবজাতির মুক্তির একমাত্র পথ ও মাধ্যম পবিত্র কুরআনকে আল্লাহ তায়ালা এই রমজান মাসে নাযিল করেছেন। যে কোরআন আমাদের রাষ্ট্রীয় জীবন ও পারিবারিক জীবন ও দৈনন্দিন জীবনে অপরিহার্য প্রয়োজন।
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে বলেন: রমজান মাস ঐ মাস যে মাসের মধ্যে কোরআন নাজিল করা হয়েছে যা মানুষের জন্য পথপ্রদর্শক ও সুস্পষ্ট দলিল হেদায়েত থেকে ও সত্য ও মিথ্যার মাঝে পার্থক্যকারী। ( সূরা বাকারা আয়াত নাম্বার ১৮৫ )
২) এই রমজান মাস মর্যাদাবান ও গুরুত্ববান হওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে এই রমজান মাসেই আল্লাহ তাআলা শবে কদর দিয়েছেন। যে শবে কদর সম্পর্কে আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলা বলেছেন যে তা হচ্ছে হাজারো রাত্রি থেকে অনেক উত্তম।
আল্লাহতালা পবিত্র কোরআনে বলেন: নিশ্চয়ই আমি কোরআনকে নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরের রাত্রিতে। আপনি কি জানেন লাইলাতুল কদর কি?? লাইলাতুল কদর হচ্ছে হাজারো রাত্রি থেকে সম্মানিত। এই রাত্রে জিব্রাইল আলাইহিস সালাম ও অন্যান্য ফেরেশতারাগন অবতরণ করেন প্রত্যেক বিষয় নিয়ে। ( অর্থাৎ জীবন ও মৃত্যু রিজিক ও জন্ম সকল বিষয় নিয়ে যা আল্লাহ তাআলা ফায়সালা করেন ) ( সুরা আল কদর )
৩) এই রমজান মাসের আরো ফজিলত রয়েছে। তা হল যদি কেউ এই রমজান মাসে একটি নফল আদায় করে তাহলে তা অন্য মাসের একটি ফরজের সমতুল্য। আর যদি কেউ এই মাসে একটি ফরজ আমল করে তা অন্য মাসে মাসে সত্তর টি ফরজ আমলের সমতুল্য। ( শুআবুল ঈমান ৩/৩০৫/৩০৬ )
প্রিয় মুসলিম উম্মাহ আসুন আমরা এই রমজান মাসের মূল্য ও সম্মান বুঝে রমজান মাসে বেশি বেশি নেক আমল করে আল্লাহ তায়ালা নৈকট্য অর্জন করি। ও আল্লাহ তাআলার প্রিয় বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হই।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে কবুল করুন আমীন।
মুফতি তারিক জামিল
ইসলামী চিন্তাবিদ, গবেষক ও লেখক